
নিজস্ব প্রতিবেদক: দিনে নেতা, রাতের পেশা চুরি-ডাকাতি। মৎস্য ঘেরে মাছ চুরি করতে গিয়ে জনতার হাতে আটক হয়েছে সেই নেতা। তার নাম আবুল কালাম (৫৫)। সে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মাটিয়াডাঙ্গা গ্রামের মৃত নবাত আলী বিশ্বাসের পুত্র।
জানা যায়, রোববার (১৫ মার্চ) দিবাগত গভীর রাত তিনটার দিকে ধুলিহর ইউনিয়নের জুসখোলা এলাকায় অবস্থিত সাতক্ষীরা শহরের মৃত আনছার আলী সরদারের পুত্র সাইফুল ইসলামের মৎস্য ঘের থেকে আবুল কালাম বাগদা চিংড়িসহ নানান প্রজাতির মাছ চুরি করতে গিয়ে ঘের কর্মচারীর হাতে আটক হয়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য মাটিয়াডাঙ্গা গ্রামের হান্নান বিশ্বাসের পুত্র আলম (২৬) দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে আবুল কালামের কাছ থেকে ৬টি বাগদা চিংড়ি ভর্তি ব্যাগ, টর্চ লাইট, মোবাইল ও মাছ ধরার সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
সাইফুল ইসলাম জানান, মাটিয়াডাঙ্গার মৃত আনিছ সরদারের পুত্র হারুনার রশিদ টুকুর ৬ বিঘার মৎস্য ঘেরের খাট (তলা) প্রায় ১৫ দিন পূর্বে আবুল কালাম ক্রয় করে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কালাম সহ তার সহযোগীরা আশ-পাশের ঘের থেকে মাছ চুরি শুরু করে। ধৃত কালাম উপস্থিত লোকজনের সামনে স্বীকার করেছে আমার ঘের থেকে সে এক থেকে দেড় লক্ষ টাকার মাছ চুরি করেছে।
আবুল কালাম বর্তমানে ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের কালেরডাঙ্গা গ্রামে বসবাস করে। সে ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। দিনের বেলা ব্রহ্মরাজপুর এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা, রাত হলেই চলে যায় চুরি-ডাকাতির সন্ধানে।
মাটিয়াডাঙ্গার ডাকাত বাহিনীর প্রধান জাকির হোসেন সম্প্রতি পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়। এরপর কিছু দিন বন্ধ ছিল এই বাহিনীর কার্যক্রম। জাকির বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে আবুল কালাম দায়িত্ব পালন করছে।
ডাকাত আবুল কালামের নামে সাতক্ষীরা, আশাশুনি, তালা সহ বিভিন্ন থানায় রশিদ মাস্টার হত্যা, পুরোহিত ভবসিন্ধু বর হত্যা, চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজানিসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
এই সব ডাকাত বাহিনীর শেল্টারদাতা হচ্ছেন সাতক্ষীরার একজন কথিত সাংবাদিক নেতা। এই বাহিনীর পুরো নিয়ন্ত্রন তার হাতে। চুরি-ডাকাতির একটি বড় অংশ ভাগও পেয়ে থাকে এই কথিত সাংবাদিক নেতা।
আটক আবুল কালামকে রাতেই স্থানীয় ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ক্যাম্পে হস্তান্তরের পর তাকে সাতক্ষীরা থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ক্যাম্পের এ,এস,আই শিল্লুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সাতক্ষীরা থানায় তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ চলছিল।