
চারজনের মধ্যে অবসরে যাচ্ছেন আরও একজন:
মিড লেভেল ডাক্তারের পদ শূন্য:
আহাদুর রহমান জনি: ডাক্তার সংকটে ভোগান্তিতে আছে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা হাড়ভাঙা রোগীরা। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে সার্জারি হচ্ছে না তাদের। ওটিতে ৮ থেকে ১০ঘন্টা সময় ব্যয় করলেও অর্থপেডিক্স রোগীর চাপ সামলাতে হিমশীম খাচ্ছেন একজন সার্জারী ডাক্তার।
প্রবল জনবল সংকটে ধুঁকে ধুকে চলছে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থপেডিক্স বিভাগ। মিড লেভেল ডাক্তার সংকটের জন্য এমন অবস্থা। এছাড়ও সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অর্থপেডিক্সে প্রতিদিন প্রায় ৬০ থেকে ৭০ জন চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বর্তমানে চার জন ডাক্তার কর্মরত আছেন। ২জন এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর, একজন কনসালটেন্ট ও একজন প্রফেসর প্রফেসর দিয়ে চলছে অর্থপেডিক্স বিভাগ। আবার তাদের মধ্যে একজন এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর দুই মাস পর অবসরে গেলে ভোগান্তি আরও বাড়বে বলে জানায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
পাইকগাছা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা সবুজ ফকিরের (২১) সাথে কথা হলে সে জানায়, ঈদুল ফিতরের পরদিন মটরসাইকেল এক্সিডেন্টে হাত ভেঙে যায় তার। তারপর কিছু দিন সদর হাসপাতালের অর্থপেডিক্স ডা হাফিজুল্লার ট্রমা সেন্টারে চিকিৎসা নেয়ার পর আর্থিক সংকটে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে বেশ কিছু দিন থাকার পর তার অপারেশনের দিন ধার্য হয়। আশ্চর্যজনক ভাবে অপারেশনের আগ ম‚হ‚র্তে তার সকল ফাইল গায়েব হয়ে যায়। ফলে অপারেশন হয়নি। বাধ্য হয়ে জুনের ৬ তারিখে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয় সবুজ। গত মাসের ২৭ তারিখ তার অপারেশনের দিন ধার্য্যহয়। কিন্তু অনিবার্য কারণে সেই দিন পরিবর্তিত হয়ে ২জুলাই আবারও অপারেশনের দিন ধার্য্যহয়। কিন্তু এ দিনও অপারেশন হয়নি। তাকে জানানো হয়েছে ঈদুল আযহার পর অপারেশন হবে।
কালিগঞ্জ থেকে চিকিৎসা নিতে আসা মুজিবর গাজী সাতনদীকে জানান, মটর সাইকেল দ‚র্ঘটনায় তার পা ভেঙে যায় ৬ বছর প‚র্বে। তখন সদর হাসপাতাল থেকে ডাঃ হাফিজুল্লাহর তত্বাবধানে তার পায়ে অপারেশন করা হয়। কিন্তু ভালভাবে জোড়া না লাগার কারণে কিছু দিন প‚র্বে তার হাড়ের জোড়া আবারও ছাড়িয়ে যায়। তিনি মার্চের ৫ তারিখ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হলে তাকে জানানো হয় আবারও অপারেশন করতে হবে। সেই থেকে এখনো তিনি ভর্তি আছেন । কিন্তু দুই বার অপারেশনের দিন ধার্য হলেও এখনো অপরেশন হয়নি।
শ্যামনগরের কাশিমারি গ্রামের সিরাজুল ইসলাম নামের আরও এক রোগী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। গ্রাইন্ডিং মেশিনে তার পায়ের শিরা কেটে যায়। ২ মাসে ২বার অপারেশনের দিন পাল্টানোর পর অবশেষে তৃতীয়বারে তার অপারেশন হয়।
এদিকে কয়েক ঘন্টা অবস্থান করার পরও বিভাগীয় প্রধান কামরুজ্জামানকে পাওয়া যায়নি। তবে সামেক অর্থপেডিক্সের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ প্রবীর কুমার দাসের অপারেশন থিয়েটারে কথায় হয়। তিনি জানান সকাল ৯টা থেকে সার্জারি করছেন তিনি। তিনি সাতনদীকে জানান অর্থপেডিক্সে যে মিড লেভেলের ডাক্তার প্রয়োজন কেউ নাই। ইনডোর, আউটডোর, রেজিষ্টার ও এসিস্ট্যন্ট রেজিষ্টার নাই। শুধু কনসালটেন্ট একজন, এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ২জন আর ফুল প্রফেসর একজন। আমাদের প্রায় সকল পদ শ‚ন্য। এসোসিয়েট প্রফেসরের পদ শ‚ন্য, মিডলেভেল ডাক্তারদের সকল পদই শ‚ন্য। এই অবস্থায় আমরা আমাদের সবটুকু দিয়ে যতটুকু সার্ভিস দেয়া যায় তাই দিচ্ছি। তবে বারবার অপারেশনের দিন বদল হওয়ার বিষয়ে তিনি জানান, আমাদের আরও একজন জন প্রফেসর অবসরে যাবেন। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় যারা অনেক পুরানো ভাঙা নিয়ে আসেন তাদের ক্ষেত্রে আমরা একটু ডিলে করি। কারণ সেটাকে কোন সমস্য নেই। আর এ জন্যই এত অল্প জনবল নিয়েই সদ্য আসা রোগীদের তাৎক্ষনিক চিকিৎসা সেবা আমরা দিতে পারি।