
হাফিজুর রহমান:- উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে মিথ্যা তথ্য ও নাম ভাঙ্গিয়ে শিব মন্দিরের উন্নয়ন কাজের দোহাই দিয়ে সরকারী জায়গার শত বছরের ২লক্ষ টাকা মুল্যের ২টি শিশু গাছ বিক্রির ঘটনায় অবশেষে ইউএনওর হস্তক্ষেপে গাছ আটক করলেও দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা না নেওয়ায় এলাকায় ক্ষোভ বিরাজ করছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের গোয়াল পোতা গ্রামের বড় শিব মন্দির মাঠ প্রাঙ্গণে। উক্ত ঘটনায় বড় শিব মন্দির কমিটির সাবেক সভাপতি হিমাংসু ঘোষ এবং কালিগঞ্জ পূজা উদ্্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মিলন কুমার ঘোষ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট মৌখিক ভাবে অভিযোগ করেন। সূত্র মতে কালিগঞ্জ উপজেলার গোয়ালপোতা মৌজার এসএ ১২৫, ১২৮,১৩০নং খতিয়ানের এস এ ৪৫, ৮৮, ৯৮, ১৫৬,১৬০, ২৯, ৩৯, ৫৩, ৪৩, ৪৪, ৪৬ দাগের ২.৮৯ একর জমির মালিক মন মোহন রায়, বীরেশ্বরচক্রবর্তী, মনি মোহন চক্রবর্তী, গত ১৯৬৪ সালে পাক ভারত যুদ্ধের সময় ভারতে চলে যেয়ে আর ফেরত আসেনি। যে কারণে উক্ত সম্পত্তি স্বাধীনতা যুদ্ধের পর বর্তমান সরকার ১৪৮৫১০ নং পাতায় ৯,১০,১১ নম্বর ক্রমিকে খ তপশীল তালিকা ভুক্ত বা অর্পিত সম্পত্তি তালিকা ভুক্ত করা হয়। উক্ত সম্পত্তিটি স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদয়ের লোক জন দেবোত্তর শিব ঠাকুরের সম্পত্তি হিসাবে দাবী করে দীর্ঘদিন ধরে শিব মন্দিরের কাজে ব্যবহার করে আসছিল। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মুসলমান এবং হিন্দু সম্প্রদ্বয়ের মধ্যে বিরোধ চলায় সরকার ভিপি মিস ০৭/২০০৫ ইজারা কেসের মাধ্যমে ইজারা প্রদান করে আসছে। বাকী ৯শতক জমিতে হিন্দু সম্প্রদয়ের লোকজন শিব মন্দির স্থাপন করে পূজা অর্চনা করে আসছে। উক্ত মন্দিরের সামনে প্রায় দেড়’শ বছর আগে লাগানো দুটি বড় বড় শিশু গাছ ছিল, উক্ত গাছের নীচে মন্দিরের পূজারী ও দর্শনার্থীরা ছায়ায় বিশ্রাম নিত। বর্তমান গোয়াল পোতা বড় শিব মন্দির কমিটির বর্তমান কমিটির সঙ্গে বিগত কমিটির বিরোধ চলে আসছে। বর্তমান মন্দির কমিটির সভাপতি চন্ডি চরণ মন্ডল, সাধারণ সম্পাদব সুভাষ ঘোষ, এবং সাংগঠনিক সম্পাদক সঞ্জয় সরকার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সহায়তায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ভুল বুুঝিয়ে সরকারী সম্পত্তি দেবোত্তর সম্পত্তির জায়গায় মন্দিরের উন্নয়ন কল্পে মরা গাছের কথা বলে মাত্র ৯০ হাজার টাকায় শতবর্ষী ২ লক্ষ টাকা মুল্যের দুটি শিশু গাছ বিক্রি করে দেয়। গাছ দুটির বড় বড় ডালপালা নিয়ে যাওয়ার পরে সাবেক মন্দির কমিটির সভাপতি হিমাংসু ঘোষ বিষয়টি পূজা উদ্্যাপন কমিটিকে জানায়। বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান এবং গোয়ালপোতা শিব মন্দির কমিটির সভাপতি চন্ডি চরণের সঙ্গে কালিগঞ্জ পূজা উদ্্যাপন পরিষদের সঙ্গে চরম বিরোধ থাকায় বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট এবং অতিরিক্ত জেলা পষিদের নিকট অভিযোগ করে। দেরিতে হলেও বিষয়টি জানতে পেরে সরকারী সম্পত্তির উপরে লাগানো গাছ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে স্থানীয় তহশিলদার মোশারফ হোসেন গাছ গুলি জব্দ করলেও মুল অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদয় দুই গ্রুপের মধ্যে চর উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনার সত্যতা জানার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার রবিউল ইসলামের নিকট জানতে চাইলে তিনি সাতনদীকে জানান, আমি নতুন এসেছি মন্দির সংস্কারের নামে দেবোত্তর সম্পত্তি দেখিয়ে আমাকে ভুল বুঝিয়ে মরা শিশু গাছ কাটার কথা বলা হয়েছিল। বিষয়টি সরকারী সম্পত্তি আমার জানা ছিল না। আমি স্থানীয় তহশিলদার কে নির্দেশ দিয়েছি গাছ জব্দ করার জন্য। এবিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী সাতনদীকে জানান, গোয়াল পোতা শিব মন্দিরের জায়গা দেবোত্তর সম্পত্তি সেখানে হিন্দু সম্প্রদয়ের লোকেরা দীর্ঘদিন ধরে পূজা অর্চনা করে আসছে। তাদের মন্দিরের উন্নয়নের জন্য গাছ দুটি বিক্রি করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট জিজ্ঞাসা করে মৌখিক ভাবে বলা হয়েছে। তবে তাদের নিজেদের মধ্যে বিবাদমান দ্বন্দ্বের কারণে মন্দিরের সংস্কার কাজ করা সম্ভব হয়নি।