
মামুন বিল্লাহ (কালীগঞ্জ) সাতক্ষীরাঃ-
“সাম্য ও সমতায় ,দেশ গড়তে সমবায়”এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দায়সারা ভাবে শনিবার (১ নভেম্বর), বেলা ১১ টায় সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলায় সমবায় দিবস পালিত হলেও হাজার হাজার গ্রাহকের আমানতের ৫ হাজার কোটি টাকা ফেরত পেতে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো মানবেতর দুর্বিষহ জীবন নিয়ে উপজেলা ,জেলা প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে । শোভাযাত্রা শেষে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আকরাম হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ মাইনুল ইসলাম খান। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মিজানুর রহমান সহ সমবায়ী, সুধী ,সাংবাদিকবৃন্দ। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন সমবায় হচ্ছে আত্মনির্ভরশীল সমাজ গঠনের অন্যতম হাতিয়ার। আর আমানাত ফেরতের দাবিতে গ্রাহকরা জানান এই হাতিয়ার হিসাবে গড়ে তুলতে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার ঘুষ বাণিজ্যে ও উদাসীনতায় উপজেলা জুড়ে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে ওঠা সুদ ব্যবসার আড়ালে সমিতির নামে মোটা অংকের সুদি কারবারি সমিতি। এইভাবে প্রথমে মোটা অংকের টাকার ঘুষ বাণিজ্যে সমবায় সমিতি, এনজিওর আদলে রেজিস্ট্রেশন নিয়ে গড়ে তোলে মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি । খুলে চলে মোটা অংকের টাকা জমানাত সংগ্রহের নামে মুনাফা বাণিজ্যের মিশন। এছাড়াও বিভিন্ন মেয়াদে ৫/১০ বছর মেয়াদী ফিক্সড ডিপোজিটের নামে গ্রাহকদের নিকট থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা জামানাত সংগ্রহ করে। এ সময় গ্রাহকের বিশ্বাস ও মন জয় করতে সহজ শর্তে গ্রাহকদের মাঝে ঋণ দেওয়া হতো। প্রতিমাসে লাখে সাড়ে ৩ হাজার টাকা মুনাফা দেওয়ায় লোকজন হুমড়ি খেয়ে মোটা অংকের টাকা লভ্যাংশের আশায় হাজার হাজার গ্রাহক হাজার হাজার কোটি টাকা জমা রাখে। আর এক সময় এই সমস্ত সমিতি কোঅপারেটিভ সোসাইটি গুলো সুযোগ বুঝে হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে আত্মগোপনে চলে গেছে। গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে কালিগঞ্জ উপজেলা থেকে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা নিয়ে বিভিন্ন সমবায় সমিতি -কো-অপারেটিভ সোসাইটির সদস্যরা অফিসে তালা ঝুলিয়ে রাতের আঁধারে পালিয়ে আত্মগোপনে আছে। বর্তমান জেলা, উপজেলা জুড়ে তাদের অফিস গুলোতে তালা ঝুলছে।এর আগেও ডেসটিনি পেটু -ক্লিক, যুবক, নলতার রুপা, ধলবাড়িয়ার অসকস সমবায় সমিতি, বর্ষা, বুশরা, এম আর এর মত সমবায় সমিতি, কোঅপারেটিভ সোসাইটির নামে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেলেও আজও পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কোন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ বা হাদিস মিলেনি। অতি লোভে তাঁতি নষ্টের মত মোটা অংকের টাকার প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে চাকুরী, ব্যবসায়ী, কৃষক তাদের জীবনের শেষ সম্বল বিক্রি ও পেনশনের সমুদয় টাকা ছাড়াও জমি বিক্রি করে টাকা জমা দেওয়ার হিড়িক পড়ে যায়। এখনো গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি ছাড়াও প্রায় শতাধিক সমবায় সমিতি সাইনবোর্ডের আড়ালে চড়া সুদের ব্যবসা চালিয়ে গেলেও দেখার কেউ নাই। শুকুর আলী নামক অফিসের এক কর্মচারীর মাধ্যমে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা অডিটের নামে মাশোহারায় তুষ্ট। আমানত ফেরত পেতে উপজেলার হাজার হাজার গ্রাহক এখন প্রশাসন সহ স্থানীয় রাজনীতিবিদদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

