
হাফিজুর রহমান: ২০ হাজার টাকা নিয়ে চলাচলের পথ দিয়ে আবার সেই পথে গাছ ফেলে আটকিয়ে একটি অসহায় গরীব দিন মুজুর পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে মুকেশ,অঞ্জনা গংরা। শনিবার বেলা ১২টার সময় কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ দেলোয়ার হুসেন সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যেয়ে মানবিক আবেদন জানালেও সেটা প্রত্যাখ্যান করে অঞ্জনা মিস্ত্রি। ঘটনাটি ঘটেছে কালিগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণশ্রীপুর ইউনিয়নের গোবিন্দকাটী গ্রামে।
এ ব্যাপারে গোবিন্দকাটী গ্রামের মানিক গাইনের স্ত্রী তপতী রানী গাইন গত ২৭ এপ্রিল একই গ্রামের মুকেশ মিস্ত্রি ও তার স্ত্রী অঞ্জনা মিস্ত্রির বিরুদ্ধে যাতায়াতের পথ বন্ধ করায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট এক লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক রাসেল বিষয়টি স্থানীয় ভাবে সমঝোতার জন্য অত্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রশান্ত সরকার কে লিখিত নির্দেশ দেন। উক্ত নির্দেশে চেয়ারম্যান তার পরিষদের চার জন্য সদস্য, দুই জন প্রধান শিক্ষক এবং অত্র ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসার কে দিয়ে সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করে দেন। উক্ত কমিটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে যাতায়াতের পথ খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত কে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে কমিটির সদস্যদের উপর চড়াও হয়ে তাড়িয়ে দেয়।
উক্ত ঘটনায় চেয়ারম্যান একটি তদন্ত প্রতিবেদন গত ১২ই মে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট দাখিল করেন। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় ক্ষমতাসীন দলের কয়েক নেতার ইন্ধনে মুকেশ অঞ্জনা গংরা প্রতিনিয়ত অবরুদ্ধ তপতী পরিবারের উপর নির্যাতন ও জুলুম চালিয়ে আসছে।
অভিযোগের সূত্র থেকে জানা যায়, হতদরিদ্র তপতী রানী স্বামী সন্তান নিয়ে গোবিন্দকাটী গ্রামে বসবাস করত। তপতী রানী দরিদ্র হওয়ার সুযোগে একই গ্রামের মৃত মনোহর বিশ্বাস তার স্ত্রী ইলা বিশ্বাস ও তার পুত্র শেখর বিশ্বাস তাদের পরিবার কে দেখা শুনার জন্য তপতী কে গোবিন্দকাটী মৌজার এক একর ভিটা জমির উপর জায়গা দিয়ে তাদের বাড়ির দাশী হিসাবে সেবা যতেœর কাজ করাতো। পরবর্তীতে তাদের ভিটার পাশ হইতে ৫শতক জমি তপতী কিনলে মৃত মনোহর বিশ্বাসের স্ত্রী ইলা বিশ্বাস পথের জন্য তার নিকট হতে বিশ হাজার টাকা গ্রহন করে। পরে মৃত মনোহর বিশ্বাসের স্ত্রী ইলা বিশ্বাস তার পুত্র শেখর এবং মিহির ভারতে যেয়ে বসবাস করে এবং ভারতে চলে যাওয়ায় পরিত্যাক্ত জমির ভিটায় অঞ্জনা মিস্ত্রি ও তার স্বামী মুকেশ বিশ্বাস বসবাস করে। মুকেশ বিশ্বাসের বাড়িতে বিভিন্ন সময় মদ গাজা বিক্রয় এবং অসামাজিক কার্যকলাপ দেখে ফেলা এবং পুলিশি অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে সন্দেহ ভাজন হিসাবে তপতী রানীর একমাত্র যাতায়াতের পথ অবরুদ্ধ করে দেয়। উল্লেখ্য মৃত মনোহর বিশ্বাসের পুত্র শেখর ও মিহির ভারতীয় নাগরিক এবং ভারতের দীর্ঘদিন বসবাস করে আসছে। ভারত থেকে পালিয়ে বাংলাদশে এসে ২০১৩ সালে শেখর বাবার এক মাত্র সন্তান দাবী করে তৎকালীন চেয়ারম্যান দিদারুল ইসলামের নিকট হতে একটি জাল ভুয়া ওয়ারেশকাম সার্টিফিকেট নিয়ে ভাই মিহিরের জমি বিক্রি করে যায়। পরবর্তীতে ভারত হতে বাংলাদেশে এসে গত ১৮ মার্চ কন্যা অঞ্জনার নামে দান পত্র করে দিয়ে আবার পালিয়ে যায়।
বিষয়টি নিয়ে সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে অভিযোগ এবং জানাজানি হলে দলিল লেখক মুকুলের সনদ পত্র স্থগিত করে যা বর্তমান মামলার জন্য প্রক্রিয়াধীন আছে। তপতী রানী বিগত ইউপি নির্বাচনের সময় বর্তমান চেয়ারম্যানের পক্ষে নেওয়ায় এবং প্রতিপক্ষ মুকেশ অঞ্জনা গংরা ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যান গংদের বিরুদ্ধে মামলা পাল্টা মামলা নিয়ে মুল সমস্যার সৃষ্টি হওয়ায় অসহায় দিন মুজুর গরীব তপতী রানীর চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সরাসরি হস্তক্ষেপে অবরুদ্ধ পরিবার কে উদ্ধারের আশু হস্তক্ষেপ জানিয়েছে এলাকাবাসী।