
মেহেদী হাসান, খুলনা থেকে:
পরিচয় থেকে প্রণয়। ঘটনাচক্রে ধর্ষণ মামলা। ধর্ষকের কারাবাস। অবশেষে বিয়ের শর্তে মুক্তি। আর তাই আদালতের এজলাসে বিয়ের আশ্বাসে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে ভুক্তভোগীকে বিয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ আদালতের বিচারক আব্দুস ছালাম খান বিয়ের আদেশ দিলে কাজীর মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন করা হয়। মুক্ত জীবনে শুরু হলো তাদের দাম্পত্য জীবন।
খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদ আহমেদ বলেন, ২০২০ সালে ভুক্তভোগীর সঙ্গে রাজু শেখের পরিচয়ের পর প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। এরপর ভুক্তভোগীর আগের ঘরের ছেলেসহ তাকে নিয়ে ভাড়া বাসায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বসবাস করে। এসময় বিয়ের আশ্বাসে ধর্ষণ করায় ভুক্তভোগী অন্তঃস্বত্ত্বা হয়ে পড়ে। অভিযুক্ত রাজু তাকে সন্তান নষ্ট করতে বলে এবং এরপর থেকে ভুক্তভোগীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে ভুক্তভোগী জানতে পারে ২০২১ সালের ১৬ জুন রাজু অন্য মেয়েকে বিয়ে করেছে। ভুক্তভোগী রাজুকে ফোন দিলে রিসিভ করতো না। একবার শুধু ফোন রিসিভ করে তার গর্ভের সন্তান নষ্ট করে ফেলতে বলে। এরপর ২০২১ সালের ২০ জুন ভুক্তভোগী লবণচরা থানায় মামলা করে। সেই মামলায় বিচারক ভুক্তভোগীর সঙ্গে রাজুর বিয়ের আদেশ দেন এবং কাজীর মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন করা হয়।
এ সময় দুই পরিবার ছাড়াও বাদী ও আসামি পক্ষের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। রেজিস্ট্রি মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী কাজীর মাধ্যমে আদালতেই আসামী রাজু শেখ ও ভুক্তভোগী মরিয়াম খা’র বিয়ে সম্পন্ন হয়।
এই দম্পতি সুখে-শান্তিতে সংসার করতে চাই এবং সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন। আদালতে বিয়ের শর্ত মেনে নেওয়ায় এবং সামাজিক স্বীকৃতি দেওয়ায় খুশি ভুক্তভোগী মরিয়াম খা। এ বিয়ের ফলে জন্ম নেওয়া শিশুর স্বীকৃতি দিলেন পিতা। এ ধরনের বিয়ে খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ আদালতে এই প্রথম বলে জানান আইনজীবীরা।