
নজরুল ইসরাম, তালা থেকে: সাতক্ষীরার তালা উপজেলার পাটকেলঘাটায় মৎস্য ঘেরের বেঁড়ীবাঁধে মাচা পদ্ধতিতে সবজি চাষে যেন বিপ্লব সৃষ্টি হয়েছে। সমন্বিত মাছ ও সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন শত শত পরিবার।
বিশেষ করে লাউ, কুমড়া, করলার ও উচ্ছে, খিরা, বেগুন, পুঁই শাক, বরবটি, প্যাচঙ্গা, ধুন্দুল, ঝিঙে চাষে বাম্পার ফলনে দেখা দিয়েছে সফলতার এক নবদিগন্ত। একই জমির বহু ব্যবহারে কৃষকদের আয় যেমন কয়েক গুণ বাড়ছে তেমনি দেশের সবজির চাহিদা মেটাতেও দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে তালা উপজেলাার পাটকেলঘাটা কৃষকরা রাখছে গুরুত্বর্পূণ ভূমিকা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়ক সংলগ্ন নগরঘাটা ইউনিয়নের মিঠাবাড়ী, নগরঘাটা, শাগদাহ বিলে দেখা গেছে হাজার হাজার বিঘা মৎস্য ঘেরের চারপাশে মাচা পদ্ধতিতে লাউ, কুমড়া ও করলা সহ নানা রকম সবজি চাষ করা হয়েছে। মাচায় ঝুলছে হাজার হাজার করলা, শত শত লাউ ও কুমড়া। একই সঙ্গে ঘেরের বেঁড়ীবাঁধে লাগানো হয়েছে পুঁইশাক ও ঢেড়স। উল্লেখযোগ্য কিছু মৎস্য ঘেরের বেঁড়ীবাঁধের উপর তরমুজ চাষ হয়েছে, সেখানেও আসছে সফলতা।
আশাননগর এলাকার কৃষক সাগর হোসনে জানান, তিনি তার তিন বিঘা ঘেরের পাড়ে মাচা পদ্ধতিতে লাউ, কুমড়া ও করলা চাষ করেছেন। মাঘ মাস পর্যন্ত এভাবেই মাছের পাশাপাশি সবজি উৎপাদন চলবে। তারপর পানি শুকেিয় গেলে ধান রোপন করা হবে।
তিনি আরো জানান, তার তিন বিঘা জমির ঘেরে নেট, বাঁশ ও কট সুতা দিয়ে মাচা তৈরিতে ছয় হাজার টাকা খরচ হয়ছে। এখানে উৎপাদতি সবজি বিক্রিতে আয় লাখ টাকা ছাড়িয়েছে। কয়েক বছর ধরে মাচা পদ্ধতিতে ফসল উৎপাদনকারী সুনিল রায় বলেন, মাচা তৈরতে খরচ প্রতিবছর হয় না। দুই-তিন বছর পরপর মাচা তৈরি করতে হয়। এতে লাভের পরিমাণ অনেক বাড়ে।
শুধু সুনলি রায়ের ঘেরেই নয়, শংকর, ভূবনেশ্বর,স্বপন, মহিতোষ, অজিত ,তবিবুর রহমান,সোহাগ হোসেন সহ পার্শ্ববর্তী অন্যান্য কৃষকদের ঘেরে যতদূর চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজের সমারোহ। প্রত্যেকের ঘেরের মাচায় ঝুলছে সবজি। মাচা পদ্ধতিতে চাষাবাদে কৃষিতে বিপ্লব সৃষ্টি হয়েছে।
তালা উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন জানান, ‘তালা উপজেলায় সমন্বিত চাষ পদ্ধতি ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে, বিশেষ করে নগরঘাটা ইউনিয়ন তার মধ্যে অন্যতম। এই সবজি সাধারণত রাসায়নিক সার মুক্ত হয়ে থাকে। মৎস্য ঘেরের বেড়ীবাঁধের উপর এমন সবজি চাষ খুব লাভজনক।’