
কালিগঞ্জ প্রতিবেদক:
নিজ পুত্রের মানসিক ভারসাম্যহীনতা ও শারীরিক দুর্বলতা কে পুঁজি করে পুত্রবধূকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক প্রতিনিয়ত ধর্ষণ ও ৯ সপ্তাহের অন্তঃসত্তা করার ঘটনায় পুত্রবধূ বাদী হয়ে শ্বশুর বজলুর রহমান সরদারের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছে। এর আগে ঘটনা ধামাচাপা দিতে মোটা অংকের টাকায় স্থানীয় নেতা ও সমাজপতিদের বিচারে ৩ লক্ষ টাকা নিতে অস্বীকার করায় ভুক্তভোগী এ মামলা দায়ের করে।
ঘটনাটি ঘটেছে, গত ১ মার্চ সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার তারালি ইউনিয়নের কাক শিয়ালী গ্রামে। থানায় মামলা দায়েরের পর হতে শ্বশুর এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।
থানার মামলা সূত্রে এবং ভুক্তভোগী ধর্ষিতা পুত্রবধ‚ ও তার পিতা কাকশিয়ালী গ্রামের হযরত আলী জানায় গত ২৫-০৭-২২ ইং তারিখে মানসিক ভারসাম্যহীন এবং শারীরিক দুর্বলতার কথা গোপন রেখে পূর্ব নারায়নপুর গ্রামের বজলুর রহমান সরদারের পুত্র মাসুদুর রহমানের সঙ্গে ইসলামী শরীয়া মোতাবেক পারিবারিকভাবে ৫০ হাজার টাকা দেনমোহরে বিবাহ হয়। বিবাহের পর হতে শ্বশুর তার পুত্রকে চিকিৎসার নামে রাতে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে পুত্রবধূকে ধর্ষণ করে আসছিল। ধর্ষণে পুত্রবধূ গর্ভবতী হয়ে পড়লে জোর পূর্বক গর্ভের সন্তানকে নষ্ট করার জন্য চাপ দিতে থাকে। অবস্থা বেগতিক দেখে ভুক্তভোগী পুত্রবধূ পালিয়ে বাবার বাড়িতে এসে সমস্ত ঘটনা মা-বাবাকে খুলে বলে।
পরে বিষয়টি জানি হয়ে যাওয়ায় থানা, পুলিশ, মামলা হতে বাঁচার জন্য স্থানীয় নেতা ও মাতব্বরদের মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ করে কথিত বিচারের নামে ৩ লক্ষ টাকা নিয়ে এবং গর্ভের সন্তান নষ্ট করে মীমাংসা করে নিতে বলে চাপ দেয়। টাকা নিতে অস্বীকৃতি জানালে ভুক্তভোগী পরিবারকে দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। পরে বিষয়টি নিয়ে ধর্ষিতা পুত্রবধূ গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরার বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বাদী হয়ে শশুরের নামে পিটিশন ৮৯ / ২৩ মামলা দায়ের করে। উক্ত মামলায় বিজ্ঞ আদালত মামলাটি কালিগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ কে এফ, আই,আর করার জন্য নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে কালিগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ মামুন রহমান গত ১ মার্চ মামলাটি দায়ের করেন।
অন্যদিকে শ্বশুর বজলুর রহমান সরদারের পোষ্য বাহিনী দিয়ে মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য ভুক্তভোগীর পরিবারকে মোটা অংকের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে বলে ভুক্তভোগীর পরিবার জানান। এ ব্যাপারে মামলা তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক নকিব হোসেন সাংবাদিকদের জানান আদালতে মামলার খবর জানার পর আসামি বাড়ি ছাড়া হয়ে পালিয়ে যায় যে কারণে তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি। তবে খুব তাড়াতাড়ি আসামিকে গ্রেফতার করা হবে বলে জানান তিনি।