
জাতীয় ডেস্ক: নতুন মেরূকরণ হচ্ছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ‘নিষ্ক্রিয়’ ২০ দলীয় জোটে। বহুল আলোচিত ও দীর্ঘদিনের পুরোনো জোটটি অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ভেঙে’ নতুন দুটি জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটাতে যাচ্ছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার ‘সমমনা ১২ দলীয় জোট’ এবং চলতি মাসেই ‘সমমনা ৭ দলীয় জোট’ আত্মপ্রকাশ করবে। তবে কোনো জোটেই থাকছে না প্রধান শরিক দল বিএনপি, অন্যতম শরিক দল জামায়াতে ইসলামী ও কর্নেল (অব.) অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন এলডিপি। বিএনপি ঘোষিত ১০ দফা এবং রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ দফা রূপরেখার সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করেছেন নতুন দুটি জোট গড়তে যাওয়া দলগুলোর শীর্ষ নেতারা। সমমনা দল হিসেবে গণতন্ত্র মঞ্চের আদলেই চলমান যুগপৎ আন্দোলনে পৃথক মঞ্চ থেকে অংশ নেবে তারা। নতুন জোটের আত্মপ্রকাশের মধ্য দিয়ে নিষ্ক্রিয় জোটের পরিচিতি হবে ‘বিলুপ্ত ২০ দলীয় জোট’।
এ বিষয়ে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বর্তমানে ২০ দলীয় জোট নিষ্ক্রিয়। দীর্ঘদিন ধরে জোটের ব্যানারে কোনো কর্মসূচি পালন হচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে দলগুলো নতুন কোনো জোট গঠন করতেই পারে।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, জামায়াতে ইসলামীকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত থেকেই এ কৌশল নিয়েছে তারা। সে লক্ষ্যে এবার বিএনপি একক মঞ্চ থেকে আন্দোলন করছে। কোনো জোটভুক্ত আন্দোলন করছে না এবং নতুন জোটও গঠন করেনি। দলটির সে সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই সমমনা দলগুলোর শীর্ষ নেতারা নিজেদের পছন্দের মতো জোটবদ্ধ হচ্ছেন। তবে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে অন্য দলগুলো জোটবদ্ধ হতে রাজি নয়। অন্যদিকে শীর্ষ নেতৃত্ব এবং ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের কারণে কর্নেল (অব.) অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) কোনো জোটেই থাকছে না।
নতুন এই জোটের দলগুলো হচ্ছে- মোস্তফা জামাল হায়দারের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি (জাফর), মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীকের নেতৃত্বে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ লেবার পার্টি, সৈয়দ এহসানুল হুদার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয় দল, কে এম আবু তাহেরের নেতৃত্বে এনডিপি, শাহাদাত হোসেন সেলিমের নেতৃত্বে এলডিপি (একাংশ), অ্যাডভোকেট জুলফিকার বুলবুল চৌধুরীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, মুফতি মহিউদ্দিন ইকরামের নেতৃত্বে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, মাওলানা আবদুর রকীবের নেতৃত্বে ইসলামী ঐক্যজোট, নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল, অ্যাডভোকেট আবুল কাসেমের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টি, শফিউল আলম প্রধানের মেয়ে ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধানের নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা, একাংশ)।
এই জোটের নেতৃত্বে থাকবেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দার। মুখপাত্র হিসেবে থাকবেন মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক। গণমাধ্যম বিষয়ে সমন্বয় করবেন শাহাদাত হোসেন সেলিম।
৭ দলীয় জোটে থাকছে যারা :সূত্র জানায়, ২০ দলীয় জোটের শরিক সাতটি দলের পৃথক জোট গঠনে শীর্ষ নেতৃত্ব নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। সম্ভাব্য এ জোটের শীর্ষ নেতা হচ্ছেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ। বৃহস্পতিবার ১২ দলীয় জোট আত্মপ্রকাশের পর এ জোটটির নাম ও আত্মপ্রকাশের তারিখ চূড়ান্ত করা হবে।