
ফারুক হোসেন রাজ: সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার মির্জাপুর হতে আলাইপুর পর্যন্ত প্রায় ০.৯৭ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মবিল খালটি দীর্ঘদিন ধরে পলিমাটিতে ভরাট হয়ে অকেজো হয়ে পড়েছিল। ফলে কৃষিজমিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে কৃষকরা চরম দুর্ভোগে পড়ে। সেই দীর্ঘ প্রতীক্ষিত খালটির পুনঃখনন কার্যক্রম শুরু হয়েছে ‘সকল ফর ইন্টিগ্রেটেড ওয়াটার রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট (SAFAL for IWARM)’ প্রকল্পের আওতায়।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় বেত্রাবতী নদীর তীরে মির্জাপুর এলাকায় খাল পুনঃখনন কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন মির্জাপুর-আলাইপুর পদ্মবিল খাল পুনঃখনন বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মোঃ আসাদুজ্জামান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কোদাল দিয়ে নিজ হাতে মাটি কেটে পুনঃখনন কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ জহুরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রকল্পের কলারোয়া উপজেলা প্রোগ্রাম অফিসার এসএনএ মোঃ মশিউর রহমান।
স্বাগত বক্তব্য দেন ,সফল ফর আইডব্লিউআরএম প্রকল্প ব্যবস্থাপক, উত্তরণ খুলনার কৃষিবিদ মোঃ ইকবাল হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন কলারোয়া পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মোঃ শহিদুল ইসলাম, পুনঃখনন কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুস সালাম দিলু ও মির্জাপুর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোস্তফা বাকী বিল্লাহ শাহীন। এ সময় এই অঞ্চলের নারী পুরুষ ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে।
জানা যায়, নেদারল্যান্ড দূতাবাসের আর্থিক সহযোগিতায় সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া এবং এর সহযোগী সংস্থা ‘উত্তরণ’ এর বাস্তবায়নে এই খাল পুনঃখননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে প্রায় ৯০০ একর জলাবদ্ধ জমি জলমুক্ত হবে, যা সরাসরি উপকৃত করবে এ অঞ্চলের অন্তত ১০৫০ জন কৃষককে।
এ পুনঃখননের ফলে শুধু কৃষিজ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে না, বরং খালের স্বাভাবিক প্রবাহ বজায় থাকলে মৎস্যসম্পদ, জলজ উদ্ভিদ এবং জীববৈচিত্র্যের উন্নয়নও ঘটবে। কৃষকদের কৃষিকাজে সেচের পানি সরবরাহ সহজ হবে, যা ফসল উৎপাদনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সহায়তা করবে।
স্থানীয়দের মতে, খালটি রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য নিয়মিত তদারকি, সচেতনতামূলক কর্মসূচি এবং খালপাড়ে অবৈধ দখল রোধে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, এই প্রকল্পটি শুধু একটি খাল পুনঃখননের উদ্যোগ নয়; এটি একটি টেকসই পানি ব্যবস্থাপনার দৃষ্টান্ত, যা দীর্ঘমেয়াদে কৃষক ও প্রকৃতির জন্য আশীর্বাদ হয়ে উঠবে।