
মেহেদী হাসান, খুলনা থেকে: খুলনার খালিশপুর হাউজিং এস্টেটের বাসিন্দা মোসাঃ জামিলা বিবি বেগম জীবনের শেষ প্রান্তে এসে নিজের ছেলের ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয়ে সাংবাদিকদের সামনে নির্ভরতা ও রক্ষার আকুতি জানিয়েছেন। শনিবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমি একজন স্বামীহারা, অসুস্থ ও বয়োবৃদ্ধ নারী। আমার ৩৯ বছর বয়সী ছেলে মোঃ রাহাত আলী (জসীম) একজন নেশাগ্রস্ত, উচ্ছৃঙ্খল, লোভী ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির মানুষ। সে শুধু আমাকে নয়, আমার পরিবারের সবাইকে নানাভাবে নির্যাতন করে আসছে।”তিনি জানান, স্বামী মারা যাওয়ার পর কষ্ট করে সন্তানদের মানুষ করেছেন। কিন্তু মাঝের ছেলে জসীম বিপথে গিয়ে প্রথমে উচ্ছৃঙ্খল জীবন শুরু করে এবং পরে পৈত্রিক সম্পত্তির অংশ নিয়ে অত্যাচার শুরু করে। স্থানীয় গণ্যমান্যদের মধ্যস্থতায় সম্পত্তির অংশ বাবদ তাকে ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয় এবং সে নিজেই লিখিতভাবে প্রাপ্তি স্বীকার করে পৃথক বসবাস শুরু করে। “কিন্তু সেই অর্থ নেওয়ার পরও সে আমাদের ঘরে এসে গালাগালি করে, টাকা দাবী করে, স্বর্ণালঙ্কার ও ব্যবসায়িক মালপত্র চুরি করে। আমার অন্য ছেলেমেয়েদের জীবনও সে অতিষ্ঠ করে তুলেছে,” — কাঁদতে কাঁদতে বলেন এই বৃদ্ধা। তিনি জানান, প্রতিবেশী কিংবা আত্মীয়-স্বজন কেউ প্রতিবাদ করলেই তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ ও হুমকি দেয় তার ছেলে। অসহায় হয়ে তিনি তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে এফিডেভিট করেছেন এবং পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছেন। “আমি এখন রাতে ঘুমাতে পারি না, ঘুমের মধ্যেও আঁতকে উঠি। আমার শরীর ও মন দুটোই ভেঙে পড়েছে। জীবনের এই শেষ পর্যায়ে আমি একটু শান্তি চাই।” সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন তার কনিষ্ঠ কন্যা রাবেয়া খাতুন লাকী। তিনিও মায়ের পক্ষে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান যেন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে নির্যাতনের হাত থেকে পরিবারকে রক্ষা করা হয়। জামিলা বিবি বেগমের এই আকুল আর্তি যেন সমাজ ও রাষ্ট্রের বিবেককে নাড়িয়ে দেয় — এমন প্রত্যাশায় তার আবেদন এখন প্রশাসনের সদয় দৃষ্টি ও হস্তক্ষেপের অপেক্ষায়।