নিজস্ব প্রতিবেদক: ৪০ মাঠকর্মীর বিরুদ্ধে শোকজের সুত্র ধরে কলারোয়ার ভারপ্রাপ্ত পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মেডিকেল অফিসার ডা. কানিজ ফাতেমার চাঞ্চল্যকর দুর্নীতির তথ্য ফাঁস হয়ে পড়েছে। পরিবার পরিকল্পনা অফিস সুত্রে জানা গেছে, জানুয়ারী’২৩ থেকে এপ্রিল’২৩ পর্যন্ত স্থায়ী ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতির নিম্ন/ শূন্য অগ্রগতির জন্য ৩০ জন পরিবার কল্যাণ সহকারী, ৯ জন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শীকা ও ১ জন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারের বিরুদ্ধে স্মারক নং উজেপপ/ কলা সাত২০২৩/২৫৯/১(৪০) তাং ২১/০৮/২০২৪ মারফত তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে জুলাই’২৩ প্রথম দফায় ১৮ জনের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। কারণ ব্যাখ্যার নোটিশ থেকে বাদ যাননি নতুন যোগদানকৃত কর্মীরা ও বর্তমানে ট্রেনিং এ অবস্থানরত কর্মীরাও। এমন নোটিশ দেখে সকলে হতাশ হন। তারা মনে করেন এটা সম্পূর্ণ হয়রানী মূলক। তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, তৎকালিন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম পদোন্নতি জণিত কারনে বদলি হলে ডা. কানিজ ফাতেমা ভারপ্রাপ্ত উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেই তিনি অফিসে একক আধিপত্ব বিস্তারের লক্ষ্যে উপজেলায় কর্মরত কয়েকজন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শকদেরকে নিয়ে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। সুত্র জানায়, এই কর্মকর্তা সময় মত অফিসে আসে না, সপ্তাহে ২/৩ দিন অফিস করেন, কোন ফিল্ড ভিজিট না করেও হাজার হাজার টাকা টি,এ বিল উত্তোলন করেন ও উপকরণ ক্রয়ে অনিয়ম। নিয়মিত ভ্রমণ বিল উত্তোলন করলেও ভ্রমণ সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট ফিল্ড রেজিষ্ট্রারে মেডিকেল অফিসারের কোন পরিদর্শন নোট বা স্বাক্ষর লক্ষ্য করা যায়নি। এই সকল অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে যেয়ে মিথ্যা অভিযোগ সাজিয়ে বদলী করা হয়েছে সহকারি উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা পিযুষ কুমার ঘোষকে। এই ঘটনায় তিনি বর্তমানে বিভাগীয় মামলায় জড়িয়ে শরিয়াতপুরের রাজৈর উপজেলায় কর্মরত। গত কিছুদিন আগেও কর্মকর্তার দূর্ণীতির প্রতিবাদ করায় মিথ্যা অভিযোগ সৃষ্টি করে বদলী করা হয়েছে উচ্চমান সহকারী হুমায়ন কবীরকে। এই প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের সদস্যদের ব্যবহার করে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের পরিবার কল্যাণ সহকারীদেরকে বিভিন্ন সময় অফিসে ডেকে কর্মকর্তার মতের বিরোধি কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়ারও গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। গত কিছুদিন পূর্বে হঠাৎ করে বিভিন্ন ইউনিয়নে কর্মরত পরিবার পরিকল্পনা সহকারীদেরকে বিভিন্ন উপকরণের চাহিদার কথা বলে অফিসে ডেকে এনে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। কিছুদিন পরে তাদেরকে সাক্ষী দিতে অফিসে তলব করলে তারা জানতে পারে অফিস সহকারী জেসমিন সুলতানার বিরুদ্ধে তারা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তার তদন্ত এসেছে। এই খবরে পরিবার কল্যাণ সহকারীরা ক্ষোভ দেখালে কতিপয় পরিদর্শক বলেন ঘটনা সত্য বলে সাক্ষী না দিলে আপনাদের (এফডব্লিউ দের) চাকরীর বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। একই ভাবে সহকারী পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও উচ্চমান সহকারীকে বদলী করা হয়। মিথ্যা ঘটনার স্বাক্ষী দিতে না চাওয়ার কারনে তাদের নোটিশ করা হয়েছে বলে তারা মনে করেন। সুত্র জানায়, নতুন যোগদানকৃতদেরকে বেতন নিতে অফিসে ঘুষ দিতে হয়েছে ৩ হাজার টাকা। কর্মীদের টি,এ বিল নিতে গত এপ্রিল, মে, জুন তিন মাসে ১৪৮৫ টাকার বিলে অফিসে দিতে হয়েছে ১ হাজার থেকে ১১০০ টাকা এফডব্লিউএরা এই বিল প্রস্তুত সর্ম্পকে জ্ঞাত ছিলনা এবং বিল প্রস্তুতকালীন কোন স্বাক্ষর নেই বলেও তারা জানান। এ সমস্ত ঘুষের টাকা সংশ্লিষ্ট এফপিআইরা আদায় করেন বলে জানা যায়। এ ব্যাপারে অভিযুক্তরা বলেন, ডা. কানিজ ফাতেমা মেডিকেল অফিসার হলেও সাতক্ষীরা থেকে অন্য ডাক্তার এনে বন্ধাত্বকরণ অপরেশন করতে হয়। এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কানিজ ফাতেমা অভিযোগ সত্য নয় দাবী করে অফিসে যেয়ে বিষয়গুলো দেখার অনুরোধ করেন। পরদিন সকাল ১০ টায় অফিসে না পেয়ে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে ডাক্তার কানিজ সাংবাদিকের সংগে কথা বলতে অস্বীকার করেন। সাতক্ষীরা জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক গাজী বশির আহম্মদ বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। একত্রে এত কর্মীর নোটিশ জারী দু:খজনক। এমন ঘটনা কি কারনে ঘটলো সেটার সত্যতা উৎঘাটনে আমরা চেষ্টা করবো।