
নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরার আশাশুনিতে প্রেমের সম্পর্কের জেরে বিয়ের ঘটনায় এক বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রীকে অপহরন করার অভিযোগে মামলা হওয়ায় মামলার ৮ আসামীর সবার জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে বিজ্ঞ আদালত। আসামী পক্ষের দাবী অপহরণ নয় প্রেমের সম্পর্কের জেরে বিয়ে সংঘঠিত হয়েছে। আর জেল হাজতে পাঠানোর ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে আসামী পক্ষের আইনজীবিরা।
মামলার এজহার সূত্রে জানা গেছে. আশাশুনির বড়দল গ্রামের মোহাম্মদ আলী সানার কন্যা আশা (২২) (ছদ্মনাম) খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। করোনার কারনে বিশ^দ্যিালয় বন্ধ থাকায় সে বড়ীতে অবস্থান করছিল। এ সুযোগে একই গ্রামের কালাম সানার পুত্র রাকিবুল ওরফে পাপ্পু (২৫) রাস্তাঘাটে ও বাড়ীতে আশাকে উত্যক্ত করতো ও প্রেমের প্রস্তাব দিতো। তাতে রাজি না হওয়ায় তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়া হয়। তাতেও রাজি না হওয়ায় তাকে উঠিয়ে নিয়ে বিয়ে করার হুমকি দেয়া হয়। এরই জেরে বিগত ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১ তারিখ বেলা ১১ টার দিকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়ার জন্য আশা তাদের বাড়ীর পাশে বাথরুমের সামনে যাওয়া মাত্রই সেখানে পূর্ব থেকেই ওৎ পেতে থাকা রাকিবুল ওরফে পাপ্পু, তার ভাই পারভেজ (১৮), এবং তাদের সহযোগী খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার লস্কর গ্রামের আবুল ঢালীর দুই পুত্র মিজান (৪০) ও সুজন (৩৮) মিলে আশাকে জোরপূর্বক একটি গাড়ীতে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে অপহরণ করে। এই অভিযোগে আশা’র মামা সাঈদুর রহমান বাদী হয়ে গত ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১ তারিখে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী ২০০৩) এর ৭/৩০ ধারায় আশাশুনি থানায় ১৭ নং একটি মামলা দায়ের করে। মামলার অপর ৪ আসামী হলেন, পাপ্পুর পিতা কালাম সানা, মা ছবি বেগম এবংবড়দল গ্রামের হামিদ সানার স্ত্রী রিজু বেগম ও তালা থানার গংগারামপুর গ্রামের টুলু’র স্ত্রী রুবি বেগম।
অপরদিকে পাপ্পু’র পরিবারের দাবী আশা খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ে পড়ে এবং পাপ্পুও খুলনার একটি প্রাইভেট বিশ^বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে। এ সুবাদে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক তৈরী হয়। তারা উভয়েই প্রাপ্ত বয়স্ক। প্রেমের সম্পর্কের কারনে তারা তিন লক্ষ টাকা দেনমোহরে খুলনা থেকে রেজিস্ট্রি বিয়ে করে। অথচ আশা’র মামা হয়রানী করার উদ্দেশ্যে দূর্ভিসন্ধিমূলকভাবে ৮ জনের নামে মামলা করেছে।
পাপ্পু’র পরিবার ও আসামী পক্ষের আইনজীবীদের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, উক্ত মামলায় বুধবার (২৪ মার্চ) আসামীরা বিজ্ঞ আমলী ৮ নং আদালতে (আশাশুনি) স্বেচ্ছায় উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করে। ভিকটিম আশা স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছে বলে সেখানে জানায়। তবে বিজ্ঞ আদালত আসামীদের জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। এতে আসামী পক্ষের আইনজীবীরা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। পরে ভিকটিমের ২২ ধারায় জবানবন্ধি না থাকায় বিজ্ঞ আদালত এদিনই তার জবানবন্ধি গ্রহন করে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।