নিজস্ব প্রতিবেদক: সামনে নির্বাচন। এই নির্বাচন আমরা এবার উন্মুক্ত করে দিয়েছি। তার কারণ আমরা চাই জনগন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। শান্তিমতো ভোট দিক। আমরা কয়েক জায়গায় প্রার্থী দিয়েছি তারপর আমরা উন্মুক্ত করে দিয়েছি। সকলে জনগনের কাছে যাবে। জনগন যাকে ভোট দিবে সেই নির্বাচিত হবে। ছয় জেলায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণার অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান।
২৩ ডিসেম্বর শনিবার বিকেলে আওয়ামী লীগের তেজগাঁওস্থ কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাতক্ষীরার সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার পাবলিক লাইব্রেরি, ঝিনাইদহের উজির আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠ, নেত্রকোনার জেলা স্টেডিয়াম, রাঙ্গামাটি জেলার শেখ রাসেল স্টেডিয়াম এবং বরগুনা জেলার বামনা ও পাথরঘাটা উপজেলায় ভার্চুয়ালি সমাবেশে যোগ দেন। পরে এসব স্থানের উপস্থিত নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপিকে ‘সন্ত্রাসী দল’ এবং জামায়াতকে ‘যুদ্ধাপরাধীদের দল’ আখ্যায়িত করে বাংলাদেশের চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এদের থেকে দেশকে মুক্ত রাখতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “বিএনপি রাজনৈতিক দল নয়, সন্ত্রাসী দল, আর জামায়াত যুদ্ধাপরাধীদের দল। বাংলাদেশের চলমান উন্নয়নকে সচল রাখার জন্যই বিএনপি-জামায়াত উভয়ের হাত থেকে দেশকে মুক্ত রাখতে হবে।” এ সময় উন্নয়নের ধারা আব্যাহত রাখার জন্য তাঁর দলের নির্বাচনী প্রতীক নৌকায় ভোট প্রত্যাশা করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি কোন রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। জামাত যুদ্ধাপরাধীদের দল। এই সন্ত্রাসী এবং যুদ্ধাপরাধীদের থেকে দেশকে মুক্ত রাখতে হবে। তাহলেই দেশে উন্নয়নের ধারাটা অব্যাহত থাকবে। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপক্ষে এবং অংশগ্রহণম‚লক নির্বাচনের ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, “দেশে উন্নয়নের ধারাটা তখনই অব্যাহত থাকবে, যখন নির্বাচনটা সুষ্ঠু হবে। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তার মন মত প্রার্থী বেছে নেবে এবং গণতান্ত্রিক ধারাটা অব্যাহত থাকবে। তাই আমার আবেদন থাকবে সকলের কাছে এই গণতান্ত্রিক ধারাটা অব্যাহত রাখতে হবে। উন্নয়নের ধারাটা অব্যাহত রাখতে হবে এবং ধরে রাখতে হবে।” তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে আমরা যেন আরও উন্নত সমৃদ্ধ করতে পারি, সেই প্রচেষ্টাটা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার ঘোষণা আমরা দিয়েছি। কাজেই আমাদের বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষকে আমরা আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় সুশিক্ষিত করে তুলব। জনগোষ্ঠী হবে স্মার্ট, আমাদের সরকার হবে স্মার্ট, অর্থনীতি হবে স্মার্ট এবং আমাদের সমাজ ব্যবস্থাও স্মার্ট হবে। আমরা বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলবো, মাথা উঁচু করে চলবো। এটাই আমাদের লক্ষ্য।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য নিয়ে আর কাউকে আমরা ছিনিমিনি খেলতে দেব না, এই কথাটা মনে রাখতে হবে। ওই সন্ত্রাসী বিএনপি এবং যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের হাতে এদেশ কোনদিনই নিরাপদ নয়। কারণ এরা এদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না। কাজেই এদের হাত থেকে জাতিকে রক্ষা করে দেশের দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখার আমি আহ্বান জানাচ্ছি।”
শেখ হাসিনা বলেন, ’৭৫-এর পর সাধারণ মানুষের নয়, ভাগ্যোন্নয়ন ঘটেছিল ঘাতকদের। দেশের মানুষই আমার পরিবার, তাদের জন্যই জীবন উৎসর্গ করেছি। দেশের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসার রাজনীতি জাতির পিতার মেয়ে করে না বলেই সেই নির্বাচনে হারতে হয়েছিল।’ তিনি আরও বলেন, ২০০৯-২৩ এই বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ, সব স‚চকেই দেশ এগিয়ে গেছে অভ‚তপ‚র্বভাবে। উন্নয়নের ধারাটা বজায় রাখতে হবে। বিএনপি অতীতের মতোই নির্বাচন ঠেকানোর নামে ভয়ংকরভাবে অগ্নিসন্ত্রাস করে চলেছে। মনুষ্যত্ববোধ থাকলে বিএনপি এসব করতে পারত না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের নেতা কে? যারা আমাকে মারতে চেয়েছিল? অপরাধী হওয়া সত্ত্বেও আমি তাদের বাসায় থাকার সুযোগ দিয়েছি। যারা তারেকের হুকুমে আগুনসন্ত্রাস করছে, তাদের পাপের ভাগীদার হতে হবে। তারেক জিয়ার কিচ্ছু হবে না। সে জুয়া খেলে ভালোই থাকবে। সে তো দেশেই আসে না। সাহস থাকলে দেশে আসুক। মানুষ আগুনসন্ত্রাসের প্রতিশোধ নেবেই।’