দীপক মিস্ত্রী, শ্যামনগর থেকে:
সুন্দরবন দস্যুমুক্ত হলেও মুক্ত হয়নি বন বিভাগের দুর্নীতি। কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুমে সরকারি ভাবে সুন্দরবনে কাঁকড়া আহরণে নিষেধাজ্ঞা জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি এ দু মাস। তবে কিছু অসাধু বন কর্মিদের সহযোগিতায় সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থানে চলছে কাঁকড়া শিকার এমনটি অভিযোগ সচেতন মহলের।
স্থানীয়রা জানান, শ্যামনগর কৈখালী ফরেস্ট স্টেশনের সদস্যদের চুক্তিতে সুন্দরবনের কাচিকাটা বন টহল ফাঁড়ীতে কাঁকড়ার নৌকা প্রতি গণে ১হাজার টাকা ও কৈখালী স্টেশনের জন্য ২৫শ টাকা দিয়ে সুন্দরবনে কাঁকড়া আহরণ করছে জেলেরা।
চলতি গণে কৈখালী, রমজান নগর এলাকার ৪৫ টি নৌকা সুন্দরবনে কাঁকড়া শিকার করতে গিয়েছিল। এসমস্ত জেলেদের সাথে বনবিভাগের কিছু অসাধু সদস্যদের মাধ্যমে চুক্তি করে নৌকা বনের ভিতরে পাঠানো হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কৈখালী গেটপাড়া এলাকার এক জেলে বলেন, বুলবুল ও মহসিনের মাধ্যমে আমরা এসব নৌকার চুক্তি দিয়ে কাঁকড়া আহরণের জন্য সুন্দরবনে প্রবেশ করি ।
কৈখালী ফরেস্ট স্টেশনের দালাল নামে খ্যাত শহিদুল বলেন স্টেশন কর্মকর্তার সাথে বুলবুলের সুন্দরবনের সকল চুক্তি সমপ‚র্ণ হয়ে থাকে। যে সকল কাঁকড়ার নৌকাগুলি সুন্দরবনে প্রবেশ করে তাদের একটা তালিকা আমাদের হাতে এসে পৌঁছে। তাদের মধ্যে, রমজান নগরের সোরা গ্রামের বক্সো মোল্লার ছেলে ইউনুচ মোল্লা, ফজেরালী গাইনের ছেলে হযরত আলী, মৃত শহর মোল্লার ছেলে বাবু মোল্লা, গফুর মোল্লার ছেলে মনিরুল মোল্লা, সুরাতালী তরফদারের ছেলে ছামাদ তরফদার। কৈখালী গেট পাড়ার হাফিজুরও সেরাজুল ইসলামের ২টি নৌকা, কৈখালী যাদা গ্রামের নব কুমার এর ৩ টা নৌকা, কৈখালী এলাকার সালাউদ্দিন ও হায়দার মোড়লের ২ টি নৌকা, কালিনঞ্চি গ্রামের মোতালেব ও ফজলু ১ টি নৌকা, এসমস্থ নৌকা প্রতি ৬দিনে ৪৫ শ টাকা নিয়ে থাকে রমজান নগর ইউনিয়নের সোরা গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে মহাসিন ও প‚র্ব কৈখালীর সামাদ গাজীর ছেলে বুলবুলের মাধ্যমে গত ফেব্রুয়ারি ৮ তারিখ দিবাগত রাতে কৈখালী স্টেশনের সদস্যদের কাছে চুক্তি কৃত টাকা দিয়েছে বলে জানা যায়।
এবিষয়ে কৈখালী স্টেশনের ক্যাশিয়ারের নিকট ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ না করে কেটে দিয়েছেন।
চুক্তি না দেওয়া নৌকার মধ্যে জিয়াউর তরফদারের নৌকা কৈখালী পাঁচ নদীর মোহনা থেকে আটক করে কৈখালী স্টেশনের সদস্যরা। সোরা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে মহাসিনের মাধ্যমে ১০হাজার টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়েছে বলে জানান আটককৃতরা।
চুক্তি বিষয়ে কৈখালী স্টেশন কর্মকর্তার কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বুলবুলকে চিনি কিন্তু চুক্তি নেওয়ার কোন তথ্য আমার কাছে নাই। আপনি আমাকে এমধ তথ্য দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আমি এ বিষয়ে খতিয়ে দেখব।