আব্রাহাম লিংকন, শ্যামনগর থেকে:
সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে মধু আহরণের সময় ভারতের ঝিলে নদীর নওবেঁকি ফোঢ়ন নামক খালে বাঘের আক্রমণের শিকার হয়ে বাড়িতে ফিরে নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে মিথ্যা নাটক সাজালেন ছোট ভাই লিয়াকাত হোসেন। শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের ছোট ভেটখালী গ্রামের মৃত জব্বার আলী গাজীর ছেলে আব্দুল ওয়াজেদ (৪৫) বাঘের আক্রমণের শিকার হয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, জয়া খালী গ্রামের সালাউদ্দিন সাজনি করে সঙ্গীও ২ টি নৌকা, বুলবুলি দালালের মাধ্যমে প্রতি টিপে এক ড্রাম মধু যাহার আনুমানিক বাজার মূল্য ৪০ হাজার টাকা চুক্তি করে ৬ জনকে নিয়ে অবৈধভাবে পার্শ্ববর্তী ভারতের সুন্দরবনে মধু আহরণ করতে যায়। গত ২৪ শে মার্চ তারা বাড়ি থেকে সুন্দরবনে কাঁকড়া আহরণের নাটক সাজিয়ে সুন্দরবনের প্রবেশ করে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায় গত মঙ্গলবার (২৭ শে মার্চ) সকাল আনুমানিক ৯ টার দিকে মধু ছাটা দেওয়ার সময় হঠাৎ পিছন থেকে এসে একটি বাঘ তাকে আক্রমণ করলে, সাথে থাকা আরও পাঁচ জেলে হাক চিৎকার করে পাল্টা বাঘের দিকে আক্রমণ করলে বাঘ ভয়ে আব্দুল ওয়াজেদ কে ছেড়ে দিয়ে চলে যায়।
বুধবার (২৯ মার্চ) রাত্র ১২ টার দিকে ওয়াজেদ কে নিয়ে লোকালয়ে ফিরে আসেন ওয়াজেদের ছোট ভাই লিয়াকত হোসেন সহ অন্য জেলেরা।
আব্দুল ওয়াজেদের ছোট ভাই লিয়াকত হোসেন জানান, সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের পশ্চিম বন বিভাগের কাছিকাটার দারগাঙে কাঁকড়া শিকার করছিলেন। হঠাৎ করেই মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে একটি বাঘ আমার ভাইয়ের উপর হামলে পড়ে। এসময় নৌকায় থাকা গরানের একটি লাঠি নিয়ে আমি বাঘের দিকে এগিয়ে গেলে বাঘ আমার দিকে তাকিয়ে ভাইকে ছেড়ে দিয়ে চলে যায়। পরবর্তীতে আমি আমার ভাইকে উদ্ধার করে লোকালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হই । পাস আছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে লিয়াকাত বলেন, আমরা দুই ভাইয়ের কৈখালি স্টেশন থেকে কাঁকড়ার পাশ কাটা আছে আমরা শহিদুলের কাছ থেকে পাশ কাটছিলাম ।
অন্যদিকে শহিদুল বলেন, আমি ওদের কোন পাস দেই নাই ওদের কাউকে চিনি না ওদের সাথে কখনো আমার যোগাযোগ ও হয়নি। জনমনে প্রশ্ন কেনই বা মিথ্যের আশ্রয় নিচ্ছে লিয়াকাত হোসেন ।
ইতিপূর্বে এই চক্রটি ভারত বাংলাদেশের সুন্দরবনে অবৈধ ভাবে ঢুকে বড়ো একটি মধুর চালান নিয়ে আসছে। সরজমিনে দেখা যায় বাঘে ওয়াজেদের পিঠে, ঘাড়ে ও মাথার সামান্য অংশ আক্রান্ত হয়েছে। তাকে গ্ৰ্যাম্য ডাঃ অমালের কাছ থেকে প্রথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে রেখেই কবিরাজি চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এম কে এম ইকবাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, তাঁরা বলছে তাঁরা ৩ জনে কাঁকড়ার পাশ নিয়ে সুন্দরবনে ঢুকেছে কাকড়া মারতে , কিন্তু আমি দেখছি ওই নামে কোন পাস নাই, তাঁরা সীমান্ত এলাকা দিয়ে ইন্ডিয়ায় ঢুকছে মধু কাটতে গিয়ে ইন্ডিয়াতে বাঘের আক্রমণে আক্রান্ত হয়েছে ।