
মনিরুল ইসলাম মনি: টানা কয়েক ঘন্টা বৃষ্টিপাতে সাতক্ষীরার বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিতে ভেসে গেছে ১০ হাজার হেক্টর চিংড়ী ও মৎস্য ঘের। মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে ক্ষতি হয়েছে ১৪ হাজার ৪৭০ জন মৎস্য চাষির ৫৯ কোটি টাকার মাছ। এছাড়া ভারি বর্ষণে তলিয়ে আছে ২ হাজার ১১২ হেক্টর আমন বীজতলা, রোপা আমন ও সবজি ক্ষেত। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ১৪’শ ৫৪ হেক্টর আমন বীজ তলা। সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ীর হিসেবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান প্রায় ১৭ কোটি টাকা।
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য অফিসার মোঃ মশিউর রহমান জানান, মঙ্গলবার (৩ আগষ্ট) ভোর থেকে টানা ৫ থেকে ৬ ঘন্টা বর্ষণ সহ গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে সাতক্ষীরা জেলার বিস্তৃর্ণ এলাকা ও নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে চিংড়ী ও মৎস্য ঘের। ভেসেগেছে ১৫ হাজার ১৮টি ছোট বড় মৎস্য ঘের ও পুকুর। জেলার ৭টি উপজেলার মধ্যে সব চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আশাশুনি, কালিগঞ্জ ও সুন্দরবন সংলগ্ন শ্যামনগর উপজেলায়। এই তিন উপজেলায় এখনও ১৩ হাজার ২১ ঘের পানিতে একাকার হয়ে আছে। ভেসেগেছে ৪৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকার মাছ। এছাড়া সাতক্ষীরা সদর, তালা এবং দেবহাটার বিস্তৃর্ণ এলাকার রোপা আমন ও চিংড়ী ঘের পানিতে নিন্মজ্জিত রয়েছে। এর মধ্যে তালায় ৩৭৮টি মৎস্য ঘের ও পুকুর, দেবহাটা উপজেলায় ১ হাজার ৩৬৯টি ঘের এবং সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ২৫০টি ঘের ভেসেগেছে। যার ক্ষতির পরিমান ১১ কোটি ২৪ লাখ টাকা।
এদিকে সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ীর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ নূরুল ইসলাম জানান, অতি বৃষ্টিতে সাতক্ষীরায় ১৪’শ ৫৪ হেক্টর আমন বীজতলা, ৩৫২ হেক্টর রোপা আমন ও ২৮৫ হেক্টর বিভিন্ন প্রজাতির সবজির ক্ষেত প্লাবিত হয়েছে। ৬৭ হাজার ৮’শ ২৪ জন ক্ষতিগ্রস্থ্য চাষীর ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১৭ কোটি টাকা। এই মূহুর্তে কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ধান বীজ তিবরণ করা হচ্ছে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, চলমান অতিবৃষ্টিতে সৃষ্ট জলবদ্বতা নিরসনে ও জনদুর্গোভ লাঘবে খাল ও ঘের মালিকদের দেওয়া অবৈধ নেট-পাটা অপসারনের জন্য স্থাপনকারীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যারা এখনো নেট-পাটা অপসারণ করেন নি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) এর নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলার মৎস্য,কৃষিসহ বিভিন্ন সেক্টরে যে ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে তা নিরুপন করে সংশিলিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হবে। জলাবদ্বতার কারনে যারা বেশি ক্ষতি হয়েছে তাদের জন্য চাল ও নগদ অর্থ বরাদ্ব দেওয়া হয়েছে