
ন্যাশনাল ডেস্ক: মে মাসের ২৫ তারিখ অর্থাৎ ঈদের দিন স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে জানানো হয়, সেদিন পর্যন্ত করোনায় মৃতের সংখ্যা ৫০১ জন। এরপর ২৪ জুন (বুধবার) পর্যন্ত এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫৮২ জনে। অর্থাৎ গত ৩০ দিনে করোনায় মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ৮১ জনের। শুধু জুন মাসেই এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৯৩২ জন।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশে ৮ মার্চ প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম মৃত্যু হয় ৭০ বছরের বেশি বয়সের এক ব্যক্তির। মার্চ মাসে সর্বমোট পাঁচ জন মারা যান। এরপর এপ্রিলে ১৬৩ জন, মে মাসে ৪৮২ জন করোনায় মারা যান।
আইইডিসিআর জানায়, দেশে করোনায় মোট মৃত্যুর ৭৭ শতাংশ পুরুষ এবং ২৩ শতাংশ নারী। এর মধ্যে ৩৯ শতাংশের বয়স ৬০-এর বেশি। এছাড়া ৫১-৬০ বছরের ২৯ দশমিক ৬২ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং ১ থেকে ১০ বছরের মধ্যে শূন্য দশমিক ৮২ শতাংশ।
ঈদের পর ৩০ দিনে করোনা শনাক্ত হয়েছেন ৮৯ হাজার ৫০ জন। এর মধ্যে শুধু জুনেই ২৪ তারিখ পর্যন্ত শনাক্ত ৭৫ হাজার ৫০৭ জন। আর ঈদের পর ৬ দিন শনাক্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ৫৪৩ জন। এখন পর্যন্ত সারাদেশে মোট শনাক্ত হয়েছেন এক লাখ ২২ হাজার ৬৬০ জন। আর শুধু চলতি মাসেই শনাক্ত হয়েছেন সাড়ে ৬১ শতাংশ। এ সময়ে করোনা শনাক্তদের মধ্যে ২১ থেকে ৪০ বছর বয়সীদের সংখ্যা বেশি। এরপর আছে ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে যার পরিমাণ ১৭ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১১ শতাংশ, ৬০ বছরের উপরে ৭ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী ৭ শতাংশ এবং ১ থেকে ১০ বছর বয়সী ৩ শতাংশ।
পুরুষদের মৃত্যুঝুঁকি বেশির কারণ হিসেবে স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, সায়েন্সডিরেক্ট ডটকম সূত্রে গ্লোবাল হেলথ রিপোর্ট থেকে জানা যায়, পুরুষদের আক্রান্ত হওয়ার পর গুরুতর অবস্থা এবং মৃত্যুঝুঁকি বেশি হওয়ার কারণগুলো হলো: পুরুষরা আগে থেকেই অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হন বেশি। এর মধ্যে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস উল্লেখযোগ্য। এছাড়া পেশাগত কারণে বাইরে চলাচল বেশি থাকে তাদের। এছাড়া পুরুষদের জীবনমান পদ্ধতি যেমন–ধূমপান ও মদ্যপানের প্রবণতা বেশি হয় এবং সামাজিক আইসোলেশনে কম থাকেন। এসব কারণে তারা আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি এবং মৃত্যুঝুঁকিও বেশি।
আর নারীদের তুলনামূলক কম আক্রান্তের কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, জিনগতভাবে নারীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো থাকে তাদের ডাবল এক্স ক্রোমোজোমের জন্য। পুরুষের ক্রোমোজোম থাকে এক্স ওয়াই।