
নিজস্ব প্রতিবেদক:
কলারোয়া উপজেলায় ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ অর্থ বছরের দুই এনজিওর ২৩৪২ জন ভিজিডি ভাতা ভোগী সদস্যদের প্রশিক্ষণের ভাতা হিসেবে দুই বছরে ৮৫০ টাকা হারে ১৯ লক্ষ ৯০ হাজার ৭০০ টাকা লুটপাটের অভিযোগের ঘটনায় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর তদন্ত শুরু হয়েছে। এ সকল এনজিও কাগজে কলমে প্রশিক্ষণের নাম থাকলেও সরেজমিনে কোনো ভেন্যু বা কাউকে পাওয়া যায় না। এমনকি চুক্তিবদ্ধ অফিস মহিলা বিষায়ক অধিদপ্তর জানে না প্রশিক্ষণের খবর।
সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী চুক্তি বদ্ধ এনজিও প্রতিটি ভিজিডি ভাতা ভোগীকে ভাতা পাওয়া কালীন সময়ে ১৩ দিন সচেতনা বৃদ্ধি ম‚লক প্রশিক্ষণ ও ৭ দিন রিফ্রেশার্স প্রশিক্ষণ পাওয়ার কথা থাকলেও সরেজমিনে যেয়ে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থ বছরে সাতক্ষীরার ক্রিসেন্টসহ আরো একটি এনজিও অর্ন্তভ‚ক্ত হয়েছিল কিন্তু ২০২০ সালে একদিনও কোন প্রশিক্ষণ কোন ইউনিয়নে প্রদান করার প্রমান পাওয়া যায়নি। কলারোয়া উপজেলায় ২০২১-২২ অর্থ বছরে ২৩৪২ জনের ভিজিডি প্রশিক্ষণের নামের তালিকা ভ‚ক্ত হয়েছে ।
তারাও চলতি বছরে এক দিনও কোন প্রশিক্ষণ প্রদান করেননি কোন ইউনিয়নে। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ে যে প্রশিক্ষণ সিডিউল জমা দিয়েছে সে মোতাবেক উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে সরেজমিনে যেয়ে সেই ভেন্যুতে কোন ভাতা ভোগী প্রশিক্ষনার্থীকে দেখতে পাওয়া যায়নি। এমনকি কোন ইউনিয়ন পরিষদের সচিব গত দুই বছর এই প্রশিক্ষণের বিষয় জানেন না, কোন এনজিও ভাতা ভোগীদের প্রশিক্ষণ প্রদান করেন।
২০২০-২১ অর্থ বছরের প্রশিক্ষণের দায়িত্ব প্রাপ্ত উন্নয়ন পরিষদের পরিচালক আ: সালামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলার সময় নাই বলে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। ২০২১-২২ অর্থ বছরের দায়িত্ব প্রাপ্ত ক্রিসেন্টের পরিচালক আবু জাফর সিদ্দিকের কাছে মুঠোফোনে প্রশিক্ষণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, প্রশিক্ষণের জন্য আমার কর্মি নিয়োগ দেওয়া আছে, যদি প্রশিক্ষণ কোথাও না দেয় তাহলে এখন থেকে সে বিষয় গুলো তদারকি করা হবে।
এ বিষয়ে কলারোয়া উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নুরুন নাহারের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। মোবাইল ফোন রিসিভ না করায়এই প্রতিবেদক মঙ্গলবার বেলা ২টা ৫৫ মিনিটে সরেজমিনে অফিসে গিয়ে দেখেন তিনি অফিসেও নেই। তার বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, প্রতিদিন লাঞ্চ টাইমের পর আর অফিসে আসেন না তিনি। তাছাড়াও প্রায় দিন সকালে দেরি করে অফিসে আসেন এই কর্মকর্তা।
আবার কোন কোন দিন মোটেও অফিসে আসেন না। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ একই স্থানে কলারোয়া উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হিসাবে চেয়ার দখল করে আছেন। কিন্তুু দেখার কেউ নাই। আসলে তার খুঁটির জোর কোথায়? কোন অদৃশ্য ক্ষমতার জোরে তিনি দীর্ঘদিন একই স্থানে চাকরি করছেন। হয়েছেন বিপুল অর্থের মালিক। অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে কলারোয়া উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা বনে গেছেন কোটিপতি।
তৈরি করেছেন শহরের উপর বিশাল অট্টালিকা। নামে বেনামে আছে রেখেছেন টাকা।জনসাধারণের প্রশ্ন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হয়ে কিভাবে হলেন এতো টাকার মালিক। কোথায় তার ক্ষমতার উৎস। অসহায় ও দরিদ্র মহিলাদের জীবনমান উন্নয়ন করা হলো মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার প্রধান কাজ। কিন্তুু দুঃখের বিষয় হলেন সত্য তার কাছে অসহায় মহিলাদের কোন ম‚ল্য নাই। কলারোয়ার নিরিহ অসহায় মহিলা ও কলারোয়ার সচেতন মহল তার সকল দ‚র্ণীতির মুখোশ উন্মোচনের অনুরোধ জানিয়েছেন প্রশাসনের কাছে।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা উপ-পরিচালক এ,কে,এম শফিউল আজমের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, এনজিও গুলো আমাদের মাধ্যমে চুক্তি বদ্ধ না হওয়ার কারনে আমাদের কাছে জবাব দিহিতাও করতে চায় না। তাছাড়া আমাদের তদারকি করার মত কোন যানবাহনের ব্যবস্থা না থাকায় আমরাও সে ভাবে তদারকি করতে পারি না।
এ বিষয়ে কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুবায়ের হোসেন চৌধুরী জানান,বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে জেনে ছিলামও পত্রিকায় দেখেছি । এ বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত সম্পন্ন হলে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।