
হাফিজুর রহমান: কালিগঞ্জ উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের বন্দিপুর গ্রামের প্রায় ৫০ বিঘা সরকারি খাস-সম্পত্তি বন্দোবস্ত দেয়ার নামে অসহায় ভূমিহীনদের নিকট থেকে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে তহশীলদার আশরাফ হোসেনের বিরুদ্ধে। প্রতিবছর বন্দোবস্ত দেওয়ার আগে তদন্তের নামে জন-প্রতি ভূমিহীন পরিবার প্রতি ৫থেকে ৩০ হাজার টাকা পযন্ত ঘুষ দিতে হয়। টাকা না দিলে তার মনগড়া প্রতিবেদন দিয়ে হয়রানির অভিযোগ করে বলে ভুক্তভোগীরা জানান। পাঁকা-দালান ঘর নির্মাণের ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। টাকা না দিলে তদন্তের নামে দিনের পর দিন হয়রানি করে প্রকৃত জমি থেকে কম জমির রিপোর্ট দিয়ে নানান জটিলতায় ফেলে দেয়। গত রবিবার দুপুরে সরেজমিনে বন্দিপুর ভূমিহীন পল্লীতে গেলে এমনো হাজার অভিযোগ সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন ভুক্তভোগী ভূমিহীন পল্লীর অসহায় নারী-পুরুষ।
সূত্র মতে রতনপুর ইউনিয়নের বন্দিপুর মৌজার ১/১ খতিয়ানের ৫০,৫১,৫৩,৫৯ সহ আরো অনেক দাগে প্রায় ৫০/৬০ বিঘা খাস-জমিতে ৪০/৫০ ঘর ভূমিহীন পরিবার পরিজন নিয়ে বছরের পর ১ সনা ইজারা নিয়ে বসবাস করে আসছে। উক্ত খাস সম্পত্তি প্রতি বছরে নবায়ন নিতে গেলে তদন্তের নামে রতনপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশীলদার আশরাফ হোসেনকে ৫ হাজার থেকে ৩০ টাকা পযন্ত ঘুষ দিতে হয়েছে। কাঁচা বাড়ীর জমি সহ বন্দোবস্তের জন্য ৭ থেকে ১০ হাজার টাকা এবং পাঁকা দালানের জন্য ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা ঘুষ না দিলে নির্মাণ কাজের অনুমতি মেলে না।
ভূমিহীন ইদ্রিস, বারি, ইউনুস মোড়ল, সাইফুল ইসলাম, শাহিনুর, ওমর আলি, জামির সহ একাধিক ভূমিহীন সদস্যরা জানান করোনার কারণে চলতি বছর এখনো পযন্ত বন্দোবস্ত পায়নি তবে বিগত সনের ইজারা নিতে তহশীলদার আশরাফকে হাজার হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। এর মধ্যে ইউনুস আলি মোড়ল সহ একাধিক ব্যাক্তি জানান তাদের পাঁকা বিল্ডিং করার কারণে তথ্য গোপন করার অজুহাতে ৩০ হাজার টাকা নায়েবকে দিতে হয়েছে। ভুক্তভোগী ওমর আলী জানান, আমি তহশীলদার আশরাফের দাবিকৃত ৩০ হাজার টাকা না দেয়ায় আমার ৯ শতক জমির মধ্যে হতে ৩ শতক জমির রিপোর্ট উপজেলা ভূমি অফিসে মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করেন। বিষয়টি নিয়ে আমি উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) নিকট অভিযোগ দিলে তিনি সরেজমিনে তদন্তে এসে ঘটনার মিথ্যা রিপোর্টের সত্যতা পেলেও কোন ব্যবস্থা না নেওযায় তহশীলদার আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এছাড়াও রতনপুর ভূমি অফিসের গেলে বিভিন্ন ভূমি মালিকদের নিকট হতে মিটিশন, খাজনা সহ রতনপুর বাজারের সরকারি জায়গা বরাদ্ধ দেওয়ার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মাসুম বিল্লাহ সুজন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, রতনপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশীলদার ঘুষ বাণিজ্য করে আজ সে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়ে গেছে। তার দৌরাত্বে না থামাতে পারলে ইউনিয়ন বাসী প্রতিনিয়ত ঘুষ নির্যাতনের স্বীকার হতে থাকবে।
ঘটনার সত্যতা জানার জন্য ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশীলদার আশরাফকে অফিসে না পেয়ে তার মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোন কেটে দেন।
রবিবার উপজেলা ভূমি অফিসে গেলে সহকারি কমিশনার (ভূমি) সিফাত উদ্দীনের অফিস বন্ধ থাকায় তার মুঠো ফোনে ঘটনার সত্যতা জানান জন্য কথা বললে তিনি বিশেষ কাজে বাহিরে থাকায় অভিযোগ দিয়ে তার ম্যাসেঞ্জারে দেয়ার কথা বলেন।
বিষয়টিতে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের তদন্ত পূর্বক আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসি।