
জাতীয় ডেস্ক:
অনিকের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী আলিয়া খাতুনের দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কলহ চলছিল। এর জের ধরে তিনতলা থেকে লাথি মেরে তাঁকে ফেলে দেন অনিক। এতে আলিয়া গুরুতর আহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজশাহী নগরের পাঠানপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
আহত আলিয়া খাতুন টপি এখন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার পর থেকে তাঁর স্বামী পলাতক। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।
আলিয়া খাতুনের (২৬) স্বামী মো. অনিক (২২) রাজশাহী নগরের পাঠানপাড়া এলাকার রবিউল ইসলামের ছেলে। আলিয়া খাতুনের বাবার বাড়ি একই এলাকায়।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান জানান, আলিয়া খাতুন কোমরে প্রচণ্ড ব্যথা পেয়েছেন। ভেতরে ক্ষতও থাকতে পারে। ওপর থেকে পড়ে যাওয়ার কারণে হাড় ভেঙে গেছে কি না, সেটি এক্স-রে করার পর বলা যাবে। রোগীকে হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করানো হয়েছে। সেখানে তাঁর চিকিৎসা চলছে।
আলিয়ার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী সুমনা বেগম জানান, তাঁর ননদের এর আগে অন্য জায়গায় বিয়ে হয়েছিল। অনিকের অত্যাচারে আলিয়া সেই স্বামীর সংসার করতে পারেনি। পরে অনিকের সঙ্গে বিয়ে করে। অনিকের সঙ্গে আরও একটি মেয়ের সম্পর্ক রয়েছে। অনিক তাঁর ফোনের সিমটা সেই মেয়েকে দিয়ে এসেছেন। আলিয়া ফোন করলে ওই মেয়ে ধরেছে। এ নিয়ে অনিক ও আলিয়ার মধ্যে কলহ চলছিল।
সুমনা আরও বলেন, আজ আলিয়াকে বেদম মারছিলেন অনিক। দেখে সহ্য করতে না পেরে তাঁর দুই জা লিপি খাতুন আর সেলিনা খাতুন ঠেকাতে গিয়েছিলেন। তাঁদের সামনেই লাথি দিয়ে অনিক তিনতলা থেকে আলিয়াকে ফেলে দেন।
প্রত্যক্ষদর্শী লিপি খাতুন বলেন, সেলিনা ঘরের ভেতর থেকে আলিয়াকে ধরে বাইরে আনছিলেন। এ সময় অনিক এসে এমন জোরে লাথি দেন যে আলিয়া নিচের একটি টিনের চালার ওপরে পড়ে যান। তাঁর দেবর রাশেদ দোতলায় ছিলেন। তিনি লাফ দিয়ে টিনের চালার ওপর নেমে আলিয়াকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
পলাতক থাকায় আলিয়াকে মারধরের অভিযোগের বিষয়ে তাঁর স্বামী অনিকের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
নগরের বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহরাওয়ার্দী জানান, অনিক নেশাগ্রস্ত। মাঝেমধ্যে নেশার টাকার জন্য সে স্ত্রীর সঙ্গে ঝামেলা করত। আজ বেলা ৩টার দিকে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে সে তার স্ত্রীকে লাথি মেরে তিনতলা থেকে ফেলে দিয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে এখনো কোনো অভিযোগ থানায় আসেনি। তারপরও পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটকের চেষ্টা করছে। তার স্ত্রীর অবস্থা খুব একটা ভালো না। স্বজনেরা চাইলে এ নিয়ে মামলা করতে পারবেন।