
নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি জমি আত্মসাতের লক্ষে ভূয়া ওয়ারেশ কায়েমে জালিয়াতির মাধ্যমে জাল সনদ প্রদান করে নলতা ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান। সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের নলতা ইউপি’র ১নং ওয়ার্ডের মেম্বর হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠায় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ গেলে তদন্তে সত্যতাও মিলেছে। সরকারি সম্পত্তি আত্মসাতের লক্ষে একটি মহলের সাথে যোগসাজশে ভূয়া ওয়ারেশ কায়েম জাল সনদের ব্যবস্থা করেন এই ইউপি সদস্য।
উপজেলার নলতা ইউনিয়নের খানজিয়া গ্রামের জবেদ আলীর ছেলে ও ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নিয়াত আলী মন্টু সাংবাদিকদের জানায়, খানজিয়া রঘুনাথপুর এলাকায় কালীচরণ সূত্রধরের ছেলে তারকানাথ সূত্রধর ৪২ শতাংশ জমি রেখে স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে স্বপরিবারে ভারতে চলে যায়। পরবর্তীতে ওই জমি সরকারি সম্পত্তি হিসেবে তালিকাভূক্ত হয়। উক্ত ৪২ শতাংশ জমির মধ্যে নিয়াত আলী মন্টুর পিতা জবেদ আলী ২০ শতক জমি নিয়মতান্ত্রিকভাবে ডিসিআর নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত বসবাস ও ভোগদখল করছেন। অবশিষ্ট ২২ শতক জমি শিবনাথ মিস্ত্রীর পুত্র সঞ্জয় নাথ ওরফে নজরুল ইসলাম এবং নুরুগাজীর পুত্র রফিকুল ইসলাম ডিসিআর নিয়ে ভোগদখল করছেন। কিন্তু সঞ্জয় নাথ ওরফে নজরুল ইসলাম সরকারি খতিয়ানভূক্ত ৪২ শতক জমি আত্মসাত করার উদ্দেশ্যে নিজেকে তারকানাথ সূত্রধরের ভাইয়ের পুত্র হিসেবে দাবি করে স্থানীয় ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমানের যোগসাজশে ভূয়া ওয়ারেশ কায়েম নেয়। অথচ উক্ত নজরুল ইসলাম তারকানাথ সূত্রধরের বংশধর বা ওয়ারেশ নয়। মেম্বর হাবিবের যোগসাজশে সম্পূর্ন মিথ্যা জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে তিনি সরকারি সম্পত্তি আত্মসাতের পায়তারা চালাচ্ছেন।
নলতা ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান কর্তৃক জালিয়াতির মাধ্যমে জাল সনদ প্রদানের বিষটি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ভূয়া ওয়ারেশ কায়েম প্রদান ও সরকারি সম্পত্তি নিজেদের নামে জালিয়াতি করে রেকর্ডভূক্ত করার চেষ্টার বিষয়টি ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবরে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ প্রদান করলে জেলা প্রশাসক অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্যে কালিগঞ্জ সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্তৃক দায়িত্ব দেয়। এরই প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ২৩ এপ্রিল ভাড়াশিমলা ইউনিয়ন ভূমি অফিসার শেখ ইউনুস চিশতি’র সুষ্ঠু তদন্তে ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমানের ওয়ারেশ কায়েম জাল বলে প্রমাণিত হয়। এবং উক্ত রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করে। কিন্তু কোন এক অজানা কারণে তদন্তের দীর্ঘ দুই বছর পেরিয়ে গেলেও আজও মেম্বর হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। তাই জালিয়াতির মাধ্যমে ভূয়া ওয়ারেশ কায়েম বাতিল ও জাল সনদ প্রদানকারী ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে দ্রুত আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন নিয়াত আলী মন্টু সহ এলাকাবাসী।
এবিষয়ে ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমানের কাছে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা ওয়ারেশ কায়েম পাওয়ার যোগ্য আমি তাদেরকেই ওয়ারেশ কায়েম দিয়েছি।