
হাফিজুর রহমান, কালিগঞ্জ থেকে:
পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও তার ছেলের নেতৃত্বে রাতের আঁধারে ভেকু দিয়ে যমুনাচরে বসবাসকারী ভূমিহীন পরিবারদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (২০ মার্চ) রাত রাত ১১টার সময় সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার কালিগঞ্জ- শ্যামনগর মহাসড়কের যমুনা নদীর ধারে কাটাখালি নামক স্থানে।
উক্ত ঘটনায় ভূমিহীন জামাত আলী গাজী মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী ও তার পুত্র অনিক মেহেদী সহ সঙ্গে থাকা বাহিনীর নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। বাড়ি ভাঙচুর এবং দোকান গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর ভ‚মিহীন জামাত আলী সহ পরিবারের অন্য নারী পুরুষ শিশু রা খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
অভিযোগের স‚ত্র এবং মঙ্গলবার সকাল ১০টার সময় ঘটনাস্থলে গেলে ভুক্তভোগীরা সাংবাদিকদের পায়ে ধরে প্রতিকার পাওয়ার আশায় জেলা প্রশাসকের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন। কালিগঞ্জ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মনিরুল ইসলাম ভুক্তভোগী ভূমিহীন জামাত আলী গাজী, আব্দুল হাকিম, আনজুয়ারা হালিমা খাতুন, প্রতিবন্ধী শামসুর রহমান সহ একাধিক ব্যক্তি সাংবাদিকদের জানান, কালিগঞ্জ হতে শ্যামনগর পর্যন্ত আদি যমুনার দুই পাড়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের চরভরাটে জায়গায় শত শত ভূমিহীন পরিবার পরিজন নিয়ে দীর্ঘ ৫০ বছরের অধিক সময় বসবাস করে আসছে। যমুনা পাড় হতে ভূমিহীনদের পুনর্বাসন না করে উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন যাবত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদীর সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। উক্ত দ্বন্দ্বকে পুঁজি করে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সোমবার রাত আনুমানিক ১১টার সময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী এবং তার পুত্র ছাত্রলীগ নেতা অনিক মেহেদীর নেতৃত্বে ১৫/২০ জনের ক্যাডার বাহিনী নিয়ে ভেকু দিয়ে তাদের বাড়িঘর ও দোকান ভাঙচুর লুটপাট আগুনে পুড়িয়ে মারার হুমকি সহ প্রায় ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন করে বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
তারা আরো বলেন, ওই সময় রাস্তার পাশে বনবিভাগের লাগানো লক্ষ, লক্ষ টাকার গাছ কেটে রাতের আধারে লোপাট করেছে। এছাড়াও প্রধান সড়কের সঙ্গে একটি কালভার্ট বন্ধ ও ভরাট করে দেওয়ায় এলাকার মহৎপুর, পানিয়া, পিরোজপুর নরহরকাটি, মৌতলা সহ এই বিস্তীর্ণ এলাকার পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। প্রধান সড়কের উপরে ভেকু দিয়ে মাটি ফেলায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় প্রাণহাণীর আশঙ্কা করছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রহিমা সুলতানা বুশরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
ঘটনাস্থলে উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম এর নিকট জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, গাছ কাটার তালিকা করে নতুন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবেই।
এ ব্যাপারে ঘটনার সত্যতা জানার জন্য উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদীর মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।