আব্রাহাম লিংকন, শ্যামনগর: শ্যামনগরে বিসিআইসি ডিলারের মাধ্যমেই চলছে লাইসেন্স বিহীন অবৈধ কৃষি বিতানগুলো। অভিযান পরিচালনায় ব্যার্থ কৃষি অফিস। দৈনিক সাতনদী পত্রিকাসহ একাধিক সংবাদপত্রে দফায় দফায় সংবাদ প্রকাশের পরও নিশ্চুপ কৃষি অফিস। ফলে, প্রতারণার শিকার হচ্ছে কৃষকরা। বিষের লাইসেন্সে সাদা সার চড়া দামে বিক্রি করলেও মাথা ব্যাথা নেই সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের। সরকারের দেওয়া দাম ডিলারের মাধ্যমে কৃষকদের কাছে ইউরিয়া সার ২৭ টাকা, ডিএপি ২২ টাকা, টিএসপি ২০ টাকা, এমওপি ২২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়ার কথা থাকলেও কৃষক পর্যায়ে দোকানীরা প্রতি কেজি ইউরিয়ার দাম পড়ছে ৩০ টাকা, ডিএপি ২৭ টাকা, টিএসপি ৩৬ টাকা ও এমওপি দাম হবে প্রতি কেজি ২৮ টাকা। অন্যদিকে অভিযোগ রয়েছে উপজেলার মাত্র ৩ জন মিলে চালাচ্ছে ১২ টি বিসিআইসি ডিলার লাইসেন্স। যার কারনে সার বেশি বিক্রি করার জন্য ইচ্ছে মত পরিমাণ যত্রতত্র ব্যাক্তির কাছে বিক্রি করছে ডিলাররা। উপজেলায় ১২ জন বিসিআইসি ডিলারের মাধ্যমে ১০৮ জন সাব-ডিলার থাকার কথা। নিয়ম অনুসারে ১০৮ জন সাব-ডিলারের কাছে ছাড়া অতিরিক্ত সার বিক্রি করতে পারবে না। কিন্তু নিয়মকে অনিয়ম করে যত্রতত্র ব্যাক্তির কাছে বিক্রি করছে সার। উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় ব্যাঙের ছাতার মত ছেয়ে গেছে অবৈধ কৃষি বিতান। আরও অভিযোগ রয়েছে, উপ-সহকারী কৃষি অফিসারদের ম্যানেজ করে চলছে এই সব দোকান। প্রতিটি ইউনিয়নে ২ জন করে উপ-সহকারী কৃষি অফিসারের সাথে সখ্যতা করে ডিলার ও দোকানী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কৃষকদের ঠকানো হচ্ছে বলে দাবী করছেন সচেতন মহল। লাইসেন্স বিহীন দোকানে নিন্ম মানের সার ও কীটনাশক বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখাগেছে, কিছু কিছু দোকানী অন্যের লাইসেন্স ভাড়া বা ক্রয় করে দোকান পরিচালনা করছে। আবার অনেকেই বিষের লাইসেন্স নিয়ে সার ও সারের লাইসেন্স নিয়ে বিষয় বিক্রি করছে। ২০১৮ সালের আইনের দ্বিতীয় অধ্যায়ের ৯নং স্মারকে বলা হয়েছে “কোনো ব্যক্তি তাহার লাইসেন্স অন্য কোনো ব্যক্তির নিকট হস্তান্তর করিতে পারিবেন না” এবং ১০নং স্মারকে বলা হয়েছে “কোনো ব্যক্তি লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করিলে, মহাপরিচালক বা তদকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারী, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে লাইসেন্স স্থগিত বা বাতিল করিতে পারিবেন ” এবং পঞ্চম অধ্যায়ের ১ (ক) স্মারকে বলা হয়েছে ধারা ৫, ৬ ও ৭ এর অধীন লাইসেন্স গ্রহণ ব্যতিত কার্য পরিচালনার অপরাধের জন্য নির্ধারিত দণ্ডের দ্বিগুণ দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন। কৃষকরা জানিয়েছেন যে, বাজারে নিন্মমানের সার বিষের কারনে তারা ভালো সার-বিষ নির্ণয় করতে অক্ষম। এতে করে বার বার সার-বিষ প্রয়োগ করে সর্বশান্ত হচ্ছে তারা। অন্যদিকে নিশ্চুপ থাকছে দায়িত্ব প্রাপ্ত বিসিআইসি। কারণ তারা বিসিআইসি ভুক্ত না। অবৈধভাবে কৃষি বিতান পরিচালনাকারী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, ইউনিয়ন উপ-সহকারী কর্মকর্তা ও ডিলারদের সাথে যোগাযোগে এই দোকানীগুলো পরিচালনা হয়ে থাকে। বৈধ ব্যবসায়ীরা জানান, আমরা বিসিআইসির মাধ্যমে সাব-ডিলার নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছি কিন্তু আমরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি অবৈধ কৃষি বিতানের জন্য। অন্যদিকে ডিলার মূল্য বেশি ধরে তালিকা দিচ্ছে কমে। তারা নিম্নমানের সার-বিষ কম দামে বিক্রির ফলে কৃষকরা ও আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার নাজমুল হুদা বলেন, প্রতিনিয়ত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
শ্যামনগরে বিসিআইসি ডিলারের মাধ্যমেই চলছে অবৈধ কৃষি বিতান
পূর্ববর্তী পোস্ট