ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড করতে একটি আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সংশোধিত ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০’ এর খসড়া মন্ত্রিসভা বৈঠকে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হচ্ছে বলে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার পর মন্ত্রণালয় আইন সংশোধনের এই উদ্যোগ নিয়েছে বলেও জানান আইনমন্ত্রী। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ড। দেশে সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি ধর্ষণের ঘটনার পর ধর্ষণকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি উঠায় সরকার শাস্তি বাড়ানোর পদক্ষেপ নিয়েছে।
ম‚লত আইনের ৯(১) ধারায় পরিবর্তন আনা হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “এই ধারায় ধর্ষণের শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ড থেকে বাড়িয়ে মৃত্যুদন্ড করে প্রস্তাব দেওয়া হবে। ” আইনের আরও কয়েকটি স্থানেও ছোট ছোট পরিবর্তন আনা হচ্ছে বলে জানান আইনমন্ত্রী।
ধর্ষকদের শাস্তি ৫০ বছরের সশ্রম কারাদন্ডের দাবি জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্ট্রি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, আপনারা ধর্ষকের ফাঁসির আন্দোলন না করে ৫০ বছর সশ্রম কারাদন্ড দাবি জানান। এটা আবার সম্রাটের মতো কারাদন্ড না। আজকে পিজি হাসপাতালে ১১ মাস তো সে ভিআইপি কেবিনে কাটাচ্ছে। এ ধরণের ছলনার কারাদন্ডের প্রয়োজন নেই।
আইনমন্ত্রীর ধর্ষণের শাস্তি পরিবর্তণ করার পর থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ করছে ব্যাক্তি ও সংগঠণ। ধর্ষণের সর্বুচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডেরও অনেকে সমালোচনা করেছেন। তাদের ভাষ্যমতে “ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদন্ড হলে ধর্ষিতা হত্যাকান্ড বেড়ে যাওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যাবে! কারণ, ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদন্ড হলে প্রাণনাশের শাস্তির সমান্তরাল হয়ে য়াবে। যেহেতু স্বাস্থ্য পরিক্ষায় ধর্ষণ প্রমানিত হলে মৃত্যুদন্ড নিশ্চিত সেহেতু ধর্ষিতাকে নিয়ে অন্যকিছু ভাবতে পারে।
সর্বপরি শাস্তির কঠরতা অপরাধ দমনে যথেষ্ট নয়। অপরাধ দমনে আইনের যথাযত প্রয়োগ ও শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরী। আইনের পরিধি ছোট হলেও লঘু শাস্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিচার কাজের দীর্ঘসুত্রতা কমিয়ে তৎক্ষণাত বিচারের আওতায় আনতে হবে। প্রয়োজনে স্থানীয় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে ভ্রাম্যমান আদালতে ধর্ষকের বিচার কাজ সম্পন্ন করাই উত্তম।
প্রসঙ্গ: ধর্ষকের শাস্তি মৃত্যুদন্ড
পূর্ববর্তী পোস্ট