
হাফিজুর রহমান, কালিগঞ্জ থেকে: উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এবং উপজেলা পরিষদের এক শীর্ষ জনপ্রতিনিধির যোগসাজসে মোটা অংকের টাকার বাণিজ্যে দারুল উলুম চৌমুহনী ফাজিল মাদ্রাসায় অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন সম্পন্ন করেছে। নেপথ্যে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের হেলালী প্রায় অর্ধকোটি টাকার বেতন ছাড় করানোর জন্য এ নির্বাচন সম্পন্ন করেছে। কোন প্রকার তপশীল বিজ্ঞপ্তি ছাড়া নিয়ম বহিভূত ভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করলেও দারুল উলুম চৌমুহনী ফাজিল মাদ্রাসায় ছাত্র ছাত্রী অভিভাবক শিক্ষক কেউ কিছুই জানেননা। অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের হেলালী নিজের স্বার্থের জন্য রেজুলেশন খাতায় কয়েক জনের নিকট থেকে ভুল বুঝিয়ে স্বাক্ষর করে নেওয়া ছাড়া আর কাউকে জানতে দেওয়া হয়নি। অত্র ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে প্রিজাইটিং অফিসার হিসাবে উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তার অফিসে বসে তার ঘনিষ্ঠ ভাজন তিন জন কে বিনা প্রতিদ্ব›দ্বীতায় নির্বাচিত দেখিয়ে নির্বাচন সম্পন্ন করেছে। ঘটনাটি সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার দারুল উলুম চৌমুহনী ফাজিল মাদ্রাসায়। অত্র মাদ্রাসার সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার রবিউল ইসলাম অথচ তিনি বললেন এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। আবার তিনি নির্বাচন দেখিয়ে পনের সদস্যের একটি ম্যানেজিং কমিটির কাগজে তার সুপারিশ নিয়ে অধ্যক্ষ অনুমোদনের জন্য ঢাকা ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার বরারব পাঠিয়েছেন।
গত ২৯/৯/২১ ইং তারিখে দারুল উলুম চৌমুহনী ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের হেলালী ম্যানেজিং কমিটি গঠনের জন্য নির্বাচন চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অত্র মাদ্রাসার সভাপতি বরাবর আবেদন করেন। উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গত ০৪/১০/২১ ইং তারিখে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম কে প্রিজাইডিং অফিসার হিসাবে নিয়োগ দেন। প্রিজাইডিং অফিসার হিসাবে দায়িত্ব হাতে পাওয়ার পর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের হেলালী কে নিয়ে মোটা অংকের টাকার দফারফায় কোন তপসীল ছাড়াই অফিসে বসে নিজেদের পছন্দের লোককে বিনা প্রতিদ্ব›দ্বীতায় নির্বাচিত করে নির্বাচন সম্পন্ন করেন। উক্ত গোপন নির্বাচনে গত ২৩/১০/২১ইং তারিখে ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম, অভিভাবক শেখ আবু মোতালেব, এবং সইলুদ্দীন গাজী কে বিনা প্রতিদ্ব›দ্বীতায় নির্বাচিত করানো হয়। উক্ত নির্বাচনের পরে মাদ্রাসার ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক আমজাদ হোসেনের ভাই কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল হাদীস এন্ড ইসলামিক ইস্টাডিস বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আশরাফুল আলম কে সভাপতি বানাতে ১৫ সদস্য কমিটি অনুমোদনের জন্য ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার বরাবর পাঠানো হয়েছে। এব্যাপারে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার সময় সরেজমিনে দারুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে গেলে অভিভাবক সদস্য সোহাগ, মিজানুর রহমান, দাতা সদস্য আবু তালেব, প্রাক্তন সভাপতি নুরুল হক সরদার সহ শত শত লোক সাংবাদিকদের জানান, মাদ্রাসাতো বন্ধ শুধু পরীক্ষার জন্য কয়েকদিন খোলা ছিল। নির্বাচন সম্পর্কে তারা কিছুই জানেননা বা মাদ্রাসায় কোন নির্বাচন হয়নি।
এব্যাপারে ঘটনার সত্যতা জানার জন্য আব্দুল কাদের হেলালীর নিকট জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আপনাদের এসমস্ত বিষয়ে জানার কি দরকার কে আপনাদের জানতে বলেছে। আমি নিয়ম মাফিক নির্বাচন করেছি। ছাত্র ছাত্রী অভিভাবক শিক্ষকরা জানে কি না এব্যাপারে কোন সদ উত্তর দিতে পারেনি।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ও প্রিজাইডিং অফিসার শফিকুল ইসলামের নিকট জিজ্ঞাসা করলে তিনি কাগজ পত্র আছে বললেও শুধু রেজাল্ট শীট ছাড়া কোন কিছুই দেখাতে পারেনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও দারুল উলুম চৌমুহনী ফাজিল মাদ্রাসার সভাপতি খন্দকার রবিউল ইসলামের নিকট জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে বলেছি। আদৌও নির্বাচন হয়েছে কি না এমন কোন উত্তর মেলেনি। তিনি বলেন আমি জানি মৎস্য অফিসার একজন ভালো লোক। তিনি এমন কাজ করতে পারে আমার ভাবতে অবাক লাগছে। বিষয়টি আমি দেখছি।