
আজকের বিষয় ২নং ওয়ার্ড
আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ: দীর্ঘদিন পর তৃণমূল আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও সদস্য সংগ্রহ চলছে। এ কার্যক্রমে তৃণমূলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা স্থান না পেলেও ঢুকে পড়ছে হাইব্রিডরা।
মুনন্সিপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মজিদ সানা বলেন, দশ বছরেরও বেশি সময় দল করার বয়স হতে হবে। কেউ অন্য দল থেকে এসে গুরুত্বপৃর্ন পদে আসতে পারবে না। এবিষয়ে শেখ হাসিনার নির্দেশ মানার জন্য সকল তৃণমূল নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আর্কষন করেছেন তিনি।
মুজিতপুর গ্রামের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম বলেন, দলের ভিতরে যারা জামায়াত ও বিএনপি থেকে এসে পদ নিয়ে বসে আছে, তাদের খুঁজে বের করে ত্যাগীদের সে সব পদে সুযোগ করে দেয়া হোক।
মুজিতপুর গ্রামের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তৃণমূলকে শক্তিশালী করার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২নং ওয়ার্ডের নতুন সদস্য সংগ্রহ চলছে। জামায়াত, বিএনপি ও যুদ্ধাপরাধী পরিবারের কেউ যেন দলে অনুপ্রবেশ না করতে পারে সে জন্য সিনিয়র নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আর্কষন করেছেন তিনি।
ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সমাজ কল্যান সম্পাদক মুনন্সিপাড়া গ্রামের জিয়াদ আলী গাজী বলেন, দলে অসংখ্য অনুপ্রবেশকারী আছে। সিনিয়র নেতাদের কাছে দাবি থাকবে, সেদিকে যেন নজর রাখেন। অনুপ্রবেশকারীরা তাদেরই বংশধর, যারা ৭৫ সালে বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে হত্যা করে ছিল।
মুনজিতপুর গ্রামের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের একজন সদস্য বলেন, দলে অনেক অুপ্রবেশকারী আছে জেনেও কিছু বলতে পারি না। সবাই নিজেদের লোক। কাকে কি বলবো? আমি কারো কাছে খারাপ হতে চাই না।
রাজার বাগান এলাকার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের একজন প্রবীন সদস্য বাবু রাম বলেন, আমি স্কুল জীবন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ করি। আমি দলের কোন ধরণের সুযোগ-সুবিধা পাইনা। যারা অন্য দল থেকে এসেছে তারাই সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে। ক্ষোভ প্রকাশ করে বাবু রাম বলেন, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুস সামাদ বিএনপি করত। সে তার স্ত্রীকে দলীয় কাউন্সিলর করে। আমি এতদিন দল করেও কাউন্সিলর হতে পারলাম না। এ বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক আছাদুজ্জামানের কাছে কাউন্সিলের দিন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা করেছে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন ও সদর ২ আসনের এমপি মহোদয়, আমি কিছু বলতে পারবো না। তিনি আরও বলেন, এক্কোবর কামার একজন সক্রিয় বিএনপির সদস্য। সে কি করে আওয়ামী লীগের সদস্যপদ পায়। কবির কাটা খালী থেকে এসেছে। ওখানে সে বিএনপি করতো, সেও কি করে কাউন্সিলর হয়? আকরম জাতীয় পার্টি থেকে এসেছে সে কি করে সদস্য হয়। তিনি আরও বলেন, এই রাজার বাগানে আমরা দাসেরা আনুমানিক এক দেড়’শ ঘর সবাই আওয়ামী লীগ করতাম। আর মুসলিমদের ভিতরে হাতে গোনা কয়েক জন ছিল তাদের মধ্যে, মৃত অনাতি সরদার, হামিদ, সুবহানা, ইমাদ মাষ্টার প্রমুখ।
রাজার বাগান এলাকার গ্রাম্য ডাক্তার সুশান্ত কুমার সরকার বলেন, ছাত্র জীবনে আমি সাতক্ষীরা সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম। ৯৪ সালে আমি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য হই। তারপর থেকে সকল আন্দোলন সংগ্রামে দলের সাথেই আছি। কষ্ট হয় যখন দেখি দলের ভিতরে অসংখ্য জামায়াত ও বিএনপির সদস্য দলের পরিবেশ নষ্ট করছে। সাধারণ সম্পাদক আছাদ ভাইসহ সিনিয়র নেতাদের বারবার বলা সত্বেও তারা নিরব ভ‚মিকা পালন করছেন।রাজার বাগান এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা রকিবুল হাসান বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ আওয়ামী লীগে কোন ধরণে জামায়াত ও বিএনপি অনুপ্রবেশ করতে পাবে না। সেই নির্দেশ অনুযায়ী আমরা যারা তৃণমূল নেতাকর্মী আছি, তাদের খেয়াল রাখতে হবে যাতে কেউ অনুপ্রবেশ করতে না পারে। কে কার আত্মীয় সে বিষয়ে সবাই যেন খেয়াল রাখে। কার ছেলে কার মেয়ের সাথে বিয়ে হচ্ছে। সে পরিবারে জামায়াত ও বিএনপি আছে কি না। কেউ যদি এধরণের কাজ করে, তাহলে জেলা আওয়ামী লীগ তার বিচার করবে। দলে হঠাৎ এসে কেউ কোন ধরণের পদ পাবে না নেত্রীর নির্দেশ।
ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আছাদুজ্জামান বলেন, আমি ছোট বেলা থেকেই বঙ্গবন্ধুকে ভাল বেসে দল করি। আমি ২৪ বছর ধরে সাধারণ সম্পাদক পদে আছি। দলে একাধিক জামায়াত-বিএনপি সদস্য এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমার জানা নেই। যদি কেউ থাকে তাহলে তাদের বাদ দেওয়ার জন্য পৌর আওয়ামী লীগের কাছে চিঠি দিব। নিয়ম না থাকলেও তিনি পাশ করা কমিটির ভিতরে নিজের করা ১৪ সাল থেকে সদস্যদের তালিকা একই সাথে রেখে সাধারন সদস্যদের বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলছেন। অন্য দলের থেকে এসে কমপক্ষে দশ বছর দলে থেকে তারপর পদে আসতে হবে, এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সাতনদীকে জানান এবিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
পৌর আওয়ামী লীগের সাধাররণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন বলেন, এবিষয়ে তিনি জানেন না। এ কাজ গুলো ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদকের কাজ।