
নিজস্ব প্রতিবেদক: বড় ভাই শাহজাহান আলীর স্থলাভিষিক্ত হয়ে আশাশুনি আলিয়া মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হয়েছেন ছোট ভাই এড. শহিদুল ইসলাম পিন্টু। বড় ভাই এম. শাহজাহান আলী ১০ বছর যাবৎ আশাশুনি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ১০ বছর আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক ছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি স্ট্রোকজনিত কারনে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে জননেত্রী শেখ হাসিনা তার শারিরীক অবস্থার খোঁজ খবর নেন ও চিকিৎসা সহায়তা দেন। তিনি দুই মাস ভারতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শারিরীকভাবে কিছুটা সুস্থ্য হলেও চোখের আলো আর ফিরে পাননি। এ সময়ে অন্ধ অবস্থায়ই তিনি দুই মেয়াদে আশাশুনি আলিয়া মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
চলতি মার্চ মাসে তার স্থলাভিষিক্ত হয়ে আশাশুনি মাদ্রাসার সভাপতি মনোনীত হয়েছেন তারই সহোদর এড. শহিদুল ইসলাম পিন্টু।
এড. পিন্টু ১০ বছর আইনী প্রাকটিস করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি জেলা আইনজীবী সমিতিরি ১ম সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বি সকল প্রার্থীদের মধ্যে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ১৯৯৭ সালে তিনি উকিল বারের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি সাতক্ষীরা জজ কোর্টের একজন স্বনামধন্য ও সিনিয়র আইনজীবী হিসেবে কর্মরত আছেন।
দীর্ঘ ১০ বছর আইনী প্রাকটিস এর পর বড় ভাইয়ের অসুস্থতার কারনে দলীয় নেতা কর্মীদের চাওয়ায় ২০০৪ সালে দলীয় কাউন্সিলে বিপুল ভোটে আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০৪ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত একটানা দীর্ঘ ১৬ বছর দলীয় এই পদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। বর্তমানে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন। এছাড়া ২০০৩ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সুনামের সাথে আশাশুনি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্বপালন করেছেন।
একই সময়ে ২০০৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আশাশুনি কেন্দ্রীয় ঈদগাহ কমিটির সেক্রেটারী হিসেবে এবং ২০১৯ সালে থেকে অদ্যবধি পর্যন্ত এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এই সময়ে তিনি উক্ত ঈদগাহের জলাবদ্ধতা নিরসন করে ঈদগাহে মাটি ভরাট ও মেঝে পাকাকরণ এবং এর একটি সুন্দর মিনার ও গেইট নির্মাণ করেছেন। সর্বোপরি তার নের্তৃত্বে ঈদগাহকে মুসলমানদের ঈদের নামাজ আদায়ের উপযোগী করা হয়েছে।
বড় ভাইয়ের স্থলাভিষিক্ত হয়ে আশাশুনি আলিয়া মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হওয়া ছোট ভাই এড. শহিদুল ইসলাম পিন্টু বলেন, আশাশুনি আলিয়া মাদ্রাসা উপজেলার একটি ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখানে বাংলাদেশ মাদ্রাসা বোর্ডের এবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষা, দাখিল পরীক্ষা, আলিম পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এইচ এস সি (বিএম) পরীক্ষার ভেন্যু কেন্দ্র হিসেবে এটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এই মাদ্রাসার লেখাপড়ার মান ও পরীক্ষার ফলাফলও সন্তোষজনক।
তিনি বলেন, করোনা মহামারীর কারণে দীর্ঘ এক বছর যাবৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। তাই আমি আশাশুনি আলিয়া মাদ্রাসার সভাপতি হওয়ার পর এই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ছাত্রীদের লেখাপড়ার ধরা অব্যহত রাখা ও মাদ্রাসার অবকাঠামো সহ এর সার্বিক উন্নয়নের জন্য বিশকিছু কর্মপরিকল্পনা গ্রহন করেছি। পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে অন লাইনের মাধ্যমে ক্লাস পরিচালনা নিশ্চিত করা, শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার বিষয়ে উৎসাহ প্রদান ও তত্ত্বাবধান করার জন্য প্রত্যেক অভিভাবকের বাড়ীতে প্রতি সপ্তাহে চিঠি প্রেরণ, অভিভাবকদের সাথে মতবিনিময়, মাদ্রাসা বোর্ডের নির্দেশনার সাথে সমন্বয় রেখে বাড়ীতে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার কাজ দেয়া ও তার ফিডব্যাক নেয়া, শিক্ষকদের অধিক দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা এবং মাদ্রাসার অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা। সর্বোপরি মাদ্রাসার পরিবেশ সুন্দর করা, লেখাপড়ার মান আরও উন্নত করা ও পরীক্ষার ফলাফল আরও ভালো করা।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনি (এড. শহিদুল ইসলাম পিন্টু) আবারও চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে আগ্রহী। বিগত দিনে তার আমলে এ ইউনিয়নের রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা, মসজিদ-মন্দির এর অনেক উন্নয়ন হয়েছে। ১৪ বছর যাবৎ এ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে দল-মতের উর্দ্ধে উঠে গরীব দুঃখী মেহনতী মানুষের সেবা করেছেন তিনি। যার ফলশ্রুতিতে সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তার পক্ষে গনজোয়র পরীলক্ষিত হয়। ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে তিনি আশাশুনি সদর ইউনিয়নে জননেত্রী শেখ হাসিনা মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। যেহেতু এবারও তিনি ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার করতে ইচ্ছুক সেহেতু এবারও যদি তিনি নৌকা প্রতীক পান তাহলে তার ব্যক্তিগত ক্লিন ইমেজ, পারিবারিক ঐতিহ্য ও দক্ষতা সহ বহুবিধ পজিটিভ কারনে তার বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে করছেন ইউনিয়নবাসী।