আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
প্রতিবাদ বিক্ষোভকারী এবং ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে দমনপীড়ন কড়া করেছে চীন। ফলে প্রতিবাদ বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের অনেককে এখন নিখোঁজ দেখা যাচ্ছে। এ খবর দিয়ে অনলাইন বিবিসি বলছে, প্রতিবাদ বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের অনেককে নিখোঁজ করে দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে তারা নীরবে কঠোর থেকে কঠোর করেছে দমনপীড়ন। সম্প্রতি সেখানে করোনাভাইরাস ইস্যুতে কঠোর বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেন হাজার হাজার মানুষ। একে হোয়াইট পেপার প্রতিবাদ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের নেতৃত্বে এবং ক্ষমতাসীন চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিবাদকে দেখা হয় বিরল হিসেবে। ওই প্রতিবাদের সময় কিছু মানুষকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারপর মাসের পর মাস পেরোচ্ছে, তারা এখনো রয়েছেন পুলিশি হেফাজতে। এসব কথা বলেছেন চীনের অধিকারকর্মীরা।
একটি গ্রুপের হিসাবে এমন গ্রেপ্তার আছেন কমপক্ষে ১০০ মানুষ। তাদের মুক্তি দাবি করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক গ্রুপ ও বিদেশি ইউনিভার্সিটিগুলো। আটক থাকা ব্যক্তিদের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে অধিকার বিষয়ক গ্রুপগুলো। এর মধ্যে ওইসব মানুষ আছেন যারা সাংহাই, গুয়াংজু এবং নানজিংসহ বেইজিংয়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেছিলেন।
এ বিষয়ে চীনা কর্তৃপক্ষ কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। কিন্তু আটক ব্যক্তিদের বন্ধুবান্ধব ও আইনজীবীদের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে বেইজিংয়ে গ্রেপ্তার হওয়া ১২ জনের নাম শনাক্ত করতে পেরেছে বিবিসি। এর মধ্যে কমপক্ষে ৫ জনকে জামিনে মুক্তি দেয়া হয়েছে। পুলিশি হেফাজতে আছেন যারা তার মধ্যে আছেন চার জন নারী। তারা হলেন- কাও ঝিসিন, লি সিকি, লি ইউয়ানজিং এবং ঝাই ডেঙ্গরুই। ফ্যাসাদ এবং উস্কানি দেয়ার অভিযোগে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এটা হলো- অস্পষ্ট অভিযোগ যার শাস্তি হিসেবে সর্বোচ্চ ৫ বছরের শাস্তি হতে পারে, এটা ব্যবহার করা হতে পারে ভিন্নমতকে গলাটিপে হত্যা করতে।
গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকে আছেন সুশিক্ষিত। তারা যুক্তরাষ্ট্র এবং বৃটেনের ইউনিভার্সিটিগুলোতে পড়াশোনা করছেন। আছেন লেখক, সাংবাদিক, সংগীতজ্ঞ, শিক্ষক, আর্থিক খাতের পেশাদার। বেইজিংয়ে যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের বন্ধুত্বের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত নয়। তারা মাঝে মাঝে বইয়ের ক্লাব, সিনেমায় একত্রিত হন। আলোচনা করেন। অনেক নারীর কাছে পুলিশ জানতে চেয়েছে তারা নারীবাদী কিনা অথবা নারীবাদী অধিকারের সঙ্গে যুক্ত কিনা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নারী অধিকার বিষয়ক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সেন্সরশিপ আরোপ করে তাদেরকে দমনপীড়ন করছে চীনা কর্তৃপক্ষ।