দেবহাটা ব্যুরো: করোনায় বৈশ্বিক দূর্যোগের প্রভাবে ব্যপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে দেবহাটার মৎস্য ঘের ব্যবসায়ীরা। শুরুতে মৎস্য ঘেরে পানি সংকট অপর দিকে করোনার ছোঁবলে বিদেশে বাগদা মাছ রফতানি না করতে পারায় বাগদা মাছের দাম মারাত্মকভাবে পড়ে যায়। ফলে ঘের ব্যবসায়ীরা মাছ বিক্রি করে পূঁজি সঞ্চয় করতে পারিনি। অপর দিকে ঘেরের হারী বৃদ্ধি পাওয়ায় মহা বিপাকে পড়েছে ঘেরসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। বছর শেষে মৎস্য ঘেরের সেঁচামারা শেষে সাদা মাছ বিক্রিকরে কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালায়। কিন্তু সেখানেও বিপত্তি। বাজারের সাদা মাছের দাম না থাকায় ঘের ব্যবসায়ীরা চরম বিপাকে পড়েছে। বেশিকাংশ ঘের বাবসায়ী মনে করে বাগদা-গলদা মাছে পুষিয়ে নিতে না পারলেও সাদামাছে পুষিয়ে নেওয়ার চিন্তা ভাবনা থেকে। বর্ষা মৌসুমে সাদামাছ ছেড়ে বছর শেষে তারা বিক্রি করে পুঁজি পুষিয়ে নেওয়া চেষ্টা করে। কিন্ত করোনায় এখানেও ছোবল মেরেছে। দেবহাটা উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে জানা যায় এবার ৮হাজার ৩শত হেক্টর জমিতে লোনা পানি মৎস্য ঘের ও ৪৭০ হেক্টর জমিতে মিঠা পানির মাছ চাষ করা হচ্ছে। দেবাহাটার বড় বড় মৎস্য বাজার যেমন গাজীরহাট, পারুলিয়া কুলিয়া বাজার ঘুরে দেখা গেছে বড় মাপের ভেটকি কেজি প্রতি বর্তমানে ৩৫০টাকায় বিক্রি হচ্ছে যা আগে বিক্রি হয়েছে ৫৫০টাকা, পার্শি মাছ কেজি প্রতি বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২৫০টাকা যা আগে বিক্রি করা হয়েছে ৩৫০টাকা, টেংরা কেজি প্রতি বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৩৫০টাকা যা আগে বিক্রি হয়েছে ৫০০টাকায়। গ্লাসকাপ কেজিপ্রতি ১৩০টাকা যা আগে বিক্রি হয়েছে ১৭০টাকায়, রুই বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ১৩০ টাকা যা আগে বিক্রি হয়েছে ১৮০ টাকায়, তেলাপিয়া বর্তমানে প্রতিকেজি ৩৫টাকা যা আগে বিক্রি হয়েছে ৬৫ টাকায়। এভাবে প্রতিটি সাদা মাছের দাম নিম্নমুখি। দাম কমে যাওয়ার কারন বিষয়ে দেবহাটা সবচেয়ে বড় মৎস্য আড়ৎ বাজার পারুলিয়া মৎস্য আড়ৎের আহবায়ক আব্দুল কাদের এর কাছে জিজ্ঞিসা করলে তিনি প্রতিবেদকে বলেন- আগে আমাদের মাছ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ট্রাক ভরে ব্যবসায়ীরা নিয়ে যেত। কিন্তু বর্তমানে দাম কমায় দুর দুরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা না আসায় মাছ কেউ কিনতে চাচ্ছে না। ফলে মাছের দাম কমে গেছে। মৎস্য আড়ৎ ব্যবসায়ী ও সাবেক মৎস্য আড়ৎ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রজব আলি মোল্ল্যা বলেন, করোনার কারনে সবদিক থেকে আমাদের ক্ষতি সাধিত হয়েছে। ঘের ব্যবসা এবার মন্দা যাচ্ছে। মাছের দাম না থাকায় ক্ষতির মুখে পড়েছে ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক চাকাকে সচল করার জন্য সাতক্ষীরা সাদা সোনা নামে খ্যাত বাগদা-গলদা চিংড়ী ভুমিকা রাখে। জেলার দেবহাটা উপজেলার মৎস্য চাষিরা টন টন মাছ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে এবং বিদেশে রফতানী করে অর্থনেতিক চাকা সচল করার জন্য কাজ করে থাকে। বর্তমানে করোনায় বেশি অংশ ঘেরব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। যার ফলে অনেক ঘের ব্যবসায়ী এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় প্রবেশ করছে। যার ফলে হুমকির মুখে পড়বে বাগদা-গলদা চিংড়ীর চাষ। সর্বমহল আশাকরে সরকার যদি মাৎস্য চাষীদের বিনাসুদে ঋণের ব্যবস্থা করেন তাহলে আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারে ঘের ব্যবসায়ীরা।
সাদা মাছের দাম কম থাকায় দেবহাটার ঘের ব্যবসায়ীরা হতাশ
পূর্ববর্তী পোস্ট