
মোকাররাম বিল্লাহ ইমন: সাতক্ষীরা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর সেলিনা আক্তার (২৫) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। তিনি সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার সরসকাটি গ্রামের মোঃজুয়েল গাজীর স্ত্রী।
মঙ্গলবার সকালে সেলিনা আক্তার নামে এক গৃহবধু সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়, তার তিনটি সন্তানও আছে।
মৃত সেলিনা আক্তারের ছোট বোন সাথী আক্তার অভিযোগ করে বলেন, “আমার বোনকে গত রাতে মারধর করে হাসপাতালে আনা হয়। সকালে জানতে পারি, সে মারা গেছে।” সাথী আক্তার আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমার বোনের ওকে নির্যাতন করে মো: জুয়েল গাজী।
এ সময় সেলিনার বাবা মো. সেলিম শেখ (গ্রাম: পূর্ব সারলিয়া, থানা: মোড়লগঞ্জ, জেলা: বাগেরহাট) জানান, “আমার মেয়েকে মারধর করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তি করার আগে কেউ আমাকে কিছু জানায়নি। পরে শুধু মৃত্যুর খবর জানানো হয়। হাসপাতালে এসে দেখি মেয়ের মরদেহ পড়ে আছে।
তিনি আরো বলেন, আমার মেয়েকে রেখে সবাই চলে গেছে, এবং এর আগে কয়েকবার এই মেয়ের ওপরে নির্যাতন করা হয়, তা নিয়ে কলারোয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়, পরবর্তীতে পুলিশের সালিশে মীমাংশ করানো হয়, এরপরেই আবারও মারধর করার পরে সাতক্ষীরা মেডিকেল হসপিটালে ভর্তি করানো হয়, এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে, আমি এখানে এসে যেটা জানতে পেরেছি।
চাচাতো বোন বৃষ্টি বলেন, “সেলিনা আমার চাচাতো বোন এবং দুই জা। আমরা দুই বোনের দুই ভাইয়ের সঙ্গে বিয়ে করেছি। ঘটনাটি সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না, শুধু হাসপাতালে এসে সব দেখি।”
উল্লেখিত সেলিনা আক্তারের তিন বছরের মেয়ে বলেন, আমার চোখের সামনেই বাবা, তাঁকে অসহায়ভাবে মারধর করেন এবং জোরপূর্বক বিষ খাইয়ে দেন এটি ছিল এক বর্বরতম নির্যাতন। তিনিই আবার লোক-দেখানো জন্য মাকে সাতক্ষীরা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যান। “কিন্তু সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে, মা আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন, চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এই মৃত্যু স্বাভাবিক নয়, এটি একটি সুপরিকল্পিত এবং বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড, যার একমাত্র কারণ আমার বাবার পৈশাচিকতা। “আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমার বাবার এই জঘন্য কাজের জন্য সর্বোচ্চ আইনি শাস্তি প্রাপ্য। আমি দেশের আইন ও প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, আমার বাবা যেন ক্ষমার অযোগ্য অপরাধী হিসেবে বিচারের সম্মুখীন হন।”
এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় কোন অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশ লাশ ময়না তদন্তের জন্য লাশ মর্গে প্রেরণ করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে।

