
আকবর হোসেন,তালা থেকে: সাতক্ষীরার তালা ইঞ্জিনিয়ার অফিসের হিসাব সহকারী মুস্তাফিজের বিরুদ্ধে সীমাহীন দূণীতিসহ ঘুষ বানিজ্যের সংবাদ প্রকাশের পর নিজেকে বাঁচাতে সাংবাদিককে ম্যানেজ করতে বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন তিনি। তার দূণীতির কবল হতে বাদ যাচ্ছেনা সাংবাদিকরাও।
সহকারী হিসাব রক্ষক পদে চাকুরী করে রাতারাতি কোটিপতি বনে যাওয়া মুস্তাফিজ, ধরা ছোয়ার বাহিরে থেকে, একের পর এক দূণীতি করে চলেছেন। ঠিকাদারদেকে জিম্মি করে কোটি টাকা বানিয়েছেন। সেই সাথে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়ার নাম করে সাংবাদিকদের নিকট থেকেও উৎকোচ গ্রহন করতে চান তিনি। সাংবাদিকদের সাথে আতাত করে টাকার বিনিময়ে এক জনের বিজ্ঞাপনের চেক অন্য জনকে দিয়েছেন তিনি।
তালা প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সেলিম হায়দার জানান, আমি ২০১৮ সালে ইংরেজী পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছিলাম। আমার বিজ্ঞাপনের চেক হিসাব সহকারী মুস্তাফিজ অন্য জনকে দিয়েছেন। চেক পাওয়া যাচ্ছে না বলে মুস্তাফিজ আমাকে জানান। পরে জানতে পারি জেলা প্রতিনিধির সাথে আতাত করে, তার কাছে চেক দিয়েছেন। বিষয়টি জানার পরে ভূল স্বীকার করেন তিনি।
নাম না প্রকাশের শর্তে এক সাংবাদিক জানান, পত্রিকা অফিসে বিজ্ঞাপনের জন্য চাপ দিলে, আমি হিসাব সহকারী মুস্তাফিজকে জানাই, তিনি আমার কাছে ২ হাজার টাকা দাবী করেন।
এমনিতেই ঠিকাদারের বিলের ফাইল প্রতি, ঘুষ বাবদ হিসাব সহকারী মুস্তাফিজ ১হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকেন। এর পরে জামানত হতেও লাখ টাকা প্রতি ১ হাজার টাকা তাকে দিতে হয়। টাকা না দিলে ফাইল ছুড়ে ফেলে দেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদার বলেন, ভাই আমি আপনার নিউজটি দেখে খুবই খুশি হয়েছি। তিনি বলেন, হিসাব সহকারী মুস্তাফিজ আমার সাথে খুবই খারাপ ব্যবহার করেছিলেন। তার নিকট জামানত নিতে গেলে আমার কাছে ১লক্ষ টাকা জামানতের জন্য ১হাজার টাকা দাবী করেন। আমি ৫শত টাকা দিতে গেলে, তিনি ফাইল ছুড়ে ফেলে দিয়ে বলেন, ফকিরের ভিক্ষা দিচ্ছেন। ১হাজার টাকা দেন। অগত্য তাকে টাকা দিয়ে ফাইল ছাড়াতে হয়েছে।
হিসাব সহকারী মুস্তাফিজ সাতক্ষীরা লাবসায় পীর বাড়ীর পাশে কোটি টাকার উপরে খরচ করে প্রায় ১০শতক জমি জুড়ে ৩তলা বাড়ী করেছেন। তার আলীশান বাড়ী দেখলে মনে হবে তিনি বড় মাপের একজন ব্যবসায়ী। যার কারনে কাহারো কোন তোয়াক্কা না করে, জমিদার ইষ্টালে চলে ঠিকাদারসহ নিয়মিত সকলের সাথে অসৈজন্যমুলক আচরন করেন তিনি। তার বাড়ী সাতক্ষীরায় হওয়ায় বদলী গেলেও সাতক্ষীরা জেলায় থাকবেন বলে এমন দাম্ভিকতা করে বলেন, প্রয়োজনে সাতক্ষীরা বদলী হবে।
ঘুষ ছাড়া কোন ফাইল ধরেন না তিনি। একজন হিসাব সহকারী হয়ে দূণীতি করে কোটি টাকা কামিয়ে জমিসহ কোটি টাকার বাড়ী বানিয়েছেন তিনি। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ ঠিকাদাররা।
হিসাব সহকারি মুস্তাফিজ যে উপজেলায় কর্মরত থাকেন সেখানেই ঠিকাদারদের জিম্মি করে তার রমরমা ঘুষ বাণিজ্যের অভয়ারণ্য গড়ে তোলেন । তার চাহিদা মতো টাকা না দিলে চরম ভোগান্তিতে ফেলেন ঠিকাদারদের। সুশিল সমাজের ব্যক্তিবর্গসহ ঠিকাদাররা তার দূর্ণীতি ও ঘুষ বানিজ্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তপূর্বক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনসহ উদ্ধতন কর্তৃপক্ষ ও গোয়েন্দা বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিযুক্ত হিসাব সহকারি মুস্তাফিজুর রহমান এ প্রতিবেদককে মুঠো ফোনে বলেন, আমি আপনার কি ক্ষতি করেছি। আমি প্রয়োজনে সাতক্ষীরা বদলী যাব, আমার বিরুদ্ধে লেখা বন্ধ করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী রথিন্দ্র নাথ হালদার এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি বিষয়টি নিয়ে উর্দ্ধতন কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করেছি। দোষী প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।