
নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরার দুই শীর্ষ চোরাকারবারী আল ফেরদাউস আলফা ও আব্দুল আলিমকে জেল গেটে জিঙ্গাসাবাদের আদেশের স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সোমবার (১৩ জানুয়ারি) এই আবেদন করেছেন পিপি এডভোকেট আব্দুল লতিফ। এর আগে গত ৯ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতের বিচারক মোঃ রেজওয়ানুজ্জামান তাদের একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
চোরাকারবারী আল ফেরদাউস আলফা ও তার ভাই আব্দুল আলিম দেবহাটা উপজেলার কোমরপুর গ্রামের আবুল কাশেম সরদারের ছেলে।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সাতক্ষীরা জজ আদালতের পেশকার টিটু মল্লিক জানান, গত ৯ তারিখে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যজিস্ট্রেট ১ম আদালতের বিচারক আলফা-আলিমের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে আসামীরা সংক্ষুদ্ধ হয়ে জেলা জজ আদালতে (ক্রিমিনাল রিভিশন ১১/২০) আপিল করেন। ১৩ জানুয়ারি সোমবার আপিলের শুনানী শেষে বিচারক শেখ মফিজুর রহমান রিমান্ড না মঞ্জুর করে আসামীদের জেলগেটে জিঙ্গাবাদ করার আদেশ দেন। তিনি আরো জানান, এই অদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ উচ্চ আদালতে যাবেন বলে ৩০ দিনের স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করেছেন।
মামলার তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ আবুল কালাম আজাদ জানান, আসামীদের জিঙ্গাসাবাদ করার জন্য গত ১ জানুয়ারি সাতক্ষীরা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ১ম আদালতে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিলো। বিচারক এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তিনি জানান, পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে মামলাটি বর্তমানে ডিবি পুলিশের কাছে তদন্তাধীন রয়েছে।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এডভোকেট আব্দুল লতিফ রাষ্ট্র পক্ষের আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আসামীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিনের আবেদন করেছেন। আগামী রবিবার আদালতে জামিন শুনানীর দিন ধার্য্য রয়েছে।
উল্লেখ্য, আলফেরদৌস আলফা বর্তমান সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের তালিকাভুক্ত হুন্ডি ব্যবসায়ী, চোরাকারবারী, মাদক ও অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ী। আলফা জঙ্গিদের মদদ দিয়ে থাকে বলেও প্রকাশিত সংবাদ পত্রের মাধ্যমে জানা যায়। এছাড়া, সম্প্রতি একটি বে-সরকারি টিভি চ্যানেলে অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি শিরোনামে প্রকাশিত খবরে আলফার নাম উঠে আসায় গোটা জেলায় তোলপাড় শুরু হয়।
মাদক মামলায় আলফা ইতোপূর্বে সাত বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে জেলে যান। তিনি বর্তমানে সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের সদস্য। এছাড়া, আলফার সহোদর আব্দুল আলিম বিজিবি সদস্য হত্যা মামলা ও চোরাচালান মামলার চার্জশীটভুক্ত আসামী। আলফা ও আলিমকে গত ৩১ ডিসেম্বর গ্রেফতারের পর আদালতের মাধ্যমে সাতক্ষীরা জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এই দুই চোরাকারবারীসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে গত ৩০ ডিসেম্বর বিজিবি’র হাবিলদার মোঃ মোহসীন বাদী হয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৫৮। ধারা ১৯৭৪ সালের স্পেশাল পাওয়ার এ্যাক্ট’র ২৫ বি (১) (বি)/২৫ডি।