
নজরুল ইসলাম, তালা থেকে: ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেয়ার লক্ষ্যে সাজানো, উদ্দেশ্যপ্রণীত, মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হয় চেয়ারম্যান এম মফিদুল হক লিটুসহ ৩৪ জনের নামে। মিথ্যা মামলা নিয়ে ইউনিয়নব্যাপি গভীর ক্ষোভ প্রকাশসহ তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সাধারণ ভোটারা।
এদিকে মিথ্যা মামলা হতে হাইকোর্টের নিয়মিত বেঞ্চ থেকে ১১ জন ও সাতক্ষীরা জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত হতে ২৩ জন জামিন গ্রহণ করেছেন বলে জানা গেছে।
প্রকাশ, সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রবিউল ইসলাম মুক্তি যুদ্ধোদেহী মনোভাব নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। তারই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (২৬ মার্চ) গভীর রাতে কে বা কারা তার কানাইদিয়ায় নৌকা প্রতিকের নির্বাচনী কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনার ৩ দিন পর রবিবার (২৮ মার্চ) মুক্তির সর্মথক কানাইদিয়া গ্রামের শেখ রুহুল আমিন’র ছেলে শেখ হারুণ-অর-রশিদ বাদী হয়ে চেয়ারম্যান মফিদুল হক লিটুকে প্রধান আসামী করে ৩৪ জনের নামে তালা থানায় মামলা দায়ের করেন। যার নং ০৯/২১।
সরজমিনে ঘটনার বিবরণে জানাযায়, ঘটনার দিন সন্ধ্যারও পরে চেয়ারম্যান লিটু নির্বাচনী প্রচারের জন্য কর্মী সমর্থকদের নিয়ে ওই এলাকায় যান। এ সময় নৌকা প্রতিকের কর্মী সমর্থকদের মারমুখী আচরণের কারণে তিনি দ্রæত এলাকা ত্যাগ করেন। এর পরপরই নৌকা প্রতিকের নির্বাচনী অফিসে আগুন জ¦লতে দেখেন এলাকাবাসী। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা কাউকে আগুন লাগাতে দেখেননি বলে জানান। এসময় কৃঞ্চকাটি গ্রামের মৃত পরশ গাজীর ছেলে নুর ইসলাম (৫৫) চেয়ারম্যানকে খুঁজতে গেলে তাকে আটকে পুলিশে দেয় নৌকা প্রতিকের কর্মীরা।
এদিকে ঘটনার আগের দিন রাতে অর্থাৎ বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) নৌকা প্রতিকের মটরসাইকেল শো-ডাউন থেকে চেয়ারম্যান লিটু’র কর্মী সমর্থকদের মারপিট করে ৭ জনকে আহত করা হয়। স্থানীয় মানুষ তাদের উদ্ধার করে তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তী করেন। মারপিটের ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে এলাকাবাসী জানান।
মিথ্যা মামলাটির কারনে বুধবার (৩১ মার্চ) সাতক্ষীরা জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে ২৩ জনের জামিন মজ্ঞুর করেন আদালত।এরপর মামলার প্রধান আসাসীসহ ১১ জন জামিনের জন্য হাইকোর্টের নিয়মিত বেঞ্চে আবেদন করলে আদালত তাদেরও জামিনে মুক্তি দেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা জানান,জালালপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম মুক্তি গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতিক নৌকা পান। সেই ভোটে লিটু ৫৬৩৮,মুক্তি ৪৪৮২,গপ্ফার ৪২৯৮ পান। এর আগে ১ম বার জাহাজ প্রতিক নিয়ে ১৬৬৪ পেয়ে তৃতীয় হন মুক্তি,৫৫৩৬ ভোট পান লিটু, গফফার পান ৫০৩৬।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান মফিদুল হক লিটু বলেন, আমাকে নির্বাচন থেকে সরানোর জন্য আমার কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা চালানো হচ্ছে, দেয়া হচ্ছে মিথ্যা মামলা। এতে প্রতিপক্ষ খুব বেশী লাভবান হবে বলে মনে হয় না। জনগন আমার সাথে আছে। মিথ্যা হামলা মামলা দিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া যাবে না। নির্বাচনে পাশ করতে হলে লাগবে জনগনের ভালোবাসা, ষড়যন্ত্র করে পাশ করা যায় না। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, যে এলাকায় এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে সে এলাকায় ৯৫ ভাগ মানুষ আমাকে ভোট দেয় তাহলে আমি কেন নৌকার অফিসে আগুন দিতে যাব? যে ঘটনায় আমাকে আসামী করা হয়েছে তার কিঞ্চিত পরিমান সত্য নয়। শুধু রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলে জানান তিনি।এই ইউনিয়নের মানুষ ভালোবেসে আমাকে ২ বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছেন। আমার জানামতে, ইউনিয়নবাসীর আমানত খেয়ানত করিনি। সে কারণে এবারও তারা আমাকেই নির্বাচিত করবেন এটা আমার বিশ^াস। তার বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র ইউনিয়নবাসী মোকাবেলা করে আবারও তাকে চেয়ারম্যান করবেন বলে তিনি জানান।