
বিশেষ প্রতিবেদক, তালা: তালায় সদরের ইউপি চেয়ারম্যান সরদার জাকির হোসেনের নির্দেশে হতদরিদ্রের খাদ্য সহায়তা ১৫০০ কার্ড জোর পূর্বক কেড়ে নিয়েছে তার নিজ কর্মীগন এবং গ্রাম পুলিশ, এমন অভিযোগের ভিত্তিতে বহুল প্রচলিত দৈনিক সাতনদী পত্রিকার সংবাদটি লিড হিসেবে প্রকাশ করা হয়। সংবাদ প্রকাশের পরে টনক নড়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।
প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য সহায়তা প্রকল্পের প্রায় এক হাজার পাঁচ শত বেশি পরিবারের চাউল সুকৌশলে আত্মসাৎ করে নিজের স্বার্থ হাসিল করেছেন। উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে তালা উপজেলা ভারপ্রাপ্ত ইউএনও (এ্যাসিল্যান্ড) এসএম তারেক সুলতান বিষয়টি আমলে নিয়ে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করার জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন, তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন ও তালা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ওবায়দুল হক ও তালা উপজেলা সমবায় অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম। তদন্ত কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক গোপাল চন্দ্র দাশ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ সহ কয়েক জন মোবাইল ফোন মারফত জানিয়েছেন তালা সদরের চেয়ারম্যান এর পক্ষ থেকে ১০ টাকা চাউল এর কার্ড কেড়ে নেওয়ার বিষয়ে। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তালা উপজেলা ভারপ্রাপ্ত ইউএনও (এ্যাসিল্যান্ড) তারেক সুলতান ইতিমধ্যে তিনি সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। ৭ কার্য দিবসের মধ্য তদন্ত শেষ করে রিপোট প্রদান করতে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। তদন্ত শেষে এই বিষয়ে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
সরকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে,”শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ”এই প্রতিশ্রæতি কে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সারাদেশ ব্যাপী এই খাদ্য সহয়তা প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এই প্রকল্পটি চালু করেন।এই প্রকল্পের আওয়াতায় অসহায় পরিবারের মাঝে খাদ্য বিতরনের জন্য উপজেলার ইউএনও খাদ্য অধিদপ্তরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং বলা আছে স্থানীয় সরকার যেন সহায়তা প্রদান করেন এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করার জন্য। সুতরাং চাউল কে পাবে আর না পাবে এটি নিশ্চিত করার জন্য ইউপি চেয়ারম্যান কেউ না।
অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, তালা সদরের বিতর্কিত নির্বাচনের চেয়ারম্যান সরদার জাকির হোসেন এর আপন ভাই হলো এই চাউল প্রদানের ডিলার। কার্ড গুলো ব্যবহার করে নিজেরা টিপ স্বাক্ষর দিয়ে অবৈধ ভাবে চাউল উত্তালন করে আত্মসাৎ করে নেওয়া সহ অসহায় সাধারণ মানুষের হক হতে বঞ্চিত করার চিন্তাভাবনা করছেন।
অসহায় মানুষের আকুতিতে কোন কাজ হচ্ছে না তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অসহায় পরিবারের সদস্যরা বলেন,আমাদের নাম লিখলে মামলা হামলা করে আমাদের হয়রানির মধ্যে পড়তে হবে। সাধারণত মানুষ আরো জানান গ্রামপুলিশ ও সরদার জাকির হোসেন এর লোকেরা আরো বলেছেন পবিত্র কোরআন শরীফ ছুঁয়ে শপথ করে সরদার জাকির হোসেন এর পক্ষে কাজ করতে হবে তাহলে সকলে চাউল পাবে তা না হলে কেউ কার্ড বা চাউল পাবে না।
জনস্বার্থে অভিযোগকারী তালা সদর ইউনিয়নের জনগণের চেয়ারম্যান ও তালা সদরের সাবেক চেয়ারম্যান সাংবাদিক এসএম নজরুল ইসলাম জানান, তালা সদর ইউনিয়নের বিতর্কিত নির্বাচনের চেয়ারম্যান সরদার জাকির হোসেন তার পক্ষে কাজ না করলে তাদের কোন সরকারী সহায়তা ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে পাবে না বলে সকলের কাজ থেকে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিয়ে কেড়ে নিয়েছেন। আর এখানে সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ও সাংবিধানিক অধিকার কে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন।
তিনি আরো বলেন, প্রকৃত হতদরিদ্ররা সহয়তা পাওয়ার হকদার এবং তারা পাবে সরকারী সকল সুযোগ-সুবিধা। এছাড়া তিনি সকল অসহায় মানুষের অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি। জনগণের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া কার্ড গুলো ফেরৎ দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহন ও তার আগ পর্যন্ত চাউল প্রদানের সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকায় জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আহŸান জানান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান সরদার জাকির হোসেন এর সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তা সম্ভব হয়নি। জানা গেছে তার দ্বারা সংঘটিত সা¤প্রতিক নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার কারণে আইনের চোখ ফাকী দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
এলাকায় সাধারণ মানুষ তার কার্ড ফেরৎ পাওয়ার আহŸান করে তাদের কার্ড ফেরৎ পাওয়ার আগ পর্যন্ত এই চাউল প্রদান বন্ধ করে রাখার জন্য ইউএনও,তালা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অধিদপ্তর এবং প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আহŸান জানিয়েছেন। এবং তদন্ত শেষে অভিযুক্তকে আইনের আওয়তায় এনে শাস্তির ব্যবস্থার জন্য করার আবেদন জানানো হয়।