আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য টিকা উদ্ভাবনের লড়াইয়ে মার্কিন কোম্পানি ফাইজারের মতো মডার্নাও সামনের সারিতে রয়েছে। এ বছর ডিসেম্বরের মধ্যেই মডার্না টিকা আনতে পারে এমন সম্ভাবনার কথা শোনা যাচ্ছে। এবার টিকার সম্ভাব্য দাম কত হতে পারে তা জানালো কোম্পানিটি। প্রাথমিকভাবে যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে তা পরে কমানো হতে পারে বলেও দাবি করা হয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ভারতে অক্সফোর্ডের টিকার দুটি ডোজের দাম হাজার রুপির মধ্যে থাকবে বলেই ঘোষণা করেছেন সেরাম ইনস্টিটিউটের কর্ণধার আদর পুনাওয়ালা। সাধারণ মানুষের কাছে যাতে টিকা পৌঁছতে পারে সেভাবেই দাম ঠিক করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। ফাইজার এখনও টিকার সম্ভাব্য দাম সামনে আনেনি। তবে ডিসেম্বরের মধ্যেই ফাইজারের টিকার দাম ঘোষণা করে হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন সংস্থার প্রধান অ্যালবার্ট বোরলা।
মডার্নার সিইও স্টিফেন ব্যানসেল জানিয়েছেন, করোনা টিকার একটি ডোজের দাম পড়বে ২৫ থেকে ৩৭ মার্কিন ডলার, অর্থাৎ বাংলাদেশি টাকায় ২ হাজার ১০০ থেকে ৩ হাজার ১০০ টাকার মধ্যে।
ব্যানসেল আরও বলেছেন, ইউরোপীয় দেশগুলো মডার্নার টিকা কেনার জন্য প্রস্তাব পাঠিয়ে রেখেছে। টিকার দাম নিয়ে আলোচনা চলছে ইউরোপিয়ান কমিশনের সঙ্গে। তাদের পক্ষ থেকে টিকার ডোজের দাম ২৫ ডলারের নিচে রাখতে বলা হয়েছে।
মডার্নার দাবি, তাদের টিকা ৯৪ শতাংশ কার্যকর। তৃতীয় পর্বের চূড়ান্ত ট্রায়ালের ফলাফলের ভিত্তিতে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ হাজারের বেশি জনকে টিকার ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবকদের শরীরে টিকার ডোজ অ্যান্টিবডি তৈরি করেছে। ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের শরীরেও টিকার ডোজে পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে এমনও দেখা গেছে, কম বয়সীদের থেকেও কয়েকজন প্রবীণ স্বেচ্ছাসেবকের শরীরে ভাইরাস প্রতিরোধী অ্যান্টিবডির সংখ্যা অনেক বেশি। যার অর্থ হলো, শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ গড়ে উঠেছে বয়স্কদের মধ্যেও। টিকা ট্রায়ালের যা অন্যতম বড় ইতিবাচক দিক।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকসিয়াস ডিজিজের ডিরেক্টর এবং হোয়াইট হাউজের প্রধান স্বাস্থ্য উপদেষ্টা এপিডেমোলজিস্ট অ্যান্থনি ফাউচির তত্ত্বাবধানে এমআরএনএ ভ্যাকসিন তৈরি করেছে মডার্না। এই গবেষণায় রয়েছেন এনআইএইচের অধীনস্থ ভ্যাকসিন রিসার্চ সেন্টারের বিজ্ঞানীরা। সুইজারল্যান্ডের অন্যতম বড় ভ্যাকসিন ও ওষুধ নির্মাতা সংস্থা লোনজা গ্রুপ এজির সঙ্গে ১০ বছরের চুক্তিও হয়েছে মডার্নার।
সিইও স্টিফেন জানিয়েছেন, এ বছরের শেষেই টিকার ২-৫ কোটি ডোজ চলে আসতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে। আগামী বছর আরও ৩০ কোটি ডোজ নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
মডার্নার পক্ষ থেকে টিকার সাফল্য ঘোষণার পরেই ৫০ লাখ ডোজের জন্য প্রস্তাব পাঠিয়ে দিয়েছে যুক্তরাজ্য। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক বলেছেন, প্রাথমিক পর্যায়ে ৫০ লাখ ডোজের জন্য অর্ডার দেওয়া হয়েছে। এর আগে ফাইজারের টিকার জন্য চুক্তি করেছিল ব্রিটিশ সরকার। হ্যানকক আরও বলেছেন, ফাইজারের টিকার ৩৫ লাখ ডোজের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। আরও ৬টি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির টিকাও কিনবে ব্রিটেন।