
নিজস্ব প্রতিবেদক : ডেঙ্গু আমাদের জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার একটি সতর্ক সংকেত। সুন্দর সমাজ ও সুন্দর পরিবেশ গড়তে পরিচ্ছন্নতার বিকল্প নেই। আগামী প্রজন্মের নিরাপদ আবাসস্থল বিনির্মাণে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। সুন্দর পৃথিবী বসবাসের উপযোগী করতে পারলেই আমাদের সব প্রচেষ্টা সার্থক। শুধু ডেঙ্গুর জন্য নয়, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমে স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমিয়ে আনতে হবে। সবখানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা আনলেই ডেঙ্গু কাহিনী শেষ হয়ে যাবে।
শনিবার (১০ আগষ্ট) সকাল সাড়ে ১০টায় শহরের সুলতানপুর বড় বাজারে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা প্রশাসক এস.এম মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক সভা ও বিশুদ্ধ খাদ্য সমাবেশ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাতক্ষীরা-০২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে এসব কথা বলেন ।
এমপি রবি তাঁর বক্তব্যে আরো বলেন, ‘ডেঙ্গু বর্তমানে একটি আতঙ্কের নাম। ডেঙ্গুতে আতঙ্কিত না হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। সেই সাথে বিশুদ্ধ খাদ্য ব্যবস্থাপনা চালু করতে হবে। নিরাপদ খাদ্য নাগরিক অধিকার। যারা খাদ্যে ভেজাল দেয় তারা সমাজের শক্রু। নিজেকে দিয়ে অন্যের বিচার করতে হবে। সাতক্ষীরার সকল মানুষের জন্য বাসযোগ্য ও নিরাপদ জীবন যাপনের লক্ষ্যে দেশ ও জাতির স্বার্থে ডেঙ্গু প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। সমন্বিতভাবে উদ্যোগ নিলে বাংলাদেশের মধ্যে সাতক্ষীরাকে সর্বপ্রথম ডেঙ্গু মুক্ত ঘোষণা করা সম্ভব। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ইমানের অঙ্গ। নিজ নিজ উদ্যোগে বাড়ির আঙিনাসহ অফিস আদালত এবং সকল প্রতিষ্ঠান পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। সেই সাথে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশনা মেনে কাজ করতে হবে। ডেঙ্গুর বংশ বিনাশ’ এই স্লোগান নিয়ে বাসা-বাড়ি কিংবা উন্মুক্ত জলাশয় যেখানেই এডিস মশার প্রজননস্থল পাওয়া যায়, তা ধ্বংস করতে হবে। সাতক্ষীরার কোন কোন এলাকা ডেঙ্গু প্রবণ তা চিহ্নিত করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণেরও পরামর্শ দেন তিনি। ডেঙ্গু প্রতিরোধে তিনি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছার ওপরও গুরত্বা¡রোপ করেন। তিনি আরো বলেন, কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে ফগার মেশিনের সাহায্যে ধোঁয়া প্রয়োগ কার্যকরী হলেও এডিস মশা দমনে এর কার্যকারিতা কম। এডিস মশা দমনে প্রজননস্থল নির্মূল করা এবং জনসচেতনতা তৈরি করারও বিকল্প নেই।’
জেলা প্রশাসক মোস্তফা কামাল তাঁর বক্তব্যে বলেন, সাতক্ষীরার মানুষ ডেঙ্গু প্রতিরোধে আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে। ডেঙ্গু যাতে কোনভাবে আর ছড়িয়ে না পড়তে পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। নতুন ও আগামী প্রজন্মকে আলোকিত পরিবেশ উপহার দিতে ময়লা-আবর্জনা সরিয়ে জীবন-মানের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। সকলের প্রচেষ্টায় শীঘ্রই ডেঙ্গু মুক্ত সাতক্ষীরা উপহার দেবো। নিজে ভাল থাকবো, অপরকে ভালো রাখব এই হোক আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকার। বিশুদ্ধ খাবার শরীর সূস্থ রাখে। খাদ্যে ভেজাল দিয়ে আমরা আমাদের নিজেদের শেষ করছি। খাদ্যে ভেজাল কারীদেও ধরিয়ে দিতে আপনারা সহযোগিতা করুন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, সাতক্ষীরা পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতি, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ি উপপরিচালক অরবিন্দ বিশ^াস, পৌরসভার প্যানেল মেয়র কাজী ফিরোজ হাসান, মহিলা কাউন্সিলর অনিমা রাণী মন্ডল প্রমুখ। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক শেখ নুরুল হক, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. জাকির হোসেন, জেলা তথ্য অফিসার মো. মোজাম্মেল হক, দৈনিক দক্ষিণের মশাল পত্রিকার সম্পাদক অধ্যক্ষ আশেক-ই এলাহী, পৌর ০৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ কামরুল হক চঞ্চল, সাধারণ সম্পাদক শেখ মুসফিকুর রহমান মিল্টন, শিক্ষক ও কবি সাহিত্যিক পল্টু বাসার, পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার আরিফ হাসান প্রিন্স, সহ-দপ্তর সম্পাদক জিয়াউর বিন সেলিম যাদু, সদর উপজেলা রাইচ মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মশিউর রহমান বাবু, জেলা হোটেল রেস্তোরা মালিক সমিতির সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. লুৎফর রহমান, সুলতানপুর কাঁচা বাজার সমিতির সদস্য মো. আব্দুর রহিম বাবু প্রমুখ। আলোচনা সভা শেষে সুলতানপুর বড় বাজারে ব্যবসায়ীদের মাঝে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করেন সদর এমপি ও জেলা প্রশাসক। এ সময় বাজার ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।