
তালা অফিস থেকে নজরুল ইসলামঃ দৃশ্যমান উন্নয়ন হতে বঞ্চিত তালা উপজেলার মানুষ। আঠারমাইল-পাইকগাছা সড়কের তালা বাজারের মধ্যে কবি সিকানদার আবু জাফর সড়কের দু,ধারে মানদাতার আমলের জরাজীর্ণ ছিন্ন-ভিন্ন ছড়ানো ছিটানো দোকানপাট উপজেলা সদরকে অন্ধকারচ্ছন্ন করে তুলেছে।
তালা উপজেলা সদরে সরকারী প্রতিষ্ঠান গুলিতে সেবা গ্রহনকারী কিছু ব্যক্তিদের উপস্থিতির কারনে প্রতিদিন কিছু মানুষের আনাগোনা লক্ষ্য করা যায়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে কমতে থাকে মানুষের আনাগোনা। সন্ধ্যা নামতেই মনে হয় এ যেন এক চীর অচেনা ভূতুড়ে নগরী। উপশহরের যোগাযোগ ব্যাবস্থার উন্নয়ন, পরিকল্পিত মাস্টার প্লান তৈরী, তালা সদরকে পৌরসভা ঘোষণা করে পাশ্ববর্তী পাইকগাছা,কপিলমুনি,পাটকেলঘাটা,কেশবপুর,ডুমুরিয়া, কলারোয়া,উপজেলা সদরের উন্নয়নের অগ্রগতির সমকক্ষ করা এখন সকল শ্রেনী পেশার মানুষের প্রাণের দাবী হলেও তালা উপজেলা সদরে কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এ পর্যন্ত। সেই শত বৎসরের অনুন্নত অবকাঠামো রয়ে গেছে কালের সাক্ষী হয়ে। অভিজ্ঞ মহল বলে থাকেন,তালার উন্নয়নের রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব বহুকাল থেকে লক্ষনীয়। আগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যিনি এমপি হচ্ছেন তিনি তালা সদর সহ অনুন্নত উপজেলাকে উন্নয়নের লক্ষ্যে পৌছাতে প্যাকেজ প্রকল্প গ্রহণ ও সরকার প্রধান কে তালায় এনে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ প্রাপ্তির মাধ্যমে পরিকল্পিত উন্নয়ন করতে তালা সদরকে পৌরসভা বাস্তবায়ন, সরকারী ভাবে তালা সদরের আশেপাশে ২০/৩০ বিঘা জমি ক্রয় করে পরিকল্পিত ভাবে ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান সৃষ্টির মাধ্যমে নতুন কর্মসংস্থান তৈরী করে দৃশ্যমান উন্নয়ন করা আবশ্যক।
তালা সদরে রাস্তার দু’পাশে যে দোকান গুলো রয়েছে সবগুলো দোকান যে মাল আছে তার থেকে পাটকেলঘাটা বাজারের ১ টি দোকানে থাকা মালামালের চেয়ে কম। সদর বাজারের মধ্যে জায়গা না থাকায় বড় বড় ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার মতো পরিবেশ নেই।পাটকেলঘাটা থানা সহ আশে পাশের উপজেলা গুলো উন্নয়নে সকল মানুষ এক। কিন্তু তালাকে উন্নয়নের ক্ষেত্রে কখনও সকল মানুষকে এক হতে দেখা যায়নি। তবে একজন আরেক জনের পিছে লেগে থাকতে দেখা গেছে। তালা উন্নয়নে রাজনৈতিক ঐক্য প্রয়োজন। স্বাধীনতার পর যারা এমপি নির্বাচিত হয়েছেন তারা তালা-কলারোয়া উন্নয়নে কমবেশি সকলেই কাজ করেছেন। কিন্তু রাষ্ট্রীয় এমপি কোটার বরাদ্দের টাকা দিয়ে শত শত বৎসরের অনুন্নত তালাকে দৃশ্যমান উন্নয়ন করা কখনই সম্ভব হবে না। আশে পাশের উপজেলার সদরে উন্নয়নের সাথে তাল মিলাতে হলে কোটা বরাদ্দ ছাড়াও ৫০০-১০০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ করতে পারলে আশে পাশের উপজেলার মতন সমকক্ষ উন্নয়ন সম্ভব হবে।
তৎকালীন সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ দিদার বখত,সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিব কিছু দৃশ্যমন উন্নয়ন করেছেন। কিন্তু তারা লম্বা সময় পাননি উন্নয়ন করার। সৈয়দ দিদার বখত তালা কলেজ, তালা বিদে উচ্চ বিদ্যালয়, শহীদ আলী আহমেদ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়,কলারোয়া কলেজকে সরকারি করণ করেন। কলারোয়া ও পাটকেলঘাটা পল্লী বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন, গোডাউন, আঠারোমাইল থেকে পাইকগাছা পর্যন্ত ৩২ কিঃমিঃ পিচের রাস্তা,দলুয়া-পাটকেলঘাটা হয়ে কলারোয়া সরশকাটি পর্যন্ত পিচের রাস্তা করেন। অপরদিকে মোঃ হাবিবুল ইসলাম হাবিব, তালা কপোতাক্ষ নদের উপর ব্রিজ নির্মাণ, তালা হইতে খেশরা পর্যন্ত পিচের রাস্তা তালা হইতে খেশরা শাহাজাতপুর পিচের রাস্তা,তালা হইতে মহান্দী হাজরাকাটি হয়ে জাতপুর বাজার পর্যন্ত ১২ কিঃমিঃ পিচের রাস্তা, তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৩১ শয্যা থেকে ৫০শয্যা বহুতল পাকা ভবন নির্মাণ করেন। এছাড়া তালা কলারোয়া স্কুল কলেজ রাস্তাঘাট ইটের রাস্তা পিচের রাস্তা সহ গ্রামীন অবকাঠামো নির্মাণ করেন। স্বাধীনতার পর থেকে সকল এমপি সাহেবরা উন্নয়ন করেছেন কিন্তু সরকারি কোটার বাইরে অতিরিক্ত বরাদ্দ এনে কাজ করেছেন জাতীয় পার্টির আমলে সৈয়দ দিদার বখত ১৮ মাইল থেকে পাইকগাছা পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার পিচের রাস্তা এক টেন্ডার বাস্তবায়ন করেন। বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন মোঃ হাবিবুল ইসলাম হাবিব এমপি অতিরিক্ত বরাদ্দ এনে নজীরবিহিন উন্নয়ন করেছেন। তালাবাসীর ভাগ্যে কি আছে আগত সংসদ নির্বাচনে ? উন্নয়ন বঞ্চিত অনুন্নত তালাকে উন্নয়ন করতে যিনি এমপি হবেন সেই দল যদি রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে তার কাছে তালা বাসির প্রত্যাশা থাকছে,তালা সদরে পৌরসভার বাস্তবায়ন, পাটকেলঘাটা উপজেলা ও পৌরসভা ঘোষনা তালা উপশহরের রহিমাবাদ,খাজরা, মোবারকপুর,মহল্লাপাড়া,বারুইহাটি,মাঝিয়াড়া,শিবপুর,সাহাপুর,ভায়ড়া,চরগ্রামকে পৌরসভার অন্তভূক্ত করে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা। তালা সদরের আশে পাশে সরকারী ভাবে ২০/৩০ বিঘা জমি ক্রয় করে মাস্টার প্লান অনুযায়ী হাট বাজার সৃষ্টি, গরুর হাট,পরিকল্পিত দোকান-পাট ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হলে উন্নয়ন হবে এবং কর্মস্থানের সৃষ্টি হবে। উপজেলা অনুন্নত রাস্তা-ঘাট কে জনগণের যাতায়াতের জন্য কার্পেটিং দ্বারা উন্নয়ন,সর্বপরি এই অনুন্নত তালাকে দৃশ্যমান উন্নয়ন করতে হলে প্রয়োজন রাজনৈতিক ঐক্য ! তালাবাসী কি অন্ধকার জগতে চিরকাল থেকে যাবে ? নাকি যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আশে পাশের উপজেলা গুলো যেভাবে দৈনন্দিন উন্নতি হচ্ছে এভাবে কি তালাও উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাবে ? তালার এই দূরদর্শার জন্য নতুন প্রজন্মের কাছে কি জবাব দিবেন রাজনৈতিক নেতারা ? তালা শত বৎসর উন্নয়ন বঞ্চিত কেন? এ দূরাবস্থা থেকে তালাবাসী পরিত্রাণ চায়।