
ঘের দখলের অভিযোগ অস্বীকার কালু’র
নিজস্ব প্রতিবেদক: শতবিঘা ঘেরের মাছ লুটের পর আত্মসাৎ ও ১০ বিঘা ঘের অবৈধ ভাবে লিজ দিয়ে সেই মাছও লুট করার দুটি অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরা পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন কালুর বিরুদ্ধে। ঘটনা দুটির একটি প্রায় তিন বছর ও আরেকটি গতবছর হলেও কালুর লাঠিয়াল বাহিনীর ভয়ে মুখ খুলেনি কেউ এমনটাই জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগী আইনজীবি সহকারি নূরুল জানান, ‘প্রায় তিন বছর আগে খড়িবিলার মৃত ঈমান আলীর দুই ছেলে ও তার স্ত্রীর কাছ থেকে অগ্রিম ১৪ লাখ টাকা বছর হারির চুক্তিতে ১০০ বিঘা মাছ চাষের জন্য ঘের আমি লিজ নেই। লিজ নেওয়ার পর ঘেরের পাড় মেরামত করে ঘেরে ১০ লক্ষ টাকার মাছের পোনা ছাড়ি। মাছকে নিয়মিত খাবার খাইয়েছি। মাছ চাষ করার তিনমাস পার হলে হঠাৎ একদিন তৎকালীন ও বর্তমান কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন কালু তার লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে আমার লিজকৃত ওই ১০০ বিঘা ঘের দখল করে নেন। ঘের দখল করার পর আমার ঘেরের মাছও লুট করেন। আমি মাছ ফেরতের আকুতি জানালেও লাভ হয়নি। অনেকের কাছে বিষয়টির প্রতিকার চাইতে গিয়েছি। কিন্তু কোন ফল হয়নি। ’
মি. নূরুল আরো জানান, ‘আমার কষ্টার্জিত এত টাকা সব জলে গেল। একটি টাকাও ফেরত পাইনি।’
মি. নূরুল বলেন, ‘গত বছর জানুয়ারি মাসে বাগবাটি এলাকার এক সংখ্যালঘু (নিরাপত্তার স্বার্থে নাম প্রকাশ করা হয়নি) কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন কালু’র কাছ থেকে ১০ বিঘা ঘের ৭০ হাজার টাকা বাৎসরিক হারির চুক্তিতে মাছ চাষের জন্য নেন। অন্য ঘেরে দেওয়ার জন্য এই ১০ বিঘার ঘেরে চালাই মজুদ করে সে। কয়েক মাস পার হলে জুন মাসের দিকে চালাই ধরার আগে টান খাওয়ান তিনি। ঘেরে মজুদ অনেক মাছের খবর পেয়ে ওই দিন কালুর লোকজন তাকে ঘের ছেড়ে চলে যেতে বলে। এমতাবস্তায় সে সংখ্যালঘু ব্যক্তি জাহাঙ্গীর হোসেন কালুর কাছে গেলে কালু বলে যে সে (সংখ্যালঘু) এত মাছ ছাড়েনি। অন্য কোথাও থেকে চুরি করে এনেছে। পরে চুরির অপবাদ ও ভয় দেখিয়ে লিজ গ্রহীতা সে সংখ্যালঘু ব্যাক্তিকে তাড়িয়ে দেন কালু। পরে ওই ঘেরের সব চালাই আত্মসাত করে বিক্রি করে দেয় কালু।’
এতদিন এসব ঘটনা প্রকাশ না করার কারণ জানতে চাইলে নূরুল বলেন, ‘কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন কালু এ ওয়ার্ডের সর্বেসর্বা। তার সাথে পাঙ্গা নিতে আমরা পারিনা। এছাড়াও জানমালের ভয়তো সবারই আছে। যে ক্ষতি হয়েছে তা ফেরত না পেলেও সুস্থ্য শরিরে বেঁচে আছি। তখন মুখ খুলতে চাইলে হয়তো আজ আপনাদের এ ঘটনা বলতে পারতাম না। এ অঞ্চলের ঘের দখলের শীর্ষে কাউন্সিলর কালু। আমার মত হয়রানির শিকারের উদাহরণ এ ৭নং ওয়ার্ডে ভূরিভূরি আছে।’
এ বিষয়ে কাউন্সিলর শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন কালু দৈনিক সাতনদীকে জানান ‘নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তি আদৌ কোন ঘের মালিক নহে। প্রকৃত পক্ষে তিনি একজন ঘের কর্মচারি, মাছ চুরির অপরাধে তাকে ঘের থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তার প্রমান আমাদের কাছে আছে, প্রয়োজনে প্রদান করা হবে।
নুরুল ইসলাম নামের কোন ব্যাক্তির ঘের সম্পর্কে আমি অবগত নই। তিন বছর আগে ডিসি সাহেব রইচপুর বিল আবাদানি একটি সরকারি ঘেরের মাছ, ইউএনও স্যারের মাধ্যমে অকশণ করেন। এটাই প্রকৃত ঘটনা। আমার নির্বাচনী প্রতিপক্ষরা আমাকে আমার নির্বাচনী এলকায় হেয়প্রতিপন্ন করতে সাংবাদিককে ভুল তথ্য দিয়ে সংবাদটি পরিবেশন করিয়েছে।’