
নিজস্ব প্রতিবেদক: চল্লিশ বছরের দিনমজুর অনিমেষ। তালা উপজেলার তেরছি গ্রামে তার বসবাস। বাবা রবীন্দনাথ ঘোষ ছিলেন দিনমজুর। প্রতিবেশী ধনাঢ্য হযরত গাজী বসবাসের জন্য ৩৪ শতক জমি দেন অনিমেষের পিতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে। সেই জমিতে তাদের বসতবাড়ী। দিনমজুরের কাজ করে সংসার চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অনিমেষের। কিন্তু দুর্ভাগ্য হযরত গাজীর দেওয়া উক্ত জমি সরকারের খাষ খতিয়ান ভুক্ত হয়। কলাপোতা গ্রামের জামায়াত ক্যাডার খোরশেদের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে উক্ত জমির উপর। পাকিস্তান শাসনামলের ইসলামকাটি সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের (পোড়া দলিল) জাল দলিল সৃষ্টি করে ঐ জমি দাবী করে আসছে খোরশেদ। বিষয়টি নিয়ে সাতক্ষীরা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে উভয় পক্ষের মামলা চলমান আছে।
এমতাবস্থায় গত শনিবার (১ জুলাই) ভোরে লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে অনিমেষের বসতবাড়ীতে হামলা করে খোরশেদের সন্ত্রাসী বাহিনী।
তালা থানায় দায়েরকৃত এজাহার ও ভুক্তভোগী অনিমেষ সুত্রে প্রকাশ, তালা থানার তেরছি মৌজায় সাবেক ২৫৭৩, হাল ২২৪১ দাগের ৩৪ শতক সম্পত্তির উপর বসতবাড়ী নির্মাণ করে ১৫/১৬ বছর ভোগদখল করে আসছে অনিমেষের পরিবার। উক্ত জমি জবর দখলের উদ্দেশ্যে গত শনিবার (১ জুলাই) ভোর ৬ টায় কলাপোতা গ্রামের মৃত: জাহাবক্স গাজীর পুত্র জামায়াত ক্যাডার খোরশেদ গাজী, তার দুই পুত্র মামুন গাজী ও এনামুল গাজী, তার স্ত্রী রমিজা বেগম সহ অজ্ঞাত ৩০/৩৫ জন দুর্বৃত্ত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অনিমেষের বসত বাড়ীতে হামলা করে। এসময় অনিমেষকে ব্যাপক মারপিট করে তারা। অনিমেষ ও তার পরিবারকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদের বসত ঘর ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে তারা। এছাড়াও ঘরের উঠানে স্থাপিত একটি তুলশি মন্দিরও ভেঙে গুড়িয়ে দেয় দুর্বত্তরা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী অনিমেষ বাদী হয়ে সোমবার (৩ জুলাই) তালা থানায় ৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৩০/৩৫ জনকে আসামী করে এজাহার দাখিল করেছেন।
এ বিষয়ে সাতনদীর মুখোমুখি হয়ে ভুক্তভোগী অনিমেষ আক্ষেপ করে বলেন, “তালা থানায় এজাহার দায়ের করা হলেও উক্ত এজাহারটি মামলা হিসাবে রেকর্ড হয় নি। থানার ওসি সাহেব বলেছেন, তোমার মামলা রেকর্ড করলে প্রতিপক্ষ গ্রুপের মামলাও রেকর্ড করা হবে।”
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী অনিমেষ জেলা পুলিশ সুপার সহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করেছেন।