
হাফিজুর রহমান : জমি জমা সংক্রান্ত, হত্যা চেষ্টা, ছিনতাই মামলার পরোয়ানা ভুক্ত হোসেন আলী নামে এক পলাতক আসামিকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বাকি আসামিরা মামলা তুলে নিতে মোবাইলে বাদীকে পেট্রোল দিয়ে জ¦ালিয়ে দিতে জীবন নাশের হুমকি দেয়। এতে ব্যর্থ হয়ে মামলার বাদী ও প্রতিপপক্ষদের ফাসাতে বাদীর ভাড়াটিয়া জেল হাজতে থাকা মোজাহিদ ফার্নিচার নামক হোসেন আলী দোকানে রাতে আধানে আগুন দেয়। খবর পেয়ে ২ শ গজ দুরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ও থানাহতে উপ-পরিদশক সঞ্জিব সরকার পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনা স্থলে যেয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনলেও তেমন ক্ষয় ক্ষতি হয়নি। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাত সাড়ে ৯ টার সময় সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার কুশলিয়া ইউনিয়নের কালিগঞ্জ, শ্যামনগর মহা সড়কের পাশে পাউখালি মোড় নামক স্থানে হোসেনের মোজাহিদ ফার্নিচারের দোকানে। উক্ত ঘটনা ঐ রাতে জেল হাজতে থাকা উপজেলার মহৎপুর গ্রামের নেছার আলী পুত্র দোকান মালিক হোসেন আলীর স্ত্রী আকলিমা খাতুন বাদী হয়ে মামলার বাদী আব্দুল আজিজ ও তার পুত্র সুমন সহ ৭/৮ জনের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করে। অপরদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ভুমি মালিক ভুক্ত ভোগি আব্দুল আজিজ বাদী হয়ে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও থানা যুবগীগের সভপতি ও থানা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ নাজমুল ইসলাম ও থানা যুবলীগের একাংশের সভাপতি সালাহ উদ্দিন, যুবলীগ কর্মী আঃ লতিফ, ফিরোজ, নাজমুল, লিটন সহ ৮ জনের নামে পৃথক আরও একটি অভিযোগ থানায় দায়ের করেছে। দুটি অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা থানার উপ-পরিদর্শক জিয়ারত আলী তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন বলে সাতনদীকে জানান। আদালতে মামলা এবং থানার আভিযোগের সূত্র থেকে জানা যায় উপজেলার মহৎপুর গ্রামের মৃত শেখ মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে একই গ্রামের শেখ আঃ রশিদের পুত্র থানা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, যুবলীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের ভাইচ চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলামের সঙ্গে মহৎপুর মৌজার এস.এ ৩২৮ নং খতিয়ানের ৩৮৯ দাগের পাউখালী নামক স্থানে রাস্তার ধারে ৫ শতক জমি জবর দখল সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিলো। জমি দখল নিতে গত ০৩/০১/২০১৯ ইং তারিখে সকাল আনুমানিক ৭টার সময় ভাইচ চেয়ানম্যান ও যুবলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলামের নেতৃত্বে যুবলীগ ক্যাডাররা ভূমি মালিক আব্দুলা আজিজ তার পুত্র সুমন, পুত্রবধু রেহানা সহ বাড়ীর লোকজনকে বেধড়ক পিটিয়ে তার পাউখালী অবস্থিত এ.আলী ক্লিনিকের নীচে কার্যালে নিয়ে সাদা কগজে সই নিয়ে ঐদিন রাত ৩টার সময় ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে থানা হতে পুলিশ যেয়ে তাদের উদ্ধার করলে থানায় মামলা না নিলে ভুক্তভোগী জমির মালিক আব্দুল আজিজ বাদী হয়ে গত ০৮/০১/২০১৯ ইং তারিখে সাতক্ষীরার বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ম্যাজিষ্ট্রেট বিলাস মন্ডলের আদালতে (সিআরপি১/১৯কালিঃ) ১০ জনের বিরুদ্ধে ১৮৬০ সালের পেনাল কোডের ৪৪৭/৩২৩/৩০৭/৩৮৪/৩৮৬/৩৫৪/৪৩৬/৩৪২ ধারায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলায় আসামীরা করা হয় ভাইচ চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা নাজমুল ইসলাম, যুবলীগের একাংশের সভাপতি সাবেক সেনা সদস্য সালাহউদ্দীন, যুবলীগ ক্যাডার মহৎপুর গ্রামের মৃত মোহাম্মাদ আলীর পুত্র আব্দুল মজিদ, মৃত সামছুর রহমানের পুত্র আব্দুল লতিফ, মৃত জেহের আলীর পুত্র সাবেক সেনা সদস্য ফিরোজ আলী, আব্দুর রহমানের পুত্র নাজমুল ওরফে ছোটো নাজমুল, শেখ নেছার আলীর পুত্র হোসেন আলী, আব্দুল আজিজের পুত্র লিটন এবং ঠেকরা গ্রামের আহম্মাদ আলীর পুত্র আব্দুল লতিফ। উক্ত মামলায় বিজ্ঞ আদালত তদন্ত পূর্বক ২০/০২/২০১৯ ইং তারিখের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কালিগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেন। মামলাটি আসামীদের প্রভাবে দায়সারা তদন্ত করে থানার উপর পরিদর্শক জিয়ারত আলী গত ০৬/০৪/২০১৯ ইং তারিখে বিজ্ঞ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। উক্ত তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে মামরার বাদী আব্দুল আজিজ আদালতে নারাজি দিলে মামলাটি বিজ্ঞ আদালত বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে সকল আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারী করেন। বিষয়টি জানতে পেরে আসামীরা ক্ষিপ্ত হয়ে গত ০৫/০৩/২০২১ ইং তারিখে বিকাল ৩.০৫ ঘটিকার সময় ০১৯১৭-০৫৬৬৭০, ০১৭৮১-২৭৫৭৩৭ নং মোবাইল হতে বাদীকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দেয়। মামলা তুলে না নিলে পেট্রোল দিয়ে মটরসাইকেলের সাথে জীবনে মারার হুমকি দেয় (হুমকির অডিও কপি সাতনদীর কাছে সংরক্ষিত)। উক্ত ঘটনায় মামলার বাদী আব্দুল আজিজ গত ০৫/০৩/২০২১ ইং তারিখে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করে। কালিগঞ্জ থানার ডায়েরী নং২২৩। বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ গত মঙ্গলবার রাত্রে মামলার ৬নং আসামী ঘর মালিক যুবলীগ ক্যাডারদের পক্ষ নেওয়া হোসেন আলীকে তার বাড়ী থেকে গ্রেপ্তার করে। এতে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে মামলার বাদীকে সায়েস্তা ও ফাসাতে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বুধবার রাত আনুমানিক ৯:৩০ ঘটিকার সময় হোসেন আলীর ফার্নিচারের দোকানে কেরোসিন নিয়ে আগুন দেয় বলে বাদী আব্দুল আজিজ ও তার পরিবারের সদস্যরা সাতনদীকে জানান। এ ব্যাপারে ঘটনার সত্যতা জানার জন্য উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও থানা যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের ভাইচ চেয়ারম্যান শেখ নাজমুল ইসলামের নিকট ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি সাতনদীকে জানান স্থানীয় জমিজমা সংক্রান্ত একটি বিষয় নিয়ে আমার প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক একটা গ্রুপ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের জন্য আমার এবং আমার দলের কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করে আসছে।