
হাফিজুর রহমান, কালিগঞ্জ প্রতিনিধি: কালিগঞ্জ উপজেলা জুড়ে বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রয় নিষিদ্ধ অবৈধ নোট-গাইড বইয়ে সয়লাব হয়ে গেলেও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বললেন এ ব্যপারে সরকারি কোন নিদের্শনা নাই। ঔষধ কোম্পানি মত নোট-গাইড পুস্তক প্রকাশনী সংস্থা গুলো তাদের বেতন ভুক্ত জেলা, উপজেলা পর্যায়ে রিপ্রেজেনটিভ নিয়োগ করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রসার শিক্ষদের মোটা অঙ্কের টাকার উপঢৌকন ও উৎকোচ দিয়ে ম্যানেজ করে ছাত্র-ছাত্রীদের ঐ সমস্ত পুস্তক প্রকাশনীর বই কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। যখন দেশের রাষ্টপতি, প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষমন্ত্রী এবং জেলায় জেলায় জেলা প্রশাসকরা সভা-সমাবেশ করে নিষিদ্ধ নোট, গাইড বই বিক্রি এবং শিক্ষার্থীর ব্যবহার বন্ধ করছে শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য ঠিক তখনই কালিগঞ্জ উপজেলা জুড়ে শিক্ষক এবং পুস্তক প্রকাশনী সংস্থা গুলো নেমে পড়েছে উপঢৌকন ও উৎকোচের প্রতিযোগিতায়। একই সাথে উপজেলা জুড়ে কলেজ, মাদ্রসা গুলোও বসে নেই তারা যে কোম্পানি বা প্রকাশনী বেশি সুবিধা দিচ্ছে তাদের নোট, গাইড, ব্যাকারণ কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। একদিকে যেমন নোট গাইড বই বাণিজ্য চলছে অন্যদিকে কোচিং এর নামে টিউশনি বাণ্যিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে শিক্ষকরা। যেমন স্কুলের নির্ধারিত শিক্ষকের নিকট কোচিং বা টিউশনি না করলে শিক্ষার্থীদের ভাগ্যে ভাল নম্বর জোটে না অন্যদিকে শিক্ষক বা বিদ্যালয় মনোনিত চাপিয়ে দেওয়া নোট, গাইড ব্যাকারণ না কিনলে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। কমিশন প্রাপ্ত শিক্ষক সমিতির স্কুল গুলো এই ভাবে তাদের স্কুলের বুকলিষ্ট তৈরি করছে। যে কারনে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের বলির পাঠা বানিয়ে কমিশন দেওয়ার টাকা বইয়ের দাম বৃদ্ধি করে কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। দু’শ টাকার বই ছয়’শ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। বর্তমান সরকার প্রথম শ্রেনী হতে দশম শ্রেনী পর্যন্ত সরকারী নির্ধারিত বইয়ের সাথে সাথে বাংলা ও ইংরেজি ব্যাকারণ সরবরাহ করলেও কমিশনের কারনে সরকারি বই না পড়িয়ে শিক্ষকরা বিভিন্ন প্রকাশনীর বই কিনতে এবং পড়তে বাধ্য করাচ্ছে। বলা হচ্ছে সরকার প্রদত্ত ব্যাকারণ ও গ্রামারের মান ভাল না হওযায় দামি প্রকাশন সংস্থার বই কিনতে জোর করা হচ্ছে। এ কারনে বছরের শুরুতেই বিভিন্ন পুস্তক প্রকাশনীর এজেন্টরা উপজেলা জুড়ে প্রতিটি স্কুল কলেজ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রসায় যেয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক সমিতি, শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সাথে আলোচনা করে শিক্ষার্থী সংখ্যা অনুপাতে মোটা অঙ্কের টাকায় চুক্তি করছেন। তবে এর আগে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির মাধ্যমে কন্ট্রাক হতো। বিষয়টি বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় ফলাও ভাবে প্রকাশ হওয়ার পর থেকে শিক্ষক ও প্রকাশনা সংস্থা নিজেরা বাঁচতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতি চুক্তি করছে। এক্ষেত্রে পুস্তক ব্যবসায়ীরা মোটা অঙ্কের কমিশন লাভের আশায় মাধ্যম হিসাবে কাজ করছে। শনিবার বেলা ১১ টার সময় কালিগঞ্জ উপজেলা সদরে থানা রোডে অবস্থিত আজিজিয়া লাইব্রেরী, মডার্ণ বুক ডিপো, পপুলার লাইব্রেরী সহ একাধিক লাইব্রেরীতে দেখা গিয়াছে বেশির ভাগ পাঞ্জেরী, লেকসার, সিনটেক (ভোক) এবং কলেজের জন্য দিক দর্শন প্রকাশনী সংস্থা গুলো বই বেশি বেশি মজুত আছে। পাঞ্জেরির এজেন্ট হিসাবে আঞ্জারুল ইসলাম দোকানে মজুত ছাড়াও পাশে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বিপুল পরিমাণ নোট, গাইড বই মজুত করে রেখেছে। পাঞ্জেরির প্রকাশনীর রিপ্রেজেনটিভ জামাল হোসেন উপজেলা জুড়ে পুস্তক বিক্রেতা এবং স্কুল, কলেজ মাদ্রসা গুলোর ম্যানেজে দিন-ভর বই নিয়ে ছুটে বেড়াচ্ছে। এ ব্যাপারে কালিগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম নিকট জিজ্ঞাসা কররে তিনি এ প্রতিনিধিকে বলেন নোট, গাইড, মজুদ, বিক্রয় বিষয়ে তার কাছে কোন সরকারি নিদের্শনা নাই। যদি কোন স্কুল, কলেজ, মাদ্রসা নোট, গাইড বই কিনতে বাধ্য করায় তাতে করার কিছু নাই। নোট, গাইড বই বিক্রয় বা নিষিদ্ধের বিষয়ে শিক্ষমন্ত্রী বা জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কোন বক্তব্য বা নিদের্শনা জানা নাই।