
আকবর হোসেন,তালা: সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খেশরায় পল্লি চিকিৎসক নজরুল ইসলাম কর্তৃক নিজ শিশু কন্যাকে নির্যাতনের অপরাধ ঢাকতে, একই এলাকার নওয়াব আলীকে ফাঁসাতে নিজ সন্তানের অপহরনের নাটক সাজিয়ে তালা থানায় মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছে।
খেশরা ইউনিয়নের শাহীন সানা (নওয়াব আলী) জানান, আমাদেরকে ফাসাতে একই এলাকার মোঃ নজরুল ইসলাম কাগুচি তার কন্যা শিশু রোকাইয়া খাতুন(১৬) অপহরনের অভিযোগ এনে তালা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। আমি আদৌও এর সাথে জড়িত নই।
প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে নজরুল ইসলাম এর কন্যা রোকাইয়া খাতুন এর সহিত ২ বৎসর যাবত আমার পুত্র খোরশেদ আলম সৈকত সানা(২০) এর প্রেমের সম্পর্ক। এর ফলে তার পিতা ও মাতা রোকাইয়া খাতুনকে মধ্যযুগীয় কায়দায় বেধকড় মারপিট করে। তাকে বিষাক্ত ইনজেকশান পুশ করে মেরে ফেলতে চেয়েছিলো। আঘাত করে তার ২ পা ভেঙ্গে দিয়েছে। ১ মাস যাবৎ ব্যান্ডেস ছিলো। এমন মারপিট সহ্য করতে না পেরে রোকাইয়া খাতুন আমার বাড়ীতে ৫ বার চলে আসে। আমি ৫বারই মেয়েকে বুঝিয়ে তাদের কাছে রেখে আসি। যতোবার মেয়েকে তাদের কাছে রেখে আসি, ততোবারই তারা মেয়েকে নির্যাতন করে। শেষ বার আমার বাড়ী হতে মেয়েকে নিয়ে মারপিট করে রাত্রে চেয়ারের সাথে বেধে রাখে। রোকাইয়া খাতুন নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে, জীবন বাচাতে, ঐদিন ভোর রাত্রে পালিয়ে, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ইউনিয়ন কমান্ডার ও পুলিশিং কমিটির সভাপতি শেখ আমিনুল ইসলামের বাড়ীতে যায়। সেই দিন সন্ধায় মেয়েকে ফিরাইয়া আনতে নজরুল ইসলাম আমিনুল সাহেবেব বাড়ীতে যায়। এ সময় এলাকার আ’লীগ নেতা শেখ কামরুল ইসলাম লাল্টুসহ গন্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে মেয়ের উপর নির্যাতন করবে না এবং ১৮ বৎসরের নীচে বিবাহ দিবে না মর্মে মোচলেকা দিয়ে বাড়ীতে নিয়ে যায়, কিন্ত পল্লী চিকিৎসক নজরুল ইসলাম তাদের কোন কথা কর্নপাত না করে, মেয়েকে কলারোয়া নিয়ে জোর করে বিবাহ দিতে চায়। মেয়ে বিষয়টি টের পেয়ে কলারোয়া হতে পালিয়ে আতœীয়ের বাড়ীতে অবস্থান করে এবং জোর করে বিবাহ দেয়ার বিষয়টি স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আমিনুল ইসলামকে জানায়। এ সময় মেয়েকে না পেয়ে নজরুল ইসলাম আমারসহ পরিবারের ৪ জনের নামে তালা থানায় মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে এবং বিভিন্ন মামলা দেওয়া সহ আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। তালা থানা হতে আমাকে বলা হয়, মেয়ে এনে দিতে না পারলে আমার নামে মামলা করা হবে। পরবর্তীতে বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম মেয়েকে ফোন করে বাড়ীতে নিয়ে আসে এবং ২১ জুন তালা থানায় মেয়েকে হাজির করে মেয়েকে তার চাচার কাছে হস্তান্তর করে। এখন সে আমাকে ফাঁসাতে বিভিন্ন মামলায় জড়াতে পারে। আমি প্রশাসনের নিকট আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করার জন্য নজরুল ইসলামের শাস্তি দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে, শিশু কন্যা মোছাঃ রোকাইয়া খাতুন(১৬) জানায়, আমার পিতা-মাতা আমার উপর খুবইয় অত্যাচার নির্যাতন করে। তারা আমার বিষাক্ত ইনজেকশান পুশ করে মেরে ফেলতে চেয়েছিলো। মেরে আমার সমস্ত শরীর ক্ষত বিক্ষত করেছে। আমার পা দুটো লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছে। আমি তাদের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে পালিয়ে গিয়ে আতœীয়ের বাড়ীতে উঠেছিলাম। আমি খোরশেদ আলম সৈকতকে ভালবাসি। কিন্ত আমার পিতা-মাতা আমার কোন কথা না শুনে কলারোয়া উপজেলায় নিয়ে বিবাহ দিতে চায়। রোকাইয়া আরও বালেন, বাড়ীতে গেলে আমাকে মারধর করবে, আমি আর অত্যাচার সহ্য করতে পারছি না। আমাকে যদি জেলেও যেতে হয় তবুও আমি বাড়ী ফিরে যেতে চাই না। আমি বর্তমানে চাচার বাড়ীতে আছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত পিতা পল্লী চিকিৎসক নজরুল ইসলাম বলেন, ভাই,আপনি এ বিষয়ে কিছু লেখেন না। আমি আপনার সাথে সাক্ষাতে কথা বলব। তিনি আরও বলেন মেয়ে আমার বাড়ীতে। একই সময়ে মেয়ে রোকাইয়া খাতুন মোবাইল ফোনে বলেন, আমি বাড়ীতে যাইনি, চাচার বাড়ীতে আছি।
এ বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মদন মোহন বলেন, মেয়েকে থানায় হাজির করে এলাকার স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সাক্ষাতে মেয়ের পিতা-মাতা ও চাচার কাছে হস্তান্তর করা হয়।