
বাণিজ্য ডেস্ক:
রমজান মাসে পণ্যের দাম না বাড়াতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। আর মন্ত্রীর এ আহ্বানে ব্যবসায়ীরা সম্মত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
রোববার (১৯ মার্চ) সচিবালয়ে মন্ত্রণালযয়ের সভাকক্ষে দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের ষষ্ঠ সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাদের বলেছি, কোনোভাবেই রোজার মাসে দাম বাড়ানো যাবে না। দরকার হলে রোজার পরে তাদের চাওয়া-পাওয়া নিয়ে আরেক দফা বসা হবে। ব্যবসায়ীরা এ প্রস্তাবে সম্মত হয়েছেন।’
মন্ত্রণালয় দাম নির্ধারণ করে দিলেও মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কোনো মিল পাওয়া যায় না, এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘একটু আগেই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা হয়েছে। প্রয়োজনের থেকেও দেড়গুণ বেশি পণ্য মজুত রয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। এছাড়া পাইপলাইনেও পণ্য রয়েছে। ফলে কোনোভাবেই ঘাটতি বা সংকট হবে না।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘সাংবাদিকরা বাজারে গড়মিল পাচ্ছেন, এটি ঠিক। দেখা যাচ্ছে, কারওয়ান বাজারে একটি পণ্য যে দামে বিক্রি হচ্ছে, উত্তরার বাজারে সেই পণ্য ২০ টাকা বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। এখন বাড়তি দামে বিক্রি হওয়া পণ্য নিয়ে খবর প্রকাশ করলে বাজার কারসাজিকারীরা একটি সুযোগ পাবে। অন্যান্য বাজারেও পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেবে তারা। এক্ষেত্রে সাংবাদিকদের উচিত বাজার নিয়ে ইতিবাচক খবর প্রকাশ করা।’
‘বাজারে যে চিনি-তেল আছে, তার দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। এছাড়া যে দামে আমদানি করা হচ্ছে, তার চেয়েও কম দামে ছোলা পাওয়া যাবে। একই সঙ্গে বাজারে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ আছে। কৃষক যাতে ভালো দাম পায় তাই ধীরগতিতে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। তবে বাজার পর্যবেক্ষণও চালু আছে,’ যোগ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেলে আমদানি কার্যক্রম পুনরায় শুরু করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
সড়কে চাঁদাবাজি কমানো প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘শাক-সবজির বাজারে চাঁদাবাজি বন্ধে নজরদারি অব্যাহত আছে। জেলা পর্যায়ে মন্ত্রণালয় থেকে ডিসিদের বলা আছে, মহাসড়কে খাদ্যসামগ্রী বহনকারী গাড়িতে যাতে কোনোভাবেই চাঁদাবাজি না হয়। সহজেই যাতে জেলা শহর থেকে ঢাকায় পণ্য আসতে পারে সে লক্ষ্যে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়া বাজারে সয়াবিন তেলের কোনো ঘাটতি নেই। তাই রোজার মাসে তেলের দাম বাড়ারও কোনো আশঙ্কা নেই।’
আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমলেও দেশের বাজারে কেন দাম কমছে না- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমে গেছে, এ কথা সত্য। কিন্তু দুর্ভাগ্য, তেলের দাম কমলেও ডলারের দাম বেড়ে গেছে। যদি তেলের দামের পাশাপাশি ডলারের দামও কমতো তাহলে নতুন করে তেলের মূল্য নির্ধারণ করা যেত।’
মুরগির দাম নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এটি সরাসরি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় পড়ে না। তারপরও যেহেতু আমাদের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে, আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে বলবো।’
এছাড়া ভোক্তাদের উদ্দেশে টিপু মুনশি বলেন, ‘তাড়াহুড়ো করে একবারে অনেক বেশি পণ্য কিনলে বাজারের সরবরাহ শৃঙ্খলে চাপ সৃষ্টি হয়। ভোক্তাদের উচিত যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই পণ্য কেনা। বাজারে পণ্যের সংকট দেখা দেবে না, ভোক্তাদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’