আকবর হোসেন,তালা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় এ বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। আগাম বৃষ্টি হওয়াতে চাষীদের খরচ অনেকটা কমে গেছে। মহামারী করোনার মাঝেও ধানের বাম্পার ফলনে চাষীর মুখে ফুটেছে হাসি। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পরিমান জমিতে বোরো চাষাবাদ হয়েছে।
উপজেলার কৃষিজমিগুলোর যেদিকে চোখ যায় শুধু সবুজ ধানের ক্ষেত। সব এলাকায় সবুজ ধানের সমারহ মানুষের মন কেড়েছে। বৈরী আবহাওয়া না হলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশী ধান ঘরে তুলতে পারবে বলে মনে করেন চাষীরা।
বিগত বছরের চেয়ে এ বছর অধিক জমিতে বোরো চাষাবাদ হয়েছে। এ বছর চাষাবাদের শুরতে বৃষ্টিপাত কম থাকার কারনে উপজেলার সকল এলাকায় ব্যাপক হারে বোরো চাষাবাদ হয়েছে। অনেক নীচু এলাকার জমিতেও চাষাবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকার কারনে রোগ বালাই অনেকাংশে কম হয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন বিলে বোরো চাষে সবুজ ফসলের সমারোহ। উপজেলার শতকরা ৮০জন কৃষকই সরাসরি কৃষি কাজের সাথে জড়িত। কৃষি কাজ করেই তারা জীবিকা নির্বাহ করে থাকে।
এ বছর উপজেলায় জলাবদ্ধতা না থাকায় উপজেলার ধানদিয়া, নগরঘাটা, সরলিয়া, কুমিরা, খলিষখালী, তেঁতুলিয়া তালা, জালালপুর, মাগুরা, খেশরাসহ উপজেলায় সর্বত্রই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে ইরি বোরো চাষাবাদ হয়েছে।
তালা উপজেলার শুভংকরকাটি গ্রামের ধানচাষী খাবির মোড়ল জানান, আবহাওয়া ও প্রকৃতির কারণে এ বছর আমাদেরকে গতবারের চেয়ে ধান ভাল হবে। তবে বৈরী আবহাওয়ার জন্য একটু ভয় হচ্ছে। ভালভাবে ধান কেটে বাড়ীতে তুলতে পারলেই হলো। এ বছর আমার জমিতে ব্রি-ধান ২৮ বেশি ফলেছে। বর্তমানে আবহাওয়া ভাল, ধান ঘরে না উঠা পর্যন্ত চিন্তার শেষ নেই।
অপরদিকে ইসলামকাটি ইউনিয়নের কাজিডাঙ্গা গ্রামের কৃষক জামাল উদ্দীন জানান, গত বছরের তুলনায় ধান ভাল ও রোগ-বালাই কম আছে।
ধানদিয়া গ্রামের রবিউল ইসলাম জানান, এ বছর আমাদের এলাকায় ধানের ফলন খুব ভাল দেখা যাচ্ছে। যদি এভাবে শেষ নামে, আবহাওয়া ভাল থাকে তাহলে বাম্পার ফলন হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।
তালা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা শুভ্রাংশু শেখর দাশ বলেন, এবছর আবহাওয়া ভাল থাকার কারণে অনেক এলাকায় চাষাবাদ হয়েছে। উপজেলার সকল এলাকায় কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করায় রোগ-বালাই কিছুটা কম আছে। আগাম পরামর্শ দেওয়ায় রোগ বালাই তেমন চোখে পড়েনি। এবছর উপজেলায় ব্রি-ধান ২৮ বেশি পরিমান জমিতে চাষাবাদ হয়েছে তাছাড়া ৫০, ৬৩, ৬৭, বিনা-১০হাইব্রিড ধানের চাষাবাদ হয়েছে। উপজেলা কৃষি বিভাগের প্রচেষ্টায় ব্রিধান ৮১ ও ৮৮ আবাদ শুরু হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ আব্দুল্লাহ আল-মামুন ও কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা শুভ্রাংশু শেখর দাশ আরও বলেন, উপজেলার ১৯ হাজার ৩০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ১৯০৫০ হাজার হেক্টর অধিক জমিতে বোরো চাষাবাদ হয়েছে। সম্ভাব্য ফলন ১ লাখ ৪ হাজার ৭৭৫ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করছেন তারা।