হাবিবুর রহমান, শ্যামনগর থেকে: সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কোটি টাকা ঘুষ আদায়ের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে দৌড় ঝাপ শুরু করেছে সংশ্লিষ্টরা। সকাল নয়টা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত চলে তাদের মধ্যে আলোচনা। মঙ্গলবার দিনভর শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তারা একটি শিক্ষক সংগঠনের অফিসে ধর্নায় বসেছিল।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলা শিক্ষা অফিসের টিও আক্তারুজ্জামান সহ ৫ জন কর্মকর্তা ১৯১ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়ন খাতের বরাদ্ধ থেকে কোটি টাকার অর্থ বাণিজ্য করেছে। বিষয়টি সংবাদপত্রে প্রকাশ হলে নড়ে চড়ে বসে উপরিমহল। জেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার (এডিপিও) আবু হেনা মোস্তফা কামালকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। আজ বুধবার তার তদন্তে শ্যামনগরে আসার কথা। এদিকে এই ইস্যুকে সামনে রেখে নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে তৎপর হয় অভিযুক্ত ৫ কর্মকর্তা। তারা মঙ্গলবার সকাল নয়টায় শ্যামনগরের উপজেলা সদরে অবস্থিত একটি শিক্ষক সংগঠনের কার্যালয়ে যায় এবং রাত নয়টা অবধি ম্যারাথন বৈঠক চলে।
সংগঠনটির কর্মকর্তারা শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ করে বলেন কোটি টাকা দূর্নীতি করেছেন। আমাদের সংগঠনের ভবন নির্মানের জন্য ১০ লক্ষ টাকা দিতে হবে। অন্যাথায় আজ বুধবারের তদন্ত অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে কোটি টাকা ঘুষ আদায়ের বিষয় ফাঁস করে দেব। সকাল নয়টায় শুরু হয়ে দুপুরে লাঞ্চের জন্য ঘন্টাখানেক বিরতি দিয়ে আবারও আলোচনা শুরু হয়ে তা চলে রাত নয়টা পর্যন্ত। সভায় সিদ্ধান্ত হয় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আজ বুধবার সকাল দশটার মধ্যে ঘুষের কোটি টাকা থেকে ১০ লক্ষ টাকা প্রদান করবেন অন্যথায় তদন্ত অনুষ্ঠানে স্বাক্ষ্য প্রমাণসহ হাজির হয়ে কোটি টাকার দূনীতি ফাঁস করে দেয়া হবে।
এদিকে ঘুষের কোটি টাকার অনেকটা বদহজম হয়েছে। ঘুষের কোটি টাকা আদায় এবং তা ভাগাভাগি নিয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার আক্তারুজ্জামানের সাথে সহকারী শিক্ষা অফিসার এর মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। এক পর্যায়ে চার সহকারী শিক্ষা অফিসার, উপজেলা শিক্ষা অফিসার আক্তারুজ্জামানের বিরুদ্ধে শ্যামনগর থানায় গত ৯ সেপ্টেম্বর বুধবার নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়রী করেন। শিক্ষা কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান তাদেরকে নারী দিয়ে মিথ্যা মামলায় জড়াতে পারেন।
আলোচনা সভায় ৪ শিক্ষা অফিসারের সাধারণ ডায়রী তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। পরে তারা স্থানীয় থানায় যায় জিডি তুলে নিতে। কিন্তু অফিসার ইনচার্জ তাদেরকে জানায়, জিডি তোলা যায় না। মিমাংসা হয়ে থাকলে স্টাম্পে আপোষ নামা তৈরি করে নিয়ে আসেন। এদিকে ঘুষের কোটি টাকা থেকে বিভিন্ন সেক্টরে ভাগ দিতে হচ্ছে। ফলে ঘুষের টাকা বদ হজম হচ্ছে শিক্ষা কর্মকর্তাদের।