
মনিরামপুর (যশোর) প্রতিবেদক: মনিরামপুর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. অনুপ কুমার বসু। করোনাকালীন গত বছর থেকে নিজ দপ্তরের কাজের বাইরে অতিরিক্ত কাজ করছেন করোনা ফোকাল পারসন হিসেবে। শুরু থেকে ঝুঁকি নিয়ে সন্দেহভাজন রোগীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহ, আক্রান্ত বাড়ি লকডাউন করা, আক্রান্ত রোগীদের সার্বক্ষণিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া, হাসপাতাল থেকে সংগ্রহ করা নমুনা সিভিল সার্জন অফিসে পাঠানো, আগত ফলাফল আক্রান্ত দের সরবরাহ করা, প্রশাসনের সাথে করোনাকালীন করণীয় সভায় যোগদান, করোনা সচেতনতামূলক প্রচারণা, সাধারণ মানুষের মাঝে মাস্ক বিতরণ ও গণমাধ্যম কর্মীদের ব্রিফিং সবই করেছেন তিনি।
বিপদ জেনেও ঝুঁকি নিয় গেল একমাস ধরে মনিরামপুর হাসপাতালে করোনা ইউনিটে ভর্তি রোগীদের বেড টু বেড চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন ডা. অনুপ।
নিরলস করোনা নিয়ে কাজ করা মানুষটি নিজেই এখন ঝুঁকির মধ্যে। মঙ্গলবার রেপিড টেস্টে তাঁর দেহে করোনা ভাইরাস ধরা পড়েছে। এরপর থেকে গৃহবন্দি তিনি। স্ত্রী সন্তানদের থেকে রয়েছেন আলাদা।
কয়েকদিন টানা করোনারোগীদের সেবা দিয়ে গত সোমবার থেকে অসুস্থবোধ করেন ডা. অনুপ। আক্রান্ত হন জ্বর,সর্দি কাশিতে। এখন জ্বর না থাকলেও পুরো শরীরে ব্যাথা অনুভব করছেন তিনি। মাঝে মাঝে হচ্ছে কাশি।
নিজে আক্রান্ত হলেও পুরোপুরি রেস্টে যেতে পারছেন না ডা. বসু। সিভিল সার্জন অফিস থেকে ফোকাল পারসন হিসেবে তার মোবাইল নম্বর দেওয়া থাকায় অনবরত কল করছেন রোগীর স্বজনরা। মঙ্গলবার থেকে বুধবার দুপুরে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শতাধিক জনের সাথে কথা বলতে হয়েছে তাকে।
বুধবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় এই প্রতিবেদককে মোবাইল ফোনে এমনটি জানিয়েছেন ডা. বসু।
ডা. বসু বলেন, মনিরামপুর হাসপাতালে সন্দেহভাজনসহ ১২ জন করোনা ইউনিটে ভর্তি আছেন। এছাড়া বাড়িতে আইসোলেশনে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১৯১ জন। নিয়মিত এসব রোগীদের খোঁজখবর রাখতে হচ্ছে। তাদের চিকিৎসা সংক্রান্ত পরামর্শ দিতে হচ্ছে। মনিরামপুর হাসপাতালে ভাল সেবার কথা শুনে বাইরের অনেক রোগী এখানে ভর্তি হচ্ছেন।
তিনি বলেন, করোনা ইউনিটে ভর্তি রোগীদের নিয়মিত রাউন্ড দিতে হয়েছে। সোমবার একটা রোগী ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়ার সময় নিজে অসুস্থবোধ করি। এরপর দ্রুত কেশবপুরের বাসায় চলে আসি। এখানে নিজে চিকিৎসা নিচ্ছি। পাশাপাশি মনিরামপুরের ২০০ রোগীকে মোবাইলে চিকিৎসা দিচ্ছি। এখন জ্বর নেই। হালকা কাশি হচ্ছে।
সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন ডা. বসু।