
আব্রাহাম লিংকন, শ্যামনগর থেকে: ক্যান্সারাক্রান্ত রেহেনা বেগম স্বামীর বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়ে প্রতিবন্ধী ভাইয়ের বাড়িতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ক্যান্সার হওয়ায় তার স্বামী এখন আর বাড়িতে নিচ্ছেন না। বহন করছেন না তার চিকিৎসার ব্যয় ভার।
রেহেনা বেগম সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ভেটখালী গ্রামের মেয়ে। তার পিতার নাম আব্দুস সাত্তার গাজী। পিতা অনেক আগেই মারা গেছেন। অসহায় রেহেনা বেগমের সাত বছর আগে বিয়ে হয় তার পার্শ্ববর্তী উপজেলা কালীগঞ্জের আড়ংগাছা গ্রামে। স্বামীর নাম সিরাজুল ইসলাম। সিরাজুল একজন কাপড় ব্যবসায়ী। ব্যবসা করেন নুরনগর বাজারে। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নাম মায়ের দোয়া ভাই ভাই বস্ত্রালয়।
বিয়ের পর রেহেনা বেগম সুখে-শান্তিতেই স্বামীর গৃহে বসবাস করছিলেন। তাদের রোহান নামে একটি পুত্র সন্তান হয়। বর্তমান তার বয়স ৪ বছর। রেহেনার পেটে টিউমার হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার স্বামী সিরাজুল ইসলাম তাকে তার প্রতিবন্ধী ভাইয়ের বাড়িতে রেখে যান। প্রায় দেড় বছর আগে তার পেটে টিউমার ধরা পড়ে। তারপর প্রায় এক বছর ধরে চিকিৎসা হয়ে আসছিলেন। ডাক্তার বলেছেন টিউমার থেকে তার ক্যান্সার হয়েছে। এই ক্যান্সার আক্রান্ত রেহেনা বেগম তার প্রতিবন্ধী ভাই রফিকুল ইসলামের বাড়িতে এখন বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। তার চার বছরের ছেলে রোহানকে নিয়ে প্রতিবন্ধী ভাইয়ের বাড়িতে বসবাস করলেও স্বামী সিরাজুল ইসলাম এখন আর কোনো খোঁজখবর নেন না। চিকিৎসা খরচ দেন না। এমনকি তার শিশু সন্তানকেও কোন ভরণপোষণের খরচ দেন না।
প্রতিবন্ধী ভাই রফিকুল ইসলামের বাড়িতে শিশুপুত্র রোহানকে নিয়ে থাকলেও তাদের মাথা গোঁজার মত কোন ঠাই নেই। বৃষ্টি হলেই ঘরের চাল দিয়ে বৃষ্টি পড়ে। বৃষ্টির সময় রাত কাটে বসে থেকে। প্রতিবন্ধী ভাই রফিকুল ইসলামের ভাতার অর্থ দিয়ে কোনমতে অর্ধাহারে-অনাহারে তাদের দিন কেটে যায়। অক্ষম ভাইয়ের ওপর নির্ভরশীল এই রেহেনা বেগম এখন স্বামীর ঘরে ফিরে যেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। তিনি শ্যামনগর থানায় সুবিচার চেয়ে একটি অভিযোগও করেছেন।