
সাতনদী অনলাইন ডেস্ক: স্থগিত থাকা প্রথম ধাপে ৩৭১টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি), ১১টি পৌরসভা ও চারটি সংসদীয় শূন্য থাকা আসনে উপ-নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়। এজন্য সোমবার (২৪ মে) কমিশন সভাও আহ্বান করা হয়েছে। এদিন কমিশন সভাশেষে এসব নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা কথা ছিলো। কিন্তু করোনাকালে চলমান বিধি-নিষেধের মেয়াদ বাড়ানোতে এই বিষয়ে কমিশন সভার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে ইসি সচিবালয়। ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, গত বুধবার (১৯ মে) সময় মতো নির্বাচন করার পক্ষে সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। তখন সরকারের বিধি নিষেধ ছিলো ২৩ মে পর্যন্ত। তাই কমিশন বিধি-নিষেধের সময় শেষ হওয়ার পর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে চেয়েছিলো। তাই বিধি-নিষেধ শেষ হওয়ার পরের দিন ২৪ মে এই বিষয়ে কমিশন সভা রাখা হয়। কিন্তু চলমান বিধি-নিষেধ ৩০ মে পর্যন্ত বাড়ানোতে নির্বাচনের তফসিলের জন্য কমিশন সভায় সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে কমিশনের ৮০তম সভা অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে সভায় চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
সভার আলোচ্যসূচির মধ্যে রয়েছে- লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্থগিতকৃত উপনির্বাচন, ষষ্ঠ ধাপের ১১টি পৌরসভা ও প্রথম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদের স্থগিতকৃত নির্বাচন, সিলেট-৩, ঢাকা-১৪ ও কুমিল্লা-৫ শূন্য আসনের নির্বাচন, ইউনিয়নের দ্বিতীয় ধাপের সাধারণ নির্বাচন ও পৌরসভাসহ স্থানীয় সরকার পরিষদের অন্যান্য নির্বাচন এবং বিবিধ।
ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, তফসিলের বিষয়ে কমিশন সভার পরে বলা যাবে। কালকের সভায় কিছু তো সিদ্ধান্ত হবেই। লকডাউন বাড়ালেও আমাদের নির্বাচনের টার্গেট তো জুলাইতে। তখন কিছু নির্বাচন তো হবেই। কালকে ইউপি, শূন্য হওয়া চারটি আসনের উপনির্বাচন ও পৌরসভার নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা হবে। কমিশন সচিবালয় থেকে প্রস্তাবনা তৈরি করা রাখা হয়েছে। কমিশন অনুমোদন দিলে কালকেই এসব নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। ইউপির দ্বিতীয় দফা নির্বাচন এখনই নাও হতে পারে। প্রথদ দফা হওয়ার পর হয়তো দ্বিতীয় দফার বিষয়ে আলোচনা হবে। সভার পরে বিস্তারিত বলা যাবে কমিশন কীভাবে চায়।
চার আসনের উপনির্বাচন একদিন করার জন্য গত মিটিংয়ে কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
স্থগিত থাকা নির্বাচনের বিষয়ে ইসি সূত্র জানায়, যেহেতু নির্বাচনের মাত্র ১১ দিন আগে এসব নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। তাই এসব নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচারণার জন্য ৭ থেকে ১৫ দিন সময় দিয়ে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হতে পারে। এছাড়া যেহেতু কমিশন জুলাই মাসে নির্বাচন করতে চায় আর বিধিনিষেধ চলমান, তাই ইসি সোমবার শুধু ভোটের দিনের তারিখ ঘোষণা করে বলতে পারে যে পরবর্তী কোনো একদিন এসব নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে।
১৯ মে কমিশন সভা শেষে ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, চারটি আসনে নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। লকডাউন চলার কারণে সময়সূচি ঘোষণা করা হয়নি। আগামী ২৪ মে কমিশনের পরবর্তী সভা অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে এসব তারিখ ঠিক করা হবে।
তিনি বলেন, শূন্য আসনে যেহেতু এসব উপ-নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তাই কমিশন এই চারটি আসনে জুলাই মাসে নির্বাচন আয়োজন হবে।
স্থগিত হওয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, আজকের সভায় এই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ২৪ মে’র কমিশন সভায় এই বিষয় নিয়েও আলোচনা করা হবে।
করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে গত ১ মার্চ থেকে সব ধরনের নির্বাচন স্থগিত করে কমিশন। এছাড়া এই সময় অনেক নির্বাচনের মেয়াদ শেষ হলেও সিইসি’র বিশেষ ক্ষমতাবলে এসব নির্বাচনের মেয়াদ ৯০ দিন বাড়ানো হয়। এই ৯০ দিনও পার হয়ে যাচ্ছে। তাই এসব নির্বাচন আয়োজন করার কথা ভাবছে ইসি।