
তালা অফিস থেকে নজরুল ইসলাম: সাতক্ষীরার তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা কুমিরা এলাকায় ভিপি সম্পত্তি বিতর্কিত ইজারা প্রদানের ঘটনায় অভিযোগের প্রেক্ষিতে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এর নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি সরেজমিন তদন্ত কাজ সম্পন্ন করেছেন।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসকের এস.এ শাখার সার্ভেয়ার মো. নাসির হোসেন,তালা উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মো. মিরাজ হোসেনসহ তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
শত বৎসরের ভোগদলখীয় সম্পত্তি অন্যায় ভাবে প্রতিপক্ষকে ডিসিআর প্রদান করার কারণে এলাকাজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা ও জনসাধারণের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি স্থানীয়দের নিরপেক্ষ তদন্ত রিপোর্ট প্রদানের দাবীর মুখে জেলা প্রশাসনের আদেশে ওই তদন্ত কমিটি গঠিত হয়।
ভুক্তভোগী মুকুন্দ কুমার ঘোষ জানান, পাটকেলঘাটা কুমিরা মৌজার ভিপি ইজারা কেস নং ২৩/৮৭-এর আওতায় ৪ একর ৮৮ শতক জমি তিনি ১৯৮৭ সালে পাটকেলঘাটা ভূমি অফিস থেকে ইজারা নেন। জমিটি তাদের পূর্বপুরুষদের নামে সিএস ও এসএ রেকর্ডভুক্ত থাকায় তারা শতাধিক বছর ধরে পৈত্রিকভাবে ভোগদখলে রয়েছেন। বাংলা ১৪৩১ সন পর্যন্ত তিনি নিয়মিতভাবে মোট ১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৯ টাকা ইজারা বাবদ পরিশোধ করেন।
কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, ১৪৩২ সন থেকে উক্ত জমি বে-দখল দেখিয়ে অন্য কিছু ব্যক্তির নামে নতুন করে ইজারা প্রদান করা হয়। মুকুন্দ কুমার ঘোষ দাবি করেন, “আমরা নিয়মিত ইজারা পরিশোধ করেছি, জমিতে চাষাবাদ করছি, অথচ হঠাৎ করে অন্যের নামে ডিসিআর ইস্যু করা হয়েছেÑএটি সম্পূর্ণ অবৈধ।”
তিনি আরও জানান, উক্ত অবৈধ ইজারার বিরুদ্ধে তিনি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আদালতে ভিপি মিস আপিল নং ০৪/২০২৫ দায়ের করেছেন। বর্তমানে সংশ্লিষ্ট জমি (এসএ খতিয়ান নং ১৫৮৭, দাগ নং ১২৭৪, পরিমাণ ৪ একর ২২ শতক বিলান কৃষিজমি) তার দখলে রয়েছে। কতক অংশে আমন ধান, পানের বরজ, বিভিন্ন ফলজ বৃক্ষসহ পাহারা দেওয়ার ঘর রয়েছে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ভিপি মিস আপীল কেস নং ৪/২০২৫ দায়ের করলে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট(রাজস্ব) সাতক্ষীরা এসএ শাখার সার্ভেয়ার মোঃ শাকিব আলম কাওসার উপর তদন্ত প্রতি্েদন দাখিলের জন্য আদেশ প্রদান করেন। কিন্তু সার্ভেয়ার মোঃ শাকিব আলম কাওসার কতৃক দাখিলকৃত প্রতিবেদন মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত মনগড়া তথ্য দিয়ে বাদীপক্ষের দখলে থাকা জমি বে-দখল দেখাইয়া এক ভূয়া প্রতিবেদন দাখিল করেন। উক্ত তদন্ত রিপোর্টের বিরুদ্ধে মুকুন্দ কুমার ঘোষ নারাজি পিটিশান দাখিল করলে শুনানী অন্তে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ মইনুল ইসলাম নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সাইফুল ইসলাম সহ তিন সদস্য তদন্ত কমিটি গঠন করেন। উক্ত তদন্ত কমিটি গতকাল সোমবার দীর্ঘ সরেজমিন গোপন ও প্রকাশ্য তদন্ত করেন।
এলাকার বিভিন্ন পর্যায়ের শতাধিক মানুষ তদন্তকালে উপস্থিত ছিলেন। এবং তার সকলে প্রকাশ্য সাক্ষ্য প্রদান করে বলেন বংশানুক্রমে মুকুন্দ কুমার ঘোষ শতাধিক বৎসর ধরে অদ্যবধি পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে নালিশী জমিতে ভোগদখলে আছেন।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুল ইসলাম জানান, তিনি উভয় পক্ষ সহ গোপন ও প্রকাশ্যে তদন্ত করেছেন। সুষ্ঠ তদন্ত রিপোর্ট দাখিলের স্বার্থে তিনি মতামত প্রদান করতে রাজি হননি।